সুমন তরফদার। কলকাতা সারাদিন।
দেশের বিভিন্ন রাজ্য থেকে অপরাধীরা ঘাঁটি গাড়ছে কলকাতায়। অপরাধীদের স্বর্গ হয়ে উঠেছে কলকাতা তথা বাংলা। সেই কারণেই নাকি বাংলা তথা কলকাতায় অপরাধের সংখ্যা এত কম। গত বেশ কয়েক বছর ধরেই এমন অভিযোগ করে আসছে সিপিএম এবং বিজেপি। কিন্তু এবারে কস ভাই তৃণমূলের কাউন্সিলরকে গুলি করে হত্যার চেষ্টা করে সেই অভিযোগ উঠে এলো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মন্ত্রিসভার দ্বিতীয় গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি তথা কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিমের মুখে।
গতকাল ভর সন্ধেয় কসবায় তৃণমূল কাউন্সিলর সুশান্ত ঘোষকে লক্ষ্য করে গুলি ছোঁড়া হয়। তবে অল্পের জন্য রক্ষা পান তিনি। বলাই বাহুল্য গোটা ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। এবার এই ইস্যুতে পুরমন্ত্রী ও মেয়র ফিরহাদ হাকিমের নিশানায় পুলিশ।
এদিন ফিরহাদ বলেন, “অনেক হয়েছে! উত্তরপ্রদেশ, বিহার ও আহমেদাবাদের সংষ্কৃতি এখানে ঢুকতে দেওয়া হবে না। বাংলা দুষ্কৃতীদের জায়গা নয়। বাংলা হল সংষ্কৃতির জায়গা। আমাদের কাউন্সিলরকে খুন করলে, যদি খুন হতেন, তাহলে তার পরিবার ও আমাদের দল ক্ষতিগ্রস্থ হত। তাই পুলিশকে বলব অ্যাক্ট নাউ। মুখ্যমন্ত্রী বারবার বলার পরেও কীভাবে অস্ত্র ঢুকছে? কী করে অস্ত্র ঢুকছে? ইন্টিটেলিজেন্স কোথায়? এত বাইরের ক্রিমিনাল আসছে কীকরে ? কোথায় রয়েছে নেটওয়ার্ক?”
অন্যদিকে, গতকাল রাতে খবর পেয়েই সুশান্ত ঘোষকে ফোন করে খোঁজখবর নিয়েছিলেন দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। আর শনিবার তাঁকে ফোন করেন দলনেত্রী তথা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। জানিয়েছেন, দল পাশে আছে। শনিবার মমতার ফোনের কথা জানিয়েছেন সুশান্তবাবু নিজেই।
এদিন সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে কাউন্সিলরের আরও বক্তব্য, শুক্রবার ঘটনার অভিঘাতে তিনি রাজনীতি থেকে সরে যাওয়ার কথা ভেবেছিলেন। কিন্তু দলের সমর্থন পেয়ে এবং এতদিনকার রাজনৈতিক কেরিয়ারের কথা ভেবে পরে মতবদল করেছেন। সুশান্তবাবুর কথায়, ”নিজের বাড়ির সামনে এমন ঘটনায় আমি এতটাই হতাশ হয়েছিলাম যে সাময়িক অভিঘাতে রাজনীতি ছাড়ার কথা ভাবছিলাম। কিন্তু রাতে পরিবারের সঙ্গে আলোচনা করে সেই মত বদলেছি। এতদিন ধরে এখানে রাজনীতি করছি, মানুষের সেবা করেছি। এখন আমি এখান থেকে সরে গেলে এ ধরনের সমাজবিরোধী শক্তি আরও মাথাচাড়া দেবে। তৃণমূলে থেকেই এদের বিরুদ্ধে লড়তে হবে।”
তবে পুলিশের ভূমিকা নিয়ে ফিরহাদের সঙ্গে একমত হলেন না সুশান্তবাবু। তিনি বললেন, ”আমার মনে হয় না, পুলিশের শৈথিল্য আছে। ১২ ঘণ্টার মধ্যে পুলিশ অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করেছে। গলসি থেকেও একজন গ্রেপ্তার হয়েছে বলে খবর পেলাম। তদন্ত চলছে। যেটুকু যা বাকি আছে, তাও পুলিশ দু-একদিনের মধ্যে সমাধান করে ফেলবে বলে আমি আশা করি।”