সুহানা বিশ্বাস। কলকাতা সারাদিন।
আগামী বিধানসভার নির্বাচনে নিজের নতুন দলের প্রার্থী হিসেবে বালিগঞ্জ বিধানসভা কেন্দ্র থেকে প্রার্থী হিসেবে নিশা চট্টোপাধ্যায়ের নাম বাতিল করার 24 ঘন্টার মধ্যেই ফের নতুন প্রার্থীর নাম ঘোষণা করলেন তৃণমূলের সাসপেন্ডেড বিধায়ক হুমায়ুন কবীর। গত সোমবার নতুন দল ঘোষণা করেন ভরতপুরের বহিষ্কৃত বিধায়ক হুমায়ুন কবীর। ওইদিনই মঞ্চে দাঁড়িয়ে নিশা চট্টোপাধ্যায়কে বালিগঞ্জ কেন্দ্রের প্রার্থী হিসেবে বেছে নিয়েছিলেন জনতা উন্নয়ন পার্টির প্রধান। কিন্তু একাধিক বিতর্কের জেরে পরে তাঁর নাম প্রত্যাহার করে নেন। বুধবার হুমায়ুন ঘোষণা করেন আগামী বছর ২০২৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনে বালিগঞ্জ কেন্দ্রে জনতা উন্নয়ন পার্টির প্রার্থী হচ্ছেন প্রাক্তন পুলিশ অফিসার আবুল হাসান।
সোমবার মুর্শিদাবাদে একের এক চমক দিয়ে নিজের নতুন দলের আত্মপ্রকাশ করেন হুমায়ুন কবীর। নতুন দলের নাম জনতা উন্নয়ন পার্টি। প্রকাশ্যে আনেন প্রার্থী তালিকাও। হুমায়ুনের ১০ জন প্রার্থীর মধ্যে ২ জন হিন্দু মহিলা। হুমায়ুন জানিয়েছিলেন, বালিগঞ্জে লড়বেন নিশা চট্টোপাধ্যায়। মুর্শিদাবাদ বিধানসভায় প্রার্থী মনীষা পান্ডে। কিন্তু ২৪ ঘণ্টা কাটার আগেই ভোলবদল হুমায়ুনের। বালিগঞ্জ বিধানসভা কেন্দ্রে প্রার্থী বদল করে ফেলে জনতা উন্নয়ন পার্টি। নিশা চট্টোপাধ্যায়ের নাম বাতিলের ঘোষণা করেন হুমায়ুন। এর সঙ্গে জানিয়েও দেন, আগামী ৭ দিনের মধ্যেই নতুন প্রার্থীর নাম ঘোষণা করবেন তিনি।
সেই ঘোষণার ২৪ ঘণ্টার কাটতে না কাটতেই বালিগঞ্জ থেকে নতুন প্রার্থী নাম ঘোষণা করলেন হুমায়ুন কবীর। নতুন প্রার্থীর নাম আবুল এ হাসান। তিনি প্রাক্তন পুলিস আধিকারিক। দেশের বাড়ি মুর্শিদাবাদের রেজিনগর। কলকাতায় বেকবাগানের ফ্ল্যাটে থাকেন। হুমায়ুন কবীরের ছোটবেলার বন্ধু। সকালে কলকাতার ৫ তারা হোটেলে ২ ঘণ্টা বৈঠক। বাল্য বন্ধুকে বালিগঞ্জ কেন্দ্রে নিশার বদলে প্রার্থী করার জন্য পীড়াপীড়ি হুমায়ুনের। দাবি স্বয়ং আবুল এ হাসানের। তিনি রাজনৈতিক লোক নন। রাজনীতির নেতাদের মঞ্চের পিছন দিকে তিনি বেশি স্বচ্ছন্দ্য।
তৃণমূল থেকে সাসপেন্ড হওয়ার আগেই ঘোষণা করেছিলেন, ২২ ডিসেম্বর তিনি নতুন দল গঠন করবেন এবং ২০২৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনে একশোর বেশি আসনে প্রার্থী দেবেন। সেই ঘোষণা মতো সোমবার ‘জনতা উন্নয়ন পার্টি’ নামে নতুন দল, পতাকার আত্মপ্রকাশ করেন হুমায়ুন কবীর। একই সঙ্গে ১০টি বিধানসভা আসনের প্রার্থী তালিকাও প্রকাশ করেন। কয়েকটি আসনে হিন্দু প্রার্থীর নামও ঘোষণা করা হয়। কলকাতার বালিগঞ্জ কেন্দ্র থেকে প্রার্থী হিসেবে নিশা চট্টোপাধ্যায়ের নাম ঘোষণা করা হয়েছিল। কিন্তু রাত পোহাতেই সিদ্ধান্ত বদল হয়। হুমায়ুন কবীরের দাবি, তিনি নিশা চট্টোপাধ্যায়কে চিনতেন না। তাঁর এক পরিচিত জানিয়েছিলেন, নিশা বালিগঞ্জ কেন্দ্র থেকে প্রার্থী হতে চায়, সেই কারণেই তাঁকে প্রার্থী করা হয়েছিল।

তবে ভরতপুরের বিধায়ক আরও জানান, নিশার নাম ঘোষণার হওয়ার পরই তৃণমূলের আইটি সেলের সোশ্যাল মিডিয়ায় দেওয়া কয়েকটি ভিডিও-সহ আরও কিছু ছবি দেখে তাঁর মনে হয়েছে, বিধানসভার মতো পবিত্র জায়গায় এই ধরনের মানুষ অযোগ্য। তাই রাতারাতি প্রার্থী হিসেবে তাঁকে প্রত্যাহার করেন হুমায়ুন কবীর।
অন্যদিকে, নিশা চট্টোপাধ্যায়ের দাবি, সোশ্যাল মিডিয়ার ভিডিও নয়, ধর্মীয় পরিচয়ের কারণেই প্রার্থী তালিকা থেকে নাম বাদ দেওয়া হয়েছে। মঙ্গলবার এই ইস্যুতে প্রকাশ্যে মুখ খোলেন নিশা। তাঁর বক্তব্য, ‘হঠাৎ করে আমার ভিডিও নিয়ে কথা উঠছে। চারদিক থেকে নানারকম কথা শোনা যাচ্ছে। হুমায়ুন চাচাই আমাকে প্রার্থী হতে বলেছিলেন। সব ঠিক ছিল। আচমকা এসব কী হচ্ছে বুঝতে পারছি না।’