সুমন তরফদার। কলকাতা সারাদিন।
তোলাবাজি কাণ্ডে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের নাম ব্যবহার করার অভিযোগে কলকাতা পুলিশের তদন্তে নতুন মোড়। এই মামলায় কোচবিহারের বিজেপি বিধায়ক নিখিলরঞ্জন দে-কে তলব করা হয়েছে। অভিযোগের ভিত্তিতে শেক্সপিয়র সরণি থানার পুলিশ তাঁকে ই-মেলের মাধ্যমে তলব পাঠিয়েছে। বিধায়ককে আগামী তিন দিনের মধ্যে থানায় হাজিরা দিতে বলা হয়েছে।
তোলাবাজি কাণ্ডে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের নামকে জড়িয়ে রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক উত্তেজনা সৃষ্টি হয়েছে। অভিযোগ, তোলাবাজি চক্রে জড়িত ব্যক্তিরা অভিষেকের নাম ব্যবহার করে আর্থিক লেনদেন করছিল। এ নিয়ে শেক্সপিয়র সরণি থানায় একটি অভিযোগ দায়ের হয়। সেই অভিযোগের তদন্তে উঠে এসেছে নিখিলরঞ্জন দে-র নাম।
নিখিলরঞ্জন দে এই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন এবং বলেছেন, “আমার নামে মিথ্যা অভিযোগ আনা হয়েছে। আমি তদন্তে সহযোগিতা করতে প্রস্তুত।” তবে, পুলিশ সূত্রে জানা গেছে যে, বিধায়ককে জিজ্ঞাসাবাদ করে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য সংগ্রহ করার পরিকল্পনা রয়েছে।
শেক্সপিয়র সরণি থানার পুলিশ ইতিমধ্যে অভিযোগকারীদের সঙ্গে কথা বলেছে এবং প্রমাণ সংগ্রহে তৎপর হয়েছে।
এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে রাজ্য রাজনীতিতে তীব্র বিতর্ক শুরু হয়েছে। তৃণমূল কংগ্রেস এই ঘটনাকে বিজেপির অভ্যন্তরীণ চক্রান্ত বলে দাবি করেছে। অন্যদিকে, বিজেপি এই অভিযোগকে ভিত্তিহীন এবং রাজনৈতিক প্রতিহিংসার অংশ বলে আখ্যা দিয়েছে। নিখিলরঞ্জন দে-কে জিজ্ঞাসাবাদের পর পুলিশ পুরো ঘটনাটি নিয়ে একটি বিস্তারিত রিপোর্ট তৈরি করবে।
প্রসঙ্গত, গত ২৪ ডিসেম্বর কালনা পুরসভার চেয়ারম্যান আনন্দ দত্তকে হোয়াটসঅ্যাপ কল করেন বলে অভিযুক্তরা। এমনকি হোয়াটসঅ্যাপের ডিপিতে তৃণমূল কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের ছবি লাগানো ছিল বলে জানা গিয়েছে। অভিযুক্তরা কালনার চেয়ারম্যানকে ফোন করে বলেন যে, তাঁরা অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের অফিস থেকে কথা বলছেন। এছাড়াও তাঁরা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পদস্থ সরকারি আধিকারিক বলেও দাবি করেন অভিযুক্তরা। কালনার চেয়ারম্যানের কাছ থেকে মোটা অঙ্কের অর্থ দাবি করা হয়। এই ঘটনায় কালনা পুরসভার চেয়ারম্যানের সন্দেহ হয়। তিনি দলের কয়েকজনের সঙ্গে ঘটনাটি আলোচনা করেন।
এরপরেই অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের অফিসে ফোন করে গোটা বিষয়টি তিনি জানতে চান। পরে জানা যায়, গোটাটাই একটা চক্রান্ত। সঙ্গে সঙ্গে এই ঘটনার বিরুদ্ধে তিনি ব্যবস্থা নেন এবং সেক্সপিয়ার সরণি থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন।
উল্লেখ্য, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের অফিস থেকে ফোন করে তোলা আদায় করার ঘটনা এই প্রথম নয়। এর আগেও, শেক্সপিয়ার সরণি থানার পুলিশ বেশ কয়েকজনকে গ্রেফতার করেছে। তাঁরাও অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের নাম করে টাকা তুলতে গিয়ে পুলিশের জালে ধরা পড়ে।