শৌভিক তালুকদার। কলকাতা সারাদিন।
কালীপুজোর প্রাক্কালে বঙ্গোপসাগরে ঘূর্ণিঝড়ের আশঙ্কা বাড়ছে। শনিবার মধ্য আন্দামান সাগরে একটি ঘূর্ণাবর্ত তৈরি হয়েছে, যা আগামী বুধবার গভীর নিম্নচাপে পরিণত হবে। এ নিয়ে মুখ্য সচিব মনোজ পন্থ জেলা প্রশাসকদের নির্দেশ দিয়েছেন, যাতে দুর্যোগ মোকাবিলার জন্য প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি নেওয়া হয়।
আবহাওয়া বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, বৃহস্পতিবার থেকে শনিবারের মধ্যে বঙ্গোপসাগরে ঘূর্ণিঝড় ‘ডানা’ তৈরি হতে পারে, যার গতিবেগ ঘন্টায় ১২০ কিমি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এটি ওড়িশা, অন্ধ্রপ্রদেশ বা বাংলাদেশের দিকে আছড়ে পড়তে পারে। যদিও বাংলার উপর কতটা প্রভাব ফেলবে তা এখনও স্পষ্ট নয়, রাজ্য সরকার ঝুঁকি নিতে নারাজ। ফলে, উপকূলবর্তী অঞ্চলের বাঁধগুলোর অবস্থা পরিদর্শন, এলাকার বাসিন্দা ও মৎস্যজীবীদের সতর্ক করা এবং ত্রাণ শিবির খোলার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
আলিপুর আবহাওয়া দপ্তর জানায়, সোমবার মধ্য বঙ্গোপসাগরে ঘূর্ণাবর্তটি নিম্নচাপে রূপান্তরিত হবে এবং পরবর্তীতে অতি গভীর নিম্নচাপে পরিণত হয়ে মায়ানমার বা অন্ধ্র উপকূলের দিকে এগোবে। এর ফলে সমুদ্র উত্তাল থাকার আশঙ্কা রয়েছে, এবং মৎস্যজীবীদের গভীর সমুদ্রে যাওয়ার উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে।
মঙ্গল থেকে আবহাওয়ার পরিবর্তন ঘটতে পারে এবং বুধবার থেকে দক্ষিণবঙ্গে বৃষ্টিপাতের পরিমাণ বাড়তে পারে। পূর্ববর্তী অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে, রাজ্য সরকারের প্রস্তুতি ও ব্যবস্থা নেওয়া অত্যন্ত জরুরি। গত মে মাসে ঘূর্ণিঝড় রেমাল সুন্দরবন অঞ্চলে ব্যাপক ক্ষতি করেছে, তাই এইবার কোনো প্রকার অবহেলা কাম্য নয়।
২৩ তারিখ অর্থাৎ বুধবার ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হবে এটি। ২৪ তারিখ, বৃহস্পতিবার ওড়িশা ও উত্তর-পশ্চিম বঙ্গোপসাগরে আসার সম্ভাবনা রয়েছে। এর প্রভাবে বুধবার থেকে বৃষ্টি হবে দক্ষিণবঙ্গে। উপকূলবর্তী জেলা, বিশেষ করে দুই ২৪ পরগনা ও পূর্ব মেদনীপুরের বৃষ্টির পরিমাণ বেশি থাকার পূর্বাভাস দিল আলিপুর আবহাওয়া দফতর। হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টি হবে কলকাতা ও পার্শ্ববর্তী এলাকাতেও।
২৪ তারিখ ঘূর্ণিঝড়টি ওড়িশার কাছে আসায় কলকাতা, উত্তর ২৪ পরগনা, হাওড়া, হুগলি, ঝাড়গ্রামে ভারী বৃষ্টি হতে পারে। দক্ষিণবঙ্গের আরও কয়েকটি জেলাতেও ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে।
২১-২৬ তারিখ পর্যন্ত মৎস্যজীবীদের সমুদ্রে যেতে নিষেধ করা হয়েছে। উপকূলবর্তী এলাকায় এই সময় হাওয়ার গতিবেগ থাকতে পারে ১০০-১১০ কিলোমিটার প্রতি ঘণ্টা। ফলে গাছপালা ও কাচা বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ারও আশঙ্কা রয়েছে।