সুমন তরফদার। কলকাতা সারাদিন।
দূরত্ব কমছে রাজ্য-রাজ্যপালের মধ্যে? উপনির্বাচনে জয়ী ৬ প্রার্থীকে আগামী সোমবার বিধানসভায় গিয়ে শপথবাক্য পাঠ করাবেন রাজ্যপাল। এমনটাই আগ্রহ প্রকাশ করেছেন রাজ্যপাল সি ভি আনন্দ বোস। সূত্রের খবর এমনই।
সদ্য রাজ্য বিধানসভার ছ’টি আসনে উপনির্বাচন হয়। সব আসনেই জয়লাভ করেছে তৃণমূল কংগ্রেস। আগামী সোমবার সিতাই, মাদারিহাট, তালড্যাংরা, মেদিনীপুর, হাড়োয়া ও নৈহাটির ৬ নতুন বিধায়কের শপথগ্রহণ।
এই মুহূর্তে রাজ্য বিধানসভার শীতকালীন অধিবেশন চলছে। রাজ্য বিধানসভার তরফে চিঠি পাঠানো হয়েছিল রাজভবনে। সেখানে উল্লেখ করা হয়েছিল, দ্রুত শপথ করানো হোক এই ছয় নয়া বিধায়কের। সাম্প্রতিক অতীতে উপনির্বাচনে জিতে আসা বিধায়কদের শপথ ঘিরে বারবার বিরোধ বাঁধে রাজভবনের সঙ্গে বিধানসভার। বিধানসভার বক্তব্য ছিল, রাজ্যপাল হয় বিধানসভায় এসে শপথবাক্য পাঠ করান, নয়তো রাজ্যপাল কাউকে মনোনীত করুন শপথবাক্য পাঠ করানোর জন্য। সায়ন্তিকা বন্দোপাধ্যায় ও রেয়াদ হোসেন সরকারের শপথ নিয়ে বিতর্ক চরমে ওঠে। পরবর্তী সময়ে সুপ্তি পাণ্ডে, কৃষ্ণ কল্যাণী ও মধুপর্ণা ঠাকুরের শপথ নিয়েও তুমুল চর্চা হয়। স্পিকারকে অধিবেশনের মধ্যে শপথ পাঠ করাতে দেখা যায় যা নিয়েও রাজভবনের তীব্র প্রতিক্রিয়া ছিল। এর পর রায়গঞ্জ, রানাঘাট দক্ষিণ, মানিকতলা এবং বাগদার ভোটে জয়ী বিধায়কদের একই কায়দায় বিধানসভার অধিবেশনে শপথগ্রহণ করিয়েছিলেন স্পিকার।
তবে এবার দেখা গেল, বিধানসভায় এসে শপথ বাক্য পাঠ করাতে আগ্রহী খোদ রাজ্যপাল। রাজভবনের এই সিদ্ধান্তে আপত্তি দেখছে না বিধানসভা। ২ ডিসেম্বর, আগামী সোমবার বিধানসভায় আসতে পারেন মুখ্যমন্ত্রীও। তাঁর উপস্থিতিতেই রাজ্যপাল অধিবেশনের মধ্যে শপথ পাঠ করাতে পারেন। তবে শপথ নিয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত শনিবার। তবে এবার বিতর্ক দূরে সরিয়েই হতে চলেছে ছয় নয়া বিধায়কের শপথ।
প্রসঙ্গত, নতুন ছয় বিধায়কের শপথগ্রহণের অনুমতি চেয়ে গত মঙ্গলবার বিধানসভার পরিষদীয় দফতর ও স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়ের দফতর থেকে চিঠি পাঠানো হয়েছিল রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোসকে। ২৩ নভেম্বর রাজ্যের ছয় উপনির্বাচনের ফলাফল ঘোষণা হয়েছে। তার পরেই বিতর্ক দানা বাঁধে তাঁদের শপথগ্রহণ ঘিরে।
রাজ্যপালের দ্বিতীয় বর্ষপূর্তি অনুষ্ঠানের প্রাক্কালে তিনি মুখ্যমন্ত্রীকে চিঠি লেখেন। সেখানে তিনি জানান, রাজ্যের উন্নতির জন্য তিনি মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে একসাথে কাজ করতে চান। উপনির্বাচনে জয়ী ৬ প্রার্থীকে শপথবাক্য পাঠ করানোর জন্য গত সোমবার আবেদন যায় রাজ্যপালের কাছে। তার পরই রাজ্যপালের এমন ইচ্ছেপ্রকাশ। সোমবার তিনি বিধানসভায় আসতে চান সকাল এগারোটায়। তারপরেই শপথবাক্য পাঠ করাবেন।