সুমন তরফদার। কলকাতা সারাদিন।
স্বাস্থ্যভবনের সামনে কর্মবিরতিতে সামিল জুনিয়র চিকিৎসকরা। এরই মধ্যে একাধিক সরকারি হাসপাতালে বিনা চিকিৎসায় রোগী মৃত্যুরও অভিযোগ উঠছে। এবার সরকারি হাসপাতালে বিনা চিকিৎসায় মৃত ২৯ রোগীর পরিবারকে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার কথা ঘোষণা করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মৃতদের পরিবার পিছু ২ লক্ষ টাকা করে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার কথা জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
শুক্রবার মমতা বলেছেন, ”জুনিয়র ডাক্তারদের কর্মবিরতির ফলে স্বাস্থ্য পরিষেবা ব্যাহত হয়েছে। তার ফলে ২৯ জনের মৃত্যু হয়েছে। এটা দুর্ভাগ্যজনক। মৃতদের পরিবারের পাশে দাঁড়াতে রাজ্য সরকার দু’লক্ষ টাকা আর্থিক সহায়তা ঘোষণা করছে। ২৯ জন মৃতের পরিবারকে ওই টাকা দেওয়া হবে।”
স্বাস্থ্য ভবনের সামনে চার দিনেরও বেশি সময় ধরে অবস্থান বিক্ষোভে রয়েছেন জুনিয়র চিকিৎসকরা। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে নবান্নের সভাঘরে তাঁদের বৈঠকও অধরা। নেপথ্যে লাইভ স্ট্রিমিং। ফলে বৃহস্পতিবার বিকালে সমাধানসূত্র বেরনোর যে ক্ষীণ আশার আলো দেখা যায়, তা একেবারেই নিঃশেষ হয়ে যায়। নবান্ন থেকে ফিরে আবারও স্বাস্থ্যভবনের সামনে অবস্থান বিক্ষোভে জুনিয়র ডাক্তাররা। তাঁকে কাজে ফেরানোর জন্য স্বাস্থ্য দফতরের তরফ থেকেও পাল্টা কৌশল তৈরি করে। কিন্তু তা বিশেষ কাজে আসেনি। বরং পাল্টা সিনিয়র ডাক্তাররাও এসে সাংবাদিক বৈঠক করে স্পষ্ট করে দেন, জুনিয়র ডাক্তারদের ওপর শাস্তিমূলক কোনও পদক্ষেপ হলে ,তাঁরাও পাল্টা কর্মবিরতিতে সামিল হওয়ার হুঁশিয়ারি দেন।
এই পরিস্থিতি রাজ্যের স্বাস্থ্য পরিষেবা ব্যাপক সঙ্কট তৈরি করার আশঙ্কা দেখা গিয়েছে। ইতিমধ্যেই একাধিক সরকারি মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে বিনা চিকিৎসায় রোগী মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে। সরকারি হাসপাতালগুলোতে জরুরি পরিষেবা অব্য়াহত। সেক্ষেত্রে গত কয়েকদিনের একাধিক মৃত্যুতে চিকিৎসায় গাফিলতির অভিযোগ তুলে তৃণমূলের তরফে সামাজিক মাধ্যমে পোস্টও করা হচ্ছে।
আন্দোলনকারী জুনিয়র চিকিৎসকদের দাবি, রাজ্যে মোট সরকারি হাসপাতালের সংখ্যা ২৪৫টি। যার মধ্যে মেডিক্যাল কলেজ ২৬টি। মোট জুনিয়র চিকিৎসকদের সংখ্যা ৭হাজার ৫০০ বেশি নয়। পশ্চিমবঙ্গে রেজিস্ট্রার চিকিৎসকের সংখ্যা ৯৩ হাজার। মাত্র কয়েকটি মেডিক্যাল কলেজে যেখানে সিনিয়ররা পরিষেবা দিচ্ছেন, শুধু জুনিয়র চিকিৎসকরা কর্মবিরতি করছেন বলে স্বাস্থ্য পরিষেবা কীভাবে বিঘ্নিত হচ্ছে?