সুমন তরফদার। কলকাতা সারাদিন।
‘পার্টি (বিজেপি) দু’বার আমার ইচ্ছায় টিকিট দিয়েছে (২০১৬ সালে খড়্গপুর সদর বিধানসভা এবং ২০১৯ সালে মেদিনীপুর লোকসভা), আর এক বার ইচ্ছার বিরুদ্ধে টিকিট দিয়েছে।’ বাংলায় বিধানসভা নির্বাচনে মাত্র কয়েক মাস যখন বাকি রয়েছে সেই সময় দাঁড়িয়ে দলীয় নেতৃত্বের বিরুদ্ধে খুললেন বঙ্গ বিজেপির প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ। মঙ্গলবার তিনি বলেন, ‘আমি কোনও দিন কারও কাছে ভোটে লড়ার জন্য টিকিট চাইনি। পার্টি বলেছে, ইলেকশন (ভোটে) লড়তে, আমি লড়েছি। আবার বললে লড়ব। আমি সাধারণ কর্মী। যত দিন রাজনীতি করার ইচ্ছা থাকবে করব। সারা জীবন তো কেউ রাজনীতি করে না।’
২০২৪ সালে লোকসভা নির্বাচনের হার এখনও ভুলতে পারেনি বিজেপি নেতা দিলীপ ঘোষ। এখনও তা নিয়ে তাঁর মনে যথেষ্ট আক্ষেপ রয়েছে। যা নিয়ে বিধানসভা নির্বাচনের আগেও সরব হলেন প্রাক্তন ও রাজ্যের সবথেকে সফল বিজেপি রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ। মঙ্গলবার নিজের এলাকা খড়গপুরে দলীয় কার্যালয়ে বসেই পুরনো দিনের কথা তুলে ক্ষোভ, আক্ষেপ উগরে দিলেন দিলীপ ঘোষ। যদিও দিলীপের এই মন্তব্য কিছুটা হলেও অস্বস্তিতে পড়েছে তাঁর দল বিজেপি। কারণ আবারও দিলীপ ঘোষ জানিয়ে দিয়েছেন, তিনি নিজের ইচ্ছেতে বর্ধমান-দুর্গাপুর কেন্দ্রের প্রার্থী হননি।
মেদিনীপুর আসনে ২০১৯ সালে প্রায় ৮৯ হাজার ভোটে জয়ী হয়েছিলেন দিলীপ ঘোষ। ২০২৪ সালে তিনিই বর্ধমান-দুর্গাপুরে হারেন প্রায় ১ লক্ষ ৩৭ হাজার ভোটে। কারণ বলতে গিয়ে বিজেপি নেতা চক্রান্তের অভিযোগ করেছিলেন। ফের মুখ খুললেন মঙ্গলবার। মঙ্গলবার খড়্গপুরে দলীয় কার্যালয়ে বসে তিনি বলেই দিলেন, দলের ইচ্ছায় তিনি বর্ধমান-দুর্গাপুরে তৃণমূলের কীর্তি আজ়াদের সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে গিয়েছিলেন। নিজে থেকে ওই কেন্দ্র থেকে ভোটে লড়তে চাননি। পাশাপাশি দিলীপ জানালেন, যদি দল আবার নির্দেশ দেয়, আবার তিনি ভোটে লড়বেন। আপাতত শুধুই কর্মী হিসাবে দলের কাজ করে যাবেন।
খড়্গপুর (সদর) বিধানসভা আসনে হিরণের সঙ্গে তাঁর ‘লড়াই’ আছে কি না, তা নিয়ে প্রশ্ন করায় দিলীপের জবাব, ‘হিরণ আমাদের সিটিং এমএলএ (বর্তমান বিধায়ক)। আর দল এ বার কাকে টিকিট দেবে, সেটা আমাদের পার্লামেন্টারি কমিটি ঠিক করে। ২৯৪টি আসনেই তা-ই হবে।’ তিনি এ-ও জানান, সংগঠনের কাজ করতে বেশি পছন্দ করেন। এবং মেদিনীপুরে বিজেপির সংগঠন মজবুত বলে দাবি তাঁর।

অন্য দিকে, খড়্গপুর বিজেপির নতুন কার্যালয় খোলা এবং দিলীপ প্রসঙ্গে মেদিনীপুরে তৃণমূলের সাংগঠনিক সভাপতি সুজয় হাজরার কটাক্ষ, ‘মেদিনীপুরে আসতে ভয়, তাই খড়্গপুরে অফিস করছেন। সেটা নিয়ে মানুষের কোনও আগ্রহ নেই। আর বঙ্গ বিজেপি তো এখন শুভেন্দু অধিকারীর পকেটে।’