সুমন তরফদার। কলকাতা সারাদিন।
“যাঁরা লড়াই করছেন, যাঁরা মাতৃভূমি রক্ষা করছেন, সেনাবাহিনীর সেই সমস্ত সদস্যদের বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের জন্মদিনে শুভেচ্ছা। আমরা বিশ্বকবির কাছ থেকে সব সময় শিক্ষা গ্রহণ করি।” এভাবেই আজ বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের জন্মদিনে ভারত-পাকিস্তান সীমান্তে উত্তপ্ত পরিস্থিতির মধ্যেই ভারতীয় সেনাকে শুভেচ্ছা জানালেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। একদিকে যখন পাকিস্তান বারবার যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘন করে আক্রমণ চালাচ্ছে এবং ভারতীয় সেনা তার যোগ্য জবাব দিচ্ছে, সেই সময় মুখ্যমন্ত্রীর এই বার্তা তাৎপর্যপূর্ণ।
শুক্রবার কবি গুরু রবীন্দ্রনাথের ১৬৪ তম অনুষ্ঠানে হাজির হন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেখানে কবিগুরুকে সম্মান জানানোর পর বলেন, “যারা সেনা জওয়ান লড়াই করছে, মাতৃভূমি রক্ষা করছে, তাদের শ্রদ্ধা জানাই। সবাই ভালো থাক, দেশ ভালো থাক, মানুষ ভালো থাক।” মঞ্চে কবি গুরুর কবিতার কয়েকটি লাইনও উদ্ধৃত করেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, “রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের থেকে আমারা শিখেছি, ‘নাই নাই ভয়, হবে হবে জয়’।”
পাশাপাশি মুখ্যমন্ত্রী জানান, তিনি মনে করেন রবীন্দ্রনাথের জন্মদিন শুধু তাঁর জন্মদিন নয়। ভাষা সংস্কৃতিরও জন্মদিবস। তাঁকে ছাড়া আমরা কিছু ভাবতে পারি না। মমতা বলেন, “আমাদের সকাল, আমাদের বিকেল, সন্ধ্যা, রাতে, এমনকী দুঃখ, আনন্দে সব কিছুতেই কবিগুরুর থেকে শিক্ষা পাই।” সঙ্গে কিছুটা আক্ষেপের সুরে বলেন, “শুধু এই দিনগুলিতে আমরা একটু বেশি রবীন্দ্রচর্চা করি। যা স্বাভাবিক। কিন্তু অন্যদিন গুলিতে এই চর্চার কদর কমিয়ে দিয়েছি।” আরও বলেন, “প্রতিটি রাজ্যের কিছু সংস্কৃতি, ভাষা আছে। নিজের সংস্কৃতি, ঐতিহ্য, ভাষা সব নিয়ে চলা উচিত। একদিন নয়, বাকিদিনগুলিতেও যেন আপন করি।” অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী ছাড়া উপস্থিত ছিলেন মুখ্যসচিব, স্বরাষ্ট্রসচিব, কলকাতার নগরপাল-সহ একাধিক কর্তা।

এরপর অনুষ্ঠানে একের পর এক বিশিষ্ট সংগীত শিল্পীরা রবীন্দ্রসংগীত পরিবেশন করেন। এদিন মুখ্যমন্ত্রী রবীন্দ্র সংগীত পরিবেশন করেন। তাকে যোগ্য সঙ্গত দেন মন্ত্রী ইন্দ্রনীল সেন।
এরপর একে একে সংগীত পরিবেশন করেন রুপঙ্কর, শ্রীরাধা বন্দোপাধ্যায়, স্বাগতালক্ষ্মী দাশগুপ্ত, নচিকেতা, রাঘব, শিবাজী চট্টোপাধ্যায় এবং অরুন্ধতী হোম চৌধুরী, শান্তনু রায়চৌধুরী প্রমূখ। অনুষ্ঠানের শেষে মুখ্যমন্ত্রী ‘আলোকের এই ঝর্ণাধারায় ধুইয়ে দাও’ গানটি ইন্দ্রনীলের সঙ্গে যৌথভাবে পরিবেশন করেন।