সুমন তরফদার। কলকাতা সারাদিন।
দিল্লিতে বাঙালি অধ্যুষিত এলাকায় মাছের বাজার বন্ধ করে দেওয়ার অভিযোগ বিজেপি-র বিরুদ্ধে। দোকানে দোকানে মাছ ব্যবসায়ীদের হুমকি দেওয়ার অভিযোগ। সেই নিয়ে নতুন করে উত্তাল জাতীয় রাজনীতি। একটি ভিডিও-ও সামনে এসেছে, যেখানে ব্যবসায়ীদের হুমকি দিতে শোনা গিয়েছে কিছু মানুষজনকে। অভিযোগ, হুমকির মুখে পড়ে গত ১০ দিন ধরে মাছের বাজার বন্ধ রাখতে হয়েছে ব্যবসায়ীদের।
দক্ষিণ দিল্লির অভিজাত চিত্তরঞ্জন পার্ক এলাকা থেকে ঘটনাটি সামনে এসেছে। ওই এলাকায় মূলত অভিজাত পরিবারের বাস, যার মধ্যে বাঙালির সংখ্যা চোখে পড়ার মতো। সেখানকার ১ নম্বর মার্কেটটি মাছের বাজার। ওই মাছের বাজারের পাশেই একটি কালীমন্দির রয়েছে। মার্কেটের মতোই মন্দিরটিও বহু পুরনো। সেই মন্দিরকে সামনে রেখে মাছের বাজার নিয়ে গেরুয়া ব্রিগেট আপত্তি তুলছে বলে দাবি বিজেপি বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলির। (BJP vs TMC)
তৃণমূলের সাংসদ মহুয়া মৈত্র, আম আদমি পার্টির প্রাক্তন সাংসদ সৌরভ ভরদ্বাজ বিষয়টি নিয়ে সরব হয়েছেন। তাঁরা যে ভিডিও তুলে ধরেছেন, তাতে গেরুয়া বসন পরিহিত কিছু যুবককে মাছ ব্যবসায়ীদের রীতিমতো হুঁশিয়ারি দিতে শোনা যায়। এক যুবককে বলতে শোনা যায়, ‘সবাইকে আদেশ দিচ্ছি, মন্দিরের সঙ্গে এই বাজার চলবে না। মন্দির পরিসরকে বিশুদ্ধ রাখতে হবে। দেওয়ালল তো একটাটই! এটা অন্যায়। দেবীকে মাংস উৎসর্গ করা হয় বলে শোনা যায়। এটা মনগড়া কাহিনি। যারা মানে মানুক, এর সাপেক্ষে প্রমাণ নেই শাস্ত্রে। মন্দিরের সঙ্গে যা হচ্ছে, তাতে সনাতনীদের ধর্মীয় ভাবাবেগ আহত হচ্ছে। গোটা দেশ দেখছে।’
এক ব্যবসায়ী বিষয়টি ব্যাখ্যার চেষ্টা করেন। তিনি জানান, মন্দির এবং বাজার একই সঙ্গে চলে আসছে। বাজারের তরফেই মন্দিরটি প্রতিষ্ঠা করা হয়। এমনকি এক ক্রেতাও বোঝানোর চেষ্টা করেন। জানান, কামাখ্যাতেও বলি হয়। কিন্তু উপদ্রবকারীরা বলে, ‘মন্দিরের সঙ্গে এটা অন্যায় হচ্ছে। আমাদের ভাবাবেগ আহত হচ্ছে। জীবহত্যা হচ্ছে মন্দিরের পাশে। হনুমান মন্দিরও রয়েছে। যেখানে হয়, সেখানেও আপত্তি উঠছে।’

এ নিয়ে মহুয়া লেখেন, ‘এই দেখুন, বিজেপি-র গুন্ডা বাহিনী মৎস ভক্ষণকারী বাঙালিদের হুমকি দিচ্ছে। স্থানীয় বাসিন্দারা বলছেন, গত ৬০ বছরে এমন হয়নি’।
সৌরভ লেখেন, ‘দিল্লি উন্নয়ন পর্ষদের জমিতে বাজার হয়েছে। কোনও বেআইনি জবরদখল হয়নি। সিআর পার্কের বাঙালিদের মাছ খাওয়ায় যদি বিজেপি-র আপত্তি থাকে, নির্বাচনী ইস্তাহারে তাহলে লেখা উচিত ছিল। সিআর পার্কে বসবাসকারী বাঙালিরা শিক্ষিত। তাঁদের খাদ্যাভ্যাসকে সম্মান জানানো উচিত। আমি নিজে নিরামিষ খাই, কিন্তু কারও খাদ্যাভ্যাস নিয়ে আপত্তি নেই। শান্তিপূর্ণ এলাকায় বিজেপি কেন অশান্তি ছড়াচ্ছে’?