সুমন তরফদার। কলকাতা সারাদিন।
নবান্ন মঙ্গলবার দীর্ঘসময় বৈঠক করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। দানার ক্ষয়ক্ষতি থেকে আবাস যোজনা, ১ ঘণ্টার মিটিংয়ে একাধিক বিষয়ে আলোচনা করলেন মমতা। আধিকারিকদের দেওয়া হল বিশেষ নির্দেশ।
ঘূর্ণিঝড় দানার প্রভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে বাংলার একাধিক জেলা। দানার খয়ক্ষতি নিয়ে দেখতে কৃষি মন্ত্রী ও পঞ্চায়েত মন্ত্রীকে জেলায় জেলায় যাওয়ার নির্দেশ দিলেন মুখ্যমন্ত্রী। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানালেন, ”কৃষকদের কোনও ভাবে বঞ্চনা করা যাবে না। ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি গুলোর সঙ্গে আলোচনায় বসতে হবে। কৃষকদের শস্য বীমা যোজনা পাওয়া থেকে যেন বঞ্চিত না হয় সেটা নিশ্চিত করতে হবে। মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশ কৃষি দফতরকে।”
‘গরিব কৃষকদের, ক্ষতি গ্রস্থ কৃষকদের পাশে থাকতে হবে। যাদের ক্ষতি হয়েছে সবাইকে দিতে হবে। কোনও পার্সেন্টেজ না হলে দেব না এই সব যেন না হয়। আমাদের মানুষের পাশে দাঁড়াতে হবে’, কৃষি দফতরকে বার্তা মুখ্যমন্ত্রীর। নবান্ন সূত্রে জানা গিয়েছে, এখনও পর্যন্ত ৬১ লক্ষ ৫৫ হাজার কৃষক শস্য বীমার জন্য আবেদন করেছে। দানার প্রভাবে এখনও পর্যন্ত ৯ লক্ষ ৩ হাজার ৮৪৩ জন কৃষক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।
আবাস যোজনা নিয়ে কেন্দ্রের সঙ্গে রাজ্যের বিতর্ক বেধেছে। দুর্নীতির অভিযোগ তুলে আবাস যোজনার টাকা কেন্দ্র বন্ধ করে দেয়। কার্যত সংঘাত বাদে রাজ্যের সঙ্গে কেন্দ্রের। সেই সময় মুখ্যমন্ত্রী ঘোষণা করেছিলেন বকেয়া টাকা তিনি দেবেন। সেই মতো কাজ শুরু হয়েছে। তবে কেন্দ্রের দেওয়া একটি শর্ত মানবে না রাজ্য। জানালেন মমতা।
বস্তুত, কেন্দ্র আবাস যোজনার টাকা না দেওয়ার পরপরই ভোটের আগে মুখ্যমন্ত্রী আগেই ঘোষণা করেছিলেন, ডিসেম্বরের মধ্যে থেকে রাজ্য সরকার এই টাকা দেবে। এমনকী একশো দিনের কাজের টাকাও দিয়ে দেওয়া হবে বলে ঘোষণা করা হয়। তবে আবাসের বকেয়া টাকা দেওয়ার পূর্বে তার আগে সমীক্ষা করবে রাজ্য সরকার আরেকবার। সেই সমীক্ষার কাজ চলছে। তারপরই রাজ্য সরকার সেই টাকা দেবে।
এরপর আজ কৃষি দফতর ও পঞ্চায়েত দফতরকে নিয়ে বৈঠকে বসেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সূত্রের খবর, সেখান থেকে মমতা জানান আবাসে কেন্দ্রের শর্ত তারা মানবে না। অর্থাৎ কেন্দ্র যে সকল শর্ত আরোপ করেছিল যেমন,তিন চাকা- চার চাকার গাড়ি থাকলে আবাস যোজনার অধীনে বাড়ির জন্য টাকা পাবেন না। এমনকী কারও বাড়ির একাংশ পাকা করতে পেরেছে সেক্ষেত্রে কেন্দ্রের শর্ত ছিল পাবে না। কেউ সরকারি চাকরি করছেন তিনিও আবাস যোজনা প্রকল্পের আওতায় থাকবেন না।
তবে এই সকল শর্ত এক থাকলেও যাঁরা বাড়ির একাংশ পাকা করেছেন তাঁরাও রাজ্যের টাকা পাবেন বলেন জানিয়েছেন।
আবাস যোজনা প্রসঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ”বাংলা আবাস যোজনা নিয়ে কেন্দ্রীয় সরকারের নিয়ম মানছি না। মানবিক ভাবে ভাবতে হবে। রাজ্য সরকারের অভিমুখ হবে মানবিক। একটা স্কুটার থাকলে পাবে না এই সব যেন না হয়। বাংলার সরকার মানবিক। এই বার্তা দিতে হবে মানুষদের। পঞ্চায়েত মন্ত্রী প্রদীপ মজুমদারকে বাংলা আবাস যোজনা নিয়ে বার্তা মুখ্যমন্ত্রীর।”