সুষমা পাল মন্ডল। কলকাতা সারাদিন।
ডেস্টিনেশন কলকাতা। ভারত মার্কিন যৌথ উদ্যোগে বাংলায় চালু হতে চলেছে আন্তর্জাতিক মানের সেমিকাণ্ডাক্টর প্লান্ট।
সেই সঙ্গে আগামী ২০২৬ সালের মধ্যেই কলকাতার উপকণ্ঠে রাজারহাট নিউটাউনের নির্মীয়মান বেঙ্গল সিলিকন ভ্যালি হাবে চালু হতে চলেছে অন্তত ৪ আন্তর্জাতিক মানের ডাটা সেন্টার। যেখানে ভারতের পাশাপাশি বিনিয়োগ করতে আসছে দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ার বিভিন্ন দেশ।
দ্রুত বদলে যেতে থাকা কলকাতার এই তথ্যপ্রযুক্তি মানচিত্রে নিজের জায়গা করে নেওয়ার রোড ম্যাপ তৈরি হল। ওয়েবেল আয়োজিত এমার্জিং টেকনোলজি কনফারেন্স ২০২৪ -এ ( Emerging Technology conference 2024 organised by WEBEL ) ।
যেখানে রাজ্যের তথ্যপ্রযুক্তি সচিব রাজীব কুমারের পাশাপাশি কলকাতা তথা বাংলার তথ্যপ্রযুক্তি ক্ষেত্রে নিজের জায়গা করে নেওয়ার তাৎপর্য তুলে ধরলেন। ভারতবর্ষের সেমিকন্ডাক্টর ম্যানুফ্যাকচারিং ইন্ডাস্ট্রিজের প্রথম সারির ব্যক্তিত্ব তথা ভিএলএসআই সোসাইটি অফ ইন্ডিয়ার প্রেসিডেন্ট ডক্টর সত্য গুপ্ত।
( Eminent stalwarts from Academia, Govt Departments & the Industry discussed topics on AI & ML, IoT, Quantum Computing, etc., that are shaping the world.
The conference was graced by Shri Babul Supriyo, Hon’ble MIC, Department of IT & Electronics, Govt of WB; Shri Rajeev Kumar, IPS, DGP & ACS – Department of IT & Electronics, Govt of WB; Dr Sanjay Bahl, DG – CERT-In; Shri Sutirtha Bhattacharya, IAS (Retd.), Chairman, Webel; Shri Sanjay Kumar Das, Additional Secretary, Govt of WB & MD – Webel & many others Senior dignitaries from the Industry. )
ওয়েবেল আয়োজিত এই এমার্জিং টেকনোলজি কনফারেন্সে বাংলা তথা কলকাতার বেঙ্গল সিলিকন ভ্যালি হাবে ভারতবর্ষের বিভিন্ন রাজ্য এবং বিদেশের বিভিন্ন তথ্যপ্রযুক্তির সংস্থার বিনিয়োগ প্রসঙ্গে তুলে ধরেন ওয়েবেল চেয়ারম্যান সুতীর্থ ভট্টাচার্য, তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয়, ওয়েবেলের ম্যানেজিং ডিরেক্টর সঞ্জয় কুমার দাস, ডিজি সিইআরটি-ইন ডক্টর সঞ্জয় কুমার বহেল।
রাজি কুমার নিজের পুলিশি অভিজ্ঞতা থেকে বলেন টেকনোলজি যেভাবে নিজেকে পরিবর্তন করছে তাকে যদি অপরাধ জগতের সঙ্গে তুলনা করা যায়, দেখবেন ৯০ এর দশকে প্রত্যেক গ্যাংস্টার নিজেদের জীবন শুরু করতো টিকিট ব্ল্যাক করা থেকে। পুলিশ নিজেদের জায়গা থেকে প্রচুর চেষ্টা করত এই ধরনের অপরাধ বন্ধ করার জন্য। কিন্তু সেই জায়গায় টেকনোলজি দিয়ে তৈরি হলো বুক মাই শো এর মত বিভিন্ন ধরনের অ্যাপ। সঙ্গে সঙ্গেই সেই ধরনের অপরাধের জায়গাটা নষ্ট হয়ে গেল। বাংলায় তথ্যপ্রযুক্তি ক্ষেত্রে যে পরিবর্তণ এসেছে তাকে এক কথায় প্যারাডাইম শিফট বলা যেতে পারে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র যেমন সিলিকন ভ্যালি সেখানকার সরকার তৈরি করতে এগিয়ে এলেও মূলত সেখানকার তথ্যপ্রযুক্তি উদ্যোগীদের উৎসাহেই গড়ে উঠেছিল সিলিকন ভ্যালি। ইউরোপের বিভিন্ন দেশ চেষ্টা করলেও কিন্তু তা করতে পারেনি। কিন্তু আমাদের এখানে সরকার সমস্ত রকম চেষ্টা করে যাচ্ছে।
তথ্য প্রযুক্তি মন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয় বলেন, তথ্যপ্রযুক্তি ক্ষেত্রে কর্মসংস্থান এবং উন্নতির সবথেকে বড় উপায় হল যত বেশি সম্ভব বিদেশী বিনিয়োগ আকর্ষণ করা।
বেঙ্গালুরু হায়দ্রাবাদ মুম্বাই শহর দেশের বিভিন্ন জায়গার তথ্য প্রযুক্তি শিল্পের সঙ্গে যুক্ত তথ্যপ্রযুক্তি বিশেষজ্ঞদের উপস্থিতিতে এই সেমিনারে মূল যে বিষয়টি উঠে আসে তা হল যে ভাবে ইনফোসিস, পবিত্র এবং রিলায়েন্স এর মত সংস্থাগুলির রাজারহাটের বেঙ্গল সিলিকন ভ্যালি হাবে বড় মাপের বিনিয়োগ করতে এগিয়ে এসেছে, আগামী তিন চার বছরের মধ্যে গোটা দেশের তথ্যপ্রযুক্তি মানচিত্রে একেবারে শীর্ষে থাকবে কলকাতা। তবে শুধুমাত্র সেমিকন্ডাক্টর ইন্ডাস্ট্রি বা ডাটা সেন্টার দিয়ে নয়, এআই বা আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স এবং এমএল বা মেশিন লার্নিং প্রযুক্তির ক্ষেত্রেও ভারতবর্ষের সবচেয়ে বেশি পরিমাণ বাস্তবায়নের সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে বাংলাতে। যার অনেকটাই শুরু হয়েছিল রাজীব কুমার রাজ্যের তথ্যপ্রযুক্তি সচিব হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে।
গত প্রায় তিন বছর ধরে নিরবে ওয়েবেল দেশের বিভিন্ন তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থাগুলির সঙ্গে যোগাযোগ এবং নিয়মিত আলোচনার পাশাপাশি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সিলিকন ভ্যালি হাবের তথ্যযুক্তি সংস্থাগুলির কাছেও বাংলায় বিনিয়োগের সম্ভাবনা তুলে ধরেছে বিভিন্নভাবে। ভারত মার্কিন যৌথ উদ্যোগে সেমিকন্ডাক্টর ইন্ডাস্ট্রি কলকাতায় আসা মূলত তারই ফলশ্রুতি।
প্রসঙ্গত কোয়াড সম্মেলনে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের সঙ্গে বৈঠকে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির মধ্যে আলোচনায় কলকাতায় ভারত মার্কিন যৌথ উদ্যোগে সেমি কন্ডাক্টর ইন্ডাস্ট্রি তৈরি হওয়ার সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত আকার নিলেও, মমতা নিজের এক্স হ্যান্ডেলে এই কৃতিত্বের জন্য গত কয়েক বছর ধরে বাংলার তথ্যপ্রযুক্তি দপ্তর এবং ওয়েবেলের আধিকারিকদের বিশাল ভূমিকা রয়েছে বলে জানিয়েছিলেন।