শোভন গায়েন। কলকাতা সারাদিন।
“মানুষকে দাবিয়ে রেখেছে সরকার। এনআইএ সিবিআই তদন্তের দাবি করছি। অনেক লড়াই করে ক্ষতিগ্রস্তদের সঙ্গে দেখা করলাম। তিনবার আমি চেষ্টা করেছি ঢোকার, আমাকে ঢুকতে দেয়নি। ৬ জন ক্ষতিগ্রস্তকে নিয়ে আইনি লড়াই করছি। দোষীদের গ্রেফতারের দাবি জানাচ্ছি। মোথাবাড়িতে স্থায়ী শান্তি প্রতিষ্ঠার দায়িত্ব বিরোধী দলনেতার।” এভাবেই হাইকোর্টের অনুমতি নিয়ে মোথা বাড়িতে গিয়ে সেখানে আক্রান্তদের সঙ্গে কথা বলার পরে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা দিয়ে তদন্তের দাবী তুললেন শুভেন্দু অধিকারী।
মালদহের মোথাবাড়িতে ‘রামনবমী’র প্রস্তুতিমূলক একটি মিছিল স্থানীয় একটি মসজিদের পাশ দিয়ে যাচ্ছিল। কয়েকজনের অভিযোগ ছিল, মসজিদের পাশ দিয়ে ওই মিছিলটি যাওয়ার সময় আতশবাজি ছোঁড়া হয়। সেই অভিযোগকে কেন্দ্র করে তুমুল অশান্তি ছড়িয়ে পড়ে ওই এলাকায়। শুরু হয় রাস্তা অবরোধ। পুলিশ সেই অবরোধ তুলতে গেলে তুমুল অশান্তি ছড়িয়ে পড়ে। পুলিশের গাড়ি ভাঙচুর হয়, চলে ইট-বৃষ্টি। পরিস্থিতি সামাল দিতে লাঠিচার্জ করে পুলিশ, ফাটানো হয় কাঁদানে গ্যাসের শেল। টানা কয়েকদিনের অশান্তির পর শেষমেষ অত্যন্ত দক্ষতার সঙ্গে মোথাবাড়ির অশান্তির পরিবেশ নিয়ন্ত্রণে আনে পুলিশ। সোশ্যাল মিডিয়া থেকে শুরু করে মাইকিং করে এলাকায় শান্তি ও সম্প্রীতির পরিবেশ বজায় রাখার আবেদন করা হয় পুলিশের তরফে। তবে পরবর্তী সময়ে দুই পক্ষই শান্তি বজায় রাখে। মোথাবাড়িতে শান্তি ফেরে।
আগেই মোথাবাড়িতে যেতে চেয়েছিলেন বিরোধী দলনেতা। তবে পুলিশ অনুমতি দেয়নি। শেষমেশ মোথাবাড়িতে যেতে কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন নন্দীগ্রামের বিধায়ক। শুক্রবার মোথাবাড়িতে ‘আক্রান্ত’ বেশ কয়েকটি পরিবারের সঙ্গে দেখা করেন শুভেন্দু অধিকারী। কয়েকটি ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের হাতে আর্থিক অনুদানও তুলে দেন তিনি।
মোথাবাড়িতে বাড়ি বাড়ি গিয়ে আক্রান্ত পুরুষ-মহিলাদের সঙ্গে দেখা করেন শুভেন্দু অধিকারী। মোথাবাড়ির পালপাড়ায় শুভেন্দু বলেন, ১৫ দিন পর এরা মুক্তির স্বাদ পেয়েছেন। বিরোধী দলনেতা রয়েছেন, নরেন্দ্র মোদী রয়েছেন, তাই ভয় নেই, গ্রামবাসীদের আশ্বাস শুভেন্দু অধিকারীর। বিরোধী দলনেতার কাছে কান্নায় ভেঙে পড়লেন এক গ্রামবাসী। মোথাবাড়ি অশান্তিতে আহত হয়েছেন তিনি। দোকানে- বাড়িতে হামলা, টাকা-গয়না লুঠপাটের কথা শুভেন্দুকে জানালেন মোথাবাড়ির হিন্দুরা।
কোর্টের অনুমতিতে মোথাবাড়ির তিনটি জায়গায় পরিদর্শন বিরোধী দলনেতার। শুভেন্দু বলেন, “এখানে সরকার মানুষকে প্রোটেকশন না দিয়ে দাবিয়ে রেখেছে। যে ২৪ জনকে ধরেছে তারা প্রকৃত দোষী নয়। সিসিটিভি ফুটেজ দেখে আসলদের ধরতে হবে। আমরা এনআইএ, সিবিআই দাবি করছি। কেন হিন্দুরা অত্যাচারিত হবে? দেখার দায়িত্ব কার? মোথাবাড়িতে পুলিশ সুপারকে চিঠি দিয়েছি তিনবার, অনুমতি দেয়নি।”
শুভেন্দু আরও বলেন, “হাইকোর্টের অনুমতি নিয়ে সময়ের মধ্যে চলে এসেছি। তিনটি জায়গায় পরিদর্শন সেরেছি। ৬ জনকে নিয়ে আইনি লড়াই করছি। রিষড়া, ডালখোলার মতোই মোথাবাড়িতে শান্তি প্রতিষ্ঠার দায়িত্ব বিরোধী দলনেতার।” শাসকদলের মদতেই মোথাবাড়িতে হিন্দুদের উপর অত্যাচার হচ্ছে বলে অভিযোগ শুভেন্দুর। এদিন মালদহের ইংরেজবাজারের বাধাপুকুর মোড়ে স্থানীয় বিজেপি বিধায়ক শ্রীরূপা মিত্র চৌধুরী কর্মী সমর্থকদের নিয়ে শুভেন্দু অধিকারীকে স্বাগত জানান।