ব্রেকিং
  • Home /
  • পশ্চিমবঙ্গ /
  • Mamata Birbhum : “১১ লক্ষ পাকা বাড়ি তৈরির টাকা ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহেই পৌঁছে দেওয়া হবে” বীরভূমের প্রশাসনিক বৈঠকে ঘোষণা মমতার

Mamata Birbhum : “১১ লক্ষ পাকা বাড়ি তৈরির টাকা ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহেই পৌঁছে দেওয়া হবে” বীরভূমের প্রশাসনিক বৈঠকে ঘোষণা মমতার

সুমন তরফদার। কলকাতা সারাদিন। “ডিভিসি থেকে দুই কর্তা রেজিগনেশন দিয়ে দিয়েছেন। সবই তো নিয়ে গিয়েছে কলকাতা থেকে। বাকি কী রয়েছে। কলকাতায় একটা বিল্ডিং পড়ে থাকবে, আর কলকাতার কথা শুনবে না, আর বাংলায় জল ছাড়বে, লোক মারবে, মানুষ আগে নাকি, বিল্ডিংয়ের....

Mamata Birbhum : “১১ লক্ষ পাকা বাড়ি তৈরির টাকা ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহেই পৌঁছে দেওয়া হবে” বীরভূমের প্রশাসনিক বৈঠকে ঘোষণা মমতার

  • Home /
  • পশ্চিমবঙ্গ /
  • Mamata Birbhum : “১১ লক্ষ পাকা বাড়ি তৈরির টাকা ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহেই পৌঁছে দেওয়া হবে” বীরভূমের প্রশাসনিক বৈঠকে ঘোষণা মমতার

সুমন তরফদার। কলকাতা সারাদিন। “ডিভিসি থেকে দুই কর্তা রেজিগনেশন দিয়ে দিয়েছেন। সবই তো নিয়ে গিয়েছে কলকাতা....

Facebook
Twitter
LinkedIn
Email
WhatsApp
X
Threads
Telegram

আরও পড়ুন

সুমন তরফদার। কলকাতা সারাদিন।

“ডিভিসি থেকে দুই কর্তা রেজিগনেশন দিয়ে দিয়েছেন। সবই তো নিয়ে গিয়েছে কলকাতা থেকে। বাকি কী রয়েছে। কলকাতায় একটা বিল্ডিং পড়ে থাকবে, আর কলকাতার কথা শুনবে না, আর বাংলায় জল ছাড়বে, লোক মারবে, মানুষ আগে নাকি, বিল্ডিংয়ের কাঠামো আগে। জল ছাড়ে তো জলশক্তি মন্ত্রক। আমার চিফ ইঞ্জিনিয়ার ছিল, ওখান থেকে পদত্যাগ করেছে। আমার পাওয়ার সেক্রেটারি ছিল, শান্তনু বোস, পদত্যাগ করেছে। চাই না অর্গানাইজেশন। ডিভিসি তো তৈরি হয়েছিল মানুষ বাঁচানোর জন্য। ডিভিসি-র সমন্বয় কমিটির তো কোনও প্রয়োজনীয়তাই নেই।” এভাবেই বীরভূমের প্রশাসনিক বৈঠক থেকে আরও একবার কেন্দ্রীয় সরকার এবং ডিভিসি কর্তৃপক্ষকে তীব্র আক্রমণ করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
বীরভূমের প্রশাসনিক সভার পর সাংবাদিক বৈঠকেও ম্যানমেড বন্যার তত্ত্বই খাঁড়া করলেন তিনি। অভিযোগ তুললেন, ২০ বছর ধরে ডিভিসি ড্রেজিং করে না। সড়কপথে একের পর এক জেলা সরজমিনে খতিয়ে দেখছেন। তেমনই আজ মঙ্গলবার সকালে বীরভূমে যান প্রশাসনিক প্রধান।

সেখানে প্রশাসনের আধিকারিকদের সঙ্গে দীর্ঘ বৈঠক করেন। বৈঠক শেষে সাংবাদিকের মুখোমুখি হয়ে মমতা বলেন, প্রত্যেক বছর ডিভিসি জল ছাড় আর তাতে বাংলায় ‘ম্যান মেড’ বন্যা হয়।
উৎসবের আগে ভাসছে বাংলার একাংশ। বৃষ্টি কমলেও এখনও ভয়াবহ অবস্থা। আর এজন্য ফের একবার কেন্দ্রকে একহাত নিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। শুধু তাই নয়, মানুষ মারা সংস্থা বলেও আক্রমণ। একই সঙ্গে ফের বাংলায় রেল দুর্ঘটনা নিয়েও তোপ দাগলেন। আর তা বলতে গিয়ে ডিভিসিকে নজিরবিহীন আক্রমণ শানান। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কথায়, ‘আমার চাই না মানুষ মারা কোনও সংস্থা’। এদিন বাংলায় রেল দুর্ঘটনা নিয়েও কেন্দ্রকে একহাত নেন। বারবার রেল লাইনচ্যুত হচ্ছে। কোথায় মানুষের নিরাপত্তা। এই বিষয়ে কেন্দ্র কেন কোনও কথা বলছে না। একমাত্র ভোটের সময়, বিপদে পাশে থাকব না!
মমতা আরও বলেন, “আমি বাংলাকে তো আর পাহাড় বানাতে পারব না। আমি তো আর ভূগোল বানাতে পারব না। আমার হাতে তো আর ইতিহাস, ভূগোল নেই। উত্তরে ভুটান আর নেপালের জলে ভাসে। ডিভিসি এখন করপোরেট হয়ে গেছে। শুধু বিদ্যুৎ বিক্রি করছে। খদ্দের ঠিক হয়ে গেছে। এখন রেলমন্ত্রী কোথায়? বেলাইনের বিশ্ব রেকর্ড করে ফেলেছে!”

বন্যায় দুর্গতদের জন্য বাড়ি, মৃতদের পরিবার পিছু ২ লক্ষ টাকা করে দেওয়ার কথা ঘোষণা করলেন মুখ্যমন্ত্রী। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “পরিযায়ী শ্রমিক, মধ্যপ্রদেশ, রাজস্থান, উত্তরপ্রদেশ থেকে খুন করে দেহ বাংলায় পাঠিয়ে দেওয়া হচ্ছে। মালদহের এক পরিযায়ী শ্রমিকের শুনেছি, মাথা-দেহ আলাদা করে দেওয়া হয়েছিল। তাঁদের পরিবারকে সরকারের পক্ষ থেকে ২ লক্ষ টাকা করে দেওয়া হয়েছে। বন্যাতেও ২৮ জন মারা গিয়েছেন. তাঁদের পরিবারকে ২ লক্ষ টাকা করে দেওয়া হচ্ছে। বিনা চিকিৎসায় যে ২৯ জনের মৃত্যু হয়েছে, তাঁদের ২ লক্ষ টাকা করে দেওয়া হয়েছে। হয়তো অর্থ নগন্য। কিন্তু পাশে দাঁড়ানোর জন্য সরকারের চেষ্টা।”

এদিনের বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “প্রতি বছর ডিভিসি জল ছাড়ায় ম্যান মেড ফ্লাড হয়। ঝাড়খণ্ডে বৃষ্টি হলে আমাদের চিন্তা বাড়ে। বাংলার বর্ষায় বাংলায় বন্যা হয় না। ৯৯ সালে আমি তখন রেলমন্ত্রী ছিলাম, আমার বাড়িতে কোমর সমান জল। আমরা সরকারে আসার পর থেকে প্রতিনিয়ত মনিটারিং করি। এই প্রথম আমরা দেখলাম এরকম। ডিভিসির জল নাকি জলশক্তি মন্ত্রক থেকে ছাড়া হয়। কালকেও দেখেছেন দুর্গাপুর ব্যারেজে জলের স্রোত কীভাবে আসছে। খানাকুল ১-২, ঘাটাল, অনেকটাই জলের তলায়। আমি দেখে আসার পর মন্ত্রী-বিধায়করা যান। মুখ্যসচিব যান। প্রশাসনিক তৎপর। কিচেন চলছে। দলের পক্ষ থেকে ড্রাই ফুড দেওয়া হচ্ছে। আবারও বৃষ্টি হতে পারে। নতুন করে আরও কিছু এলাকা হয়তো ডিববে। ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে চাষের জমি, গ্রামের রাস্তা, কাঁচা বাড়ি। ডিভিসি জল ছাড়বে আর মানুষ মরবে! ত্রাণশিবিরে দুর্গতদের জন্য রাজ্য সরকারের তরফেও আলাদা করে শুকনো খাবারের প্যাকেট বিলি করা হচ্ছে। ভেঙে পড়া বাড়িগুলি মেরামত বা পুনর্গঠন করে দেবে রাজ্য সরকার। ১১ লক্ষ পাকা বাড়ি তৈরির অর্থ ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহেই পৌঁছে দেওয়া হবে।”

মমতা বলেন, “বিধায়করা গ্রামীণ রাস্তায় খরচ করবে তাদের টাকা। আর সাংসদরা এক কোটি স্কুলে, চার কোটি গ্রামীণ রাস্তায় দেবে। ডিভিসির জল ছেড়ে ‘ম্যানমেড ফ্লাড’ করা হয়। ঝাড়খন্ডের জলে প্রতিবছর বন্যা করা হয়। ১৯৯৯ সালে শেষবার এত জল ছাড়া হয়েছিল। আমরা সব মনিটরিং করছি। এখন জল কেন্দ্রীয় জলসম্পদ মন্ত্রক ছাড়ে। খানাকুল, ঘাটাল, আমতা, উদয়নারায়ণপুর এখনও জলের তলায় আছে। মুখ্যসচিব ,মন্ত্রীরা পরিদর্শন করেছেন। একাধিক জায়গায় কমিউনিটি কিচেন আছে। ৬৫ হাজার বাড়ি মাইনরিটি বিভাগ থেকে করে দিচ্ছি। এগারো লক্ষ বাড়ির জন্য সমীক্ষা করা হচ্ছে। এখনও ৫০ লক্ষ মাটির বাড়ি বাংলায় আছে।”

২০ সেপ্টেম্বর রাজ্যের বন্যা পরিস্থিতির কথা জানিয়ে এবং ডিভিসির উপর ক্ষোভ উগরে দিয়ে মোদীকে একটি চিঠি লিখেছিলেন মমতা। কেন্দ্রীয় জল শক্তি মন্ত্রকের তরফে সেই চিঠির জবাব দেওয়া হয়েছিল। জল শক্তি মন্ত্রী সিআর পাতিল দাবি করেছিলেন, রাজ্যের সম্মতি নিয়ে ডিভিসি জল ছাড়ে মাইথন এবং পাঞ্চেত জলাধার থেকে। সেই চিঠির জবাবে মোদীকে মমতা জানালেন, কেন্দ্রের বক্তব্য ঠিক নয়। অনেক সময়েই রাজ্যের সম্মতি ছাড়া জল ছাড়া হয়, দাবি তাঁর। এর প্রতিবাদে ডিভিসির কমিটি থেকে রাজ্যের প্রতিনিধি প্রত্যাহার করে নেওয়া হচ্ছে বলেও জানিয়েছেন মমতা।
মমতা এ দিন বৈঠকে বলেন, “শস্য যাদের নষ্ট হয়েছে তাদেরকেও দেখতে বলা হয়েছে। এখন চাষিরা বিপদে পড়লে আমরা দেখি। বন্যাত্রাণের হিসাব অনুযায়ী যাতে যথাযথ টাকা পান সেটা দেখতে বলা হয়েছে। পিডাব্লুডি রাস্তা দেখে নেবে। আগে কিছুই ছিল না। এই মাটিতেই আমার জন্ম। আমি জানি। খাবার তৈরি করা, রিলিফ দেওয়া, সেগুলোতে নজর দিতে বলা হয়েছে। নৌকা আর স্পিড বোট বেশি স্রোতে যাওয়া যাবে না। কতজন যাচ্ছে সেটা দেখতে হবে। জীবন আমাদের দামি। পুলিশ বা বিডিও অ্যালার্ট করলে সরে আসবেন। জীবন ভীষণ দামি। পরিযায়ী শ্রমিক নিয়ে আমি বলেছি। ইউপি, এমপি, রাজস্থান থেকে মেরে এখানে পাঠানো হচ্ছে। তাদের পরিবারকে সাহায্য করা হয়েছে। সাপে কামড়ালে বাড়িতে চিকিৎসা করানোর ঝুঁকি নেবেন না। সাথে সাথে হাসপাতালে নিয়ে যান। সবংয়ে একটা ছেলে মারা গেছে। ডায়েরিয়া, হতে পারে তাই ওআরএস ও সর্দি কাশির ওষুধ রাখতে বলা হয়েছে।”
পাশাপাশি মুখ্যমন্ত্রী জানান,সব পুজো মিটে যাওয়ার পরে তিনি আবার যোগ দেবেন প্রশাসনিক বৈঠকে। এখন বন্যায় নৈতিক ভাবে পাশে দাঁড়িয়ে থাকাই তাঁর দায়িত্ব।

আজকের খবর