শোভন গায়েন। কলকাতা সারাদিন।
“একটা সর্বদলীয় বৈঠক ডাকা হোক, বিরোধীরাও তো আমাদের প্রতি সহমর্মী। আমাদের জন্য তাদের বক্তব্য জানতে চাই, রিভিউয়ের জন্য দক্ষ আইনজীবী আমাদের প্রয়োজন, সেরা আইনজীবী প্রয়োজন। কোর্টে যোগ্য অযোগ্য নিয়ে কথা হল কিন্তু বিচারক বিচারের সময় লিখল পরীক্ষাটাই অবৈধ।” এভাবেই সোমবার নেতাজি ইনডোরের সভা থেকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উপস্থিতিতেই সর্বদল বৈঠকের দাবি তুললেন যোগ্য চাকরি হারাদের প্রতিনিধি মেহবুব মণ্ডল।
যোগ্য শিক্ষকদের পক্ষ থেকে মেহবুব মণ্ডল তাদের দাবি সরকারের কাছে পেশা করেন। মেহবুব মণ্ডল বলেন, আমরা সুপ্রিম কোর্টেই যাবোই, রাজ্য সরকার ও এএসসিকে আবেদন করছি রিভিউ পিটিশনের জন্য। তবে এই বিচারপতির বেঞ্চের আমরা রিভিউ পিটিশন করতে চাই না। শুধু রিভিউ পিটিশন করলেই হবে না জেতার জন্য সর্বোত্তম চেষ্টা করতে হবে। এই সময়কালে আমাদের চাকরি থেকে বিরত রাখা যাবে না, চারকি খারিজের চিঠি দেওয়া যাবে না, বেতন বন্ধ রাখাও যাবে না।
একইসঙ্গে মেহবুব মণ্ডল আরও বলেন , আমরা আর পরীক্ষা দেব না, রিভিউ পিটিশন চলাকালীন কোন পরীক্ষার বিজ্ঞপ্তি দেওয়া যাবে না। আমাদের ওএমআর মিরর রিপোর্ট প্রকাশ করতে হবে। বৈধ দের পরিচ্ছন্ন তালিকা নিয়ে পিটিশন করতে হবে।
মুখ্যমন্ত্রীর সামনে দাঁড়িয়েই এক চাকরিহারা বলেন, ”আমরা যখন এমন অসহায় অবস্থায় পড়লাম তখন থেকে রাজ্যের বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলি এবং সেইসব আইনজীবীরা যারা আমাদের চাকরি যাওয়ার ক্ষেত্রে ভূমিকা পালন করেছেন তাঁরা হা-হুতাশ করতে শুরু করলেন। তাঁরাও বলছেন আমাদের প্রতি অবিচার হয়েছে। আদতে তাঁরা সহমর্মী নাকি আমাদের হতাশা নিয়ে মার্কেটিং করছেন, তা জানতেই সর্বদল বৈঠক চাইছি।”
অন্যদিকে চাকরি হারাদের আরেক প্রতিনিধি চাকরিহারা সঙ্গীতা বলেন, “আমার মতো হাজার হাজার সহযোদ্ধারা এখানে উপস্থিত, তাঁরা সামনের মাসে কী খাবে, জানে না। আমরা তো সুবিচার চেয়েছিলাম। যা যা তথ্য দেওয়ার দিয়েছিলাম, তারপরও এই অবস্থা। আমি আমার স্কুলের কম্পিউটার অ্যাপ্লিকেশনের একজন শিক্ষক ছিলাম। বাচ্চাগুলোর কী হবে। আমরা কেবল ২০ হাজার নই, চাকরিহারা প্রত্যেক একজনের পিছনে পাঁচ জন। আজ সকলে আঙুল তুলছে, কী করে কত টাকা দিয়ে চাকরিটা পেয়েছিলিস? আমার ফেসবুকের ওয়ালে এসে লিখছে, কী রে কত টাকা দিয়ে চাকরি পেয়েছিলিস? সমাজে মুখ দেখাব কীভাবে?”

মুখ্যমন্ত্রীর কাছে আমরা ন্যায় বিচার চাইছে। কেঁদে ফেলেন সঙ্গীতা। বললেন, “আমি আইটি ছেড়ে এসেছিলাম। কারণ আমি শিক্ষক হতে চেয়েছিলাম। আমাদের দোষ কি এটাই, যে আমরা ২০১৬ সালের পরীক্ষার্থী? কী করে বলতে পারে অল আর ফ্রড? আমায় যোগ্যতায় পাওয়া চাকরিটা ফিরে পেতে চাই। আর কিছুই চাই না।”