সুহানা বিশ্বাস। কলকাতা সারাদিন।
আরজি কর কাণ্ডে নির্যাতিতার ময়নাতদন্ত আরজি করে করা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছিল প্রথম থেকেই। এরই মাঝে সোশ্যাল মিডিয়ায় তৃণমূল কংগ্রেস একটি নথি পোস্ট করেছিল। তাতে দাবি করা হয়েছিল, জুনিয়র ডাক্তারেরাই চেয়েছিলেন ময়নাতদন্ত হোক আরজি করে এবং ময়নাতদন্তের নথি সই রয়েছে তঁদের।
এই আবহে আজ জুনিয়র ডাক্তাররা মেনে নেন, উল্লেখিত নথিতে তাঁদের স্বাক্ষর ছিল। তবে তিনি বিস্ফোরক অভিযোগ করে বলেন, উচ্চপদস্থ আধিকারিকরা বিষয়টিকে চাপা দেওয়ার চেষ্টা করেছিলেন সেদিন।
আজ সাংবাদিক বৈঠক করে আন্দোলনকারী চিকিৎসক কিঞ্জল নন্দ বলেন, ‘৯ অগস্ট সকালে আমরা খবর পাই চেস্ট বিভাগের সেমিনার রুমে এক জন পিজিটি দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী আত্মহত্যা করেছে। বেলা গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে বুঝতে পারি আত্মহত্যা নয়, ধর্ষণ এবং খুন। তবে অভয়ার ময়নাতদন্ত রিপোর্ট নিয়ে যে বিভ্রান্তিকর খবর ছড়ানো হয়েছে, সেই নিয়ে আমরা কিছু বলতে চাই। আমরা চেয়েছিলাম, কোনও ভাবেই যেন ওই ঘটনাকে আত্মহত্যা বলে চালিয়ে দেওয়া না হয়। আমাদের স্বল্প জ্ঞানে সেই চেষ্টাই করেছিলাম। সমাজমাধ্যমে যে বিভ্রান্তি ছড়ানো হচ্ছে, তার তীব্র নিন্দা জানাই।’
এরপর কিঞ্জল নন্দ বলেন, ‘ময়নাতদন্ত নিয়ে সমাজমাধ্যমে কিছু বিভ্রান্তি ছড়ানো হচ্ছে। ওই চিকিৎসকের ময়নাতদন্ত হয়েছিল বিশেষজ্ঞদের তত্ত্বাবধানে। ম্যাজিস্ট্রেট, পুলিশের উচ্চ আধিকারিকদের উপস্থিতিতে ময়নাতদন্ত হয়। ওখানে জুনিয়র ডাক্তারদের সই থাকলেও ময়নাতদন্তের স্বচ্ছতার দায় আমাদের উপর বর্তায় না। আমাদের সন্দেহ হয়েছিল বলেই ম্যাজিস্ট্রেট ইনকোয়েস্টের দাবি করেছিলাম। বিভিন্ন উচ্চপদস্থ আধিকারিকরা যেভাবে এই বিষয়টিকে ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করেছিলেন, আমরা তার তীব্র নিন্দা জানাই। পরে আমরা পুলিশের কাছে পোস্টমর্টেম রিপোর্ট দেখতে চেয়েছিলাম। তবে তা দেখতে দেওয়া হয়নি। সুপ্রিম কোর্টও ময়নাতদন্ত নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করে।’
রিপোর্ট অনুযায়ী, সিবিআই নাকি দাবি করেছে, ময়নাতদন্তের ভিডিয়োগ্রাফি থেকে স্পষ্ট কিছু বোঝা যাচ্ছে না। দিল্লি এবং কল্যাণী এইমসের বিশেষজ্ঞদের সেই ভিডিয়ো দেখানো হয়েছে। তবে তা থেকে কিছু বেরিয়ে আসেনি। এদিকে সেদিন তরুণী চিকিৎসকের দেহ সূর্যাস্তের পর হয়েছিল। সেখানে পোস্টমর্টেম রুমের আলো কম ছিল বলে দাবি করা হচ্ছে। এদিকে আরও দাবি করা হচ্ছে, খুব দ্রুতই (১ ঘণ্টা ১০ মিনিট) এই ময়নাতদন্ত সম্পন্ন করা হয়েছে। এদিকে জেরা করে এক ময়নাতদন্তকারী অফিসারের থেকে নাকি সিবিআই জেনেছে, পোস্টমর্টেমে তাড়াহুড়ো করা নিয়ে তিনি আপত্তি জানিয়েছিলেন, তবে সেই আপত্তি গ্রাহ্য করা হয়নি। সেই চিকিৎসক নাকি নিজের ফোনে আবার তরুণী নির্যাতিতার দেহের ক্ষতস্থানের ১৫টি ছবি তুলে রেখেছিলেন। তা সিবিআইয়ের হাতে তিনি তুলে দিয়েছেন।