শৌনক মন্ডল। কলকাতা সারাদিন।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে দীর্ঘ ৪০ দিন ধরে চলা সরকারি শাটডাউন (US Government Shutdown) অবসানের পথে। অবশেষে সিনেটে ডেমোক্র্যাট এবং রিপাবলিকান আইনপ্রণেতাদের মধ্যে একটি সমঝোতা চুক্তি (Senate Deal Strike) সম্পন্ন হয়েছে, যার ফলে কেন্দ্রীয় সরকারের তহবিল আবার চালু হতে চলেছে। এই খবর নিশ্চিত করেছে সিএনএন, ফক্স নিউজসহ একাধিক মার্কিন সংবাদমাধ্যম।
সরকারি বাজেট পাস না হওয়ায় টানা ৪০ দিন ধরে যুক্তরাষ্ট্রের প্রশাসনিক কার্যক্রম প্রায় অচল হয়ে পড়েছিল। সরকারি দপ্তরগুলোতে কাজ বন্ধ হওয়ায় বিপাকে পড়েছিলেন কোটি সরকারি কর্মচারী ও তাঁদের পরিবার। স্বাস্থ্যসেবা ভর্তুকি (Healthcare Subsidy), খাদ্য সহায়তা (Food Assistance) এবং প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সরকারি কর্মচারী বরখাস্তের সিদ্ধান্তকে কেন্দ্র করে দীর্ঘদিন ধরে টানাপোড়েন চলছিল। অবশেষে সমস্ত চাপের মধ্যেও একটি অস্থায়ী চুক্তি (Temporary Funding Bill) পাস করার রিপোর্ট সামনে এসেছে।
রোববার প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, অস্থায়ীভাবে জানুয়ারি মাস পর্যন্ত সরকারি তহবিল চালু থাকবে। এই সময়ে বাজেট সংক্রান্ত বিষয়গুলো নিয়ে আরও আলোচনা হওয়ার কথা রয়েছে। অর্থাৎ, আপাতত কিছুদিনের জন্য হলেও জনজীবন স্বাভাবিক হতে চলেছে।
ছুটির পরে ফ্লোরিডার মার-এ-লাগো থেকে হোয়াইট হাউসে ফিরে এসে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প সাংবাদিকদের উদ্দেশে বলেন— “দেখে মনে হচ্ছে, সরকারের অচলাবস্থা খুব শিগগিরই শেষ হতে যাচ্ছে।”
এই মন্তব্য থেকেই পরিষ্কার, শাটডাউন পরিস্থিতি শেষের দিকে।
শাটডাউনের প্রভাব: কারা সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত?
এই শাটডাউনের কারণে—
ফেডারেল কর্মচারীদের বেতন বন্ধ ছিল।
এয়ারপোর্ট সিকিউরিটি, খাদ্য নিরাপত্তা দপ্তরসহ অত্যাবশ্যকীয় পরিষেবায় কর্মী সংকট দেখা দেয়।
জাতীয় উদ্যান, গবেষণা কেন্দ্র ও সরকারি ওয়েব সার্ভিস বন্ধ হয়ে যায়।
নিম্ন আয়ের নাগরিকদের জন্য ফুড স্ট্যাম্প স্কিম বড় বিপদের মুখে পড়ে।
পরিস্থিতি এতটাই চরমে পৌঁছেছিল যে দেশজুড়ে নাগরিকদের মধ্যে উদ্বেগ, ক্ষোভ এবং অনিশ্চয়তা বাড়ছিল।
রাজনীতির ভেতরে-ভেতরে কী ঘটছে?
বিশ্লেষকদের মতে, ডেমোক্র্যাট এবং রিপাবলিকানদের মধ্যে ক্ষমতা ও নীতিগত অবস্থান নিয়েই মূল বিরোধ।
বিশেষ করে—
স্বাস্থ্যসেবা সুরক্ষা (Healthcare Coverage)
সামাজিক সুরক্ষা বাজেট
এবং শ্রমিক অধিকার
এ নিয়ে উভয় পক্ষেই রাজনৈতিক টানাপোড়েন চলছিল।
কিন্তু অবশেষে জনসাধারণের চাপ ও অসন্তোষ দুই শিবিরকেই আলোচনার টেবিলে ফিরিয়ে আনে।
যদিও এই চুক্তি স্থায়ী সমাধান নয়, তবে অন্তত জনজীবনে স্বস্তি ফিরছে। আগামী দিনে বাজেট সংক্রান্ত আলোচনায় আবার উত্তেজনা বাড়তে পারে—এটা বলাই যায়। তবে আপাতত বিশ্বের সবচেয়ে শক্তিশালী দেশের সরকার আবার চালু হতে চলেছে, এটিই বড় খবর।
বিশ্বজুড়ে দেখছে সবাই—এই সমঝোতা কতদিন স্থায়ী হয়।