ব্রেকিং
  • Home /
  • পশ্চিমবঙ্গ /
  • SC orders DA : রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের ডিএ মামলায় চাপে মমতা, ২৫ শতাংশ ডিএ দিতেই হবে নবান্নকে, চার সপ্তাহের সময় বেঁধে দিল সুপ্রিম কোর্ট

SC orders DA : রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের ডিএ মামলায় চাপে মমতা, ২৫ শতাংশ ডিএ দিতেই হবে নবান্নকে, চার সপ্তাহের সময় বেঁধে দিল সুপ্রিম কোর্ট

সুমন তরফদার। কলকাতা সারাদিন। রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের অবিলম্বে ২৫ শতাংশ মহার্ঘ ভাতা (ডিএ) দেওয়ার নির্দেশ দিল সুপ্রিম কোর্ট। শুক্রবার সুপ্রিম কোর্টে ডিএ মামলার শুনানি চলছিল। সেই মামলার শুনানি চলাকালীন বিচারপতি সঞ্জয় কারোল রাজ্য সরকারকে আপাতত রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের ৫০ শতাংশ....

SC orders DA : রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের ডিএ মামলায় চাপে মমতা, ২৫ শতাংশ ডিএ দিতেই হবে নবান্নকে, চার সপ্তাহের সময় বেঁধে দিল সুপ্রিম কোর্ট

  • Home /
  • পশ্চিমবঙ্গ /
  • SC orders DA : রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের ডিএ মামলায় চাপে মমতা, ২৫ শতাংশ ডিএ দিতেই হবে নবান্নকে, চার সপ্তাহের সময় বেঁধে দিল সুপ্রিম কোর্ট

সুমন তরফদার। কলকাতা সারাদিন। রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের অবিলম্বে ২৫ শতাংশ মহার্ঘ ভাতা (ডিএ) দেওয়ার নির্দেশ দিল....

Facebook
Twitter
LinkedIn
Email
WhatsApp
X
Threads
Telegram

আরও পড়ুন

সুমন তরফদার। কলকাতা সারাদিন।

রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের অবিলম্বে ২৫ শতাংশ মহার্ঘ ভাতা (ডিএ) দেওয়ার নির্দেশ দিল সুপ্রিম কোর্ট। শুক্রবার সুপ্রিম কোর্টে ডিএ মামলার শুনানি চলছিল। সেই মামলার শুনানি চলাকালীন বিচারপতি সঞ্জয় কারোল রাজ্য সরকারকে আপাতত রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের ৫০ শতাংশ মহার্ঘ ভাতা দেওয়ার নির্দেশ দেন। কারণ, নিম্ন আদালত, ট্রাইব্যুনাল এবং কলকাতা হাইকোর্ট – এই তিনটি আদালতই রাজ্য সরকারের ডিএ বৃদ্ধির বিষয়ে রায় দিয়েছে। যেহেতু এই বিষয়টি দীর্ঘ সময় ধরে চলবে, তাই অন্তর্বর্তীকালীন ব্যবস্থা হিসেবে ৫০ শতাংশ হারে ডিএ দেওয়া উচিত।
জবাবে রাজ্যের আইনজীবী অভিষেক মনু সিংভি বলেন, ‘৫০ শতাংশ ডিএ মেটানো সম্ভব নয়। তাতে আর্থিকভাবে রাজ্যের কোমর ভেঙে যাবে।” বিচারপতি পালটা বলেন, “আপনাদেরই কর্মচারি। অসুবিধা হওয়ার কথা নয়।”

রাজ্যের তরফে যুক্তি দেখানো হয়, “ডিএ সরকারি কর্মীদের সাংবিধানিক অধিকার নয়।” সুপ্রিম কোর্টের পালটা যুক্তি, “মহার্ঘ্য ভাতা সাংবিধানিক অধিকার নয় ঠিকই। কিন্তু তা বলে দিনের পর দিন টাকা না দেওয়াটাও কাজের কথা নয়।” এরপর রাজ্যের আর্থিক দিক এবং সরকারি কর্মীদের পরিস্থিতি বিবেচনা করে ২৫ শতাংশ বকেয়া ডিএ মিটিয়ে দেওয়ার অন্তর্বর্তী নির্দেশ দেয় শীর্ষ আদালত। সুপ্রিম কোর্টের পর্যবেক্ষণ, হাই কোর্টের পর্যবেক্ষণে ভুল নেই। রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের যে পরিমাণ বকেয়া মহার্ঘভাতা রয়েছে, তার মধ্যে ২৫ শতাংশ দিয়ে দিতে চার সপ্তাহের হবে। পরবর্তী শুনানিতে বাকিটা দেখা যাবে।” মামলার পরবর্তী শুনানি আগস্ট মাসে।

বর্তমানে রাজ্য সরকারি কর্মচারীরা ১৮ শতাংশ হারে ডিএ পান। তাদের ডিএ ছিল ১৪ শতাংশ। এবার বাজেটে ডিএতে আরও ৪ শতাংশ বৃদ্ধির ঘোষণা করা হয়েছে। ১ এপ্রিল থেকে এটি কার্যকর করা হয়েছে। তবে এর পরেও, কেন্দ্রীয় সরকারি কর্মচারীদের তুলনায় রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের ডিএতে ৩৫ শতাংশের পার্থক্য রয়েছে। মামলাকারীদের আইনজীবী ফিরদৌস শামিম বলেন, “১৯৮২-কে বেস ইয়ার ধরে অল ইন্ডিয়া কনজিউমার প্রাইস ইনডেক্স অনুযায়ী ডিএ হিসেব করা হয়েছে। ২০০৯-এর রোপা রুলস অনুযায়ী ২০০৬ থেকে ডিএ দেওয়ার কথা ছিল, কিন্তু রাজ্য তা মানেনি।”

পশ্চিমবঙ্গের সরকারি কর্মচারীরা বর্তমানে ১৮ শতাংশ হারে ডিএ পান। সম্প্রতি, রাজ্য সরকার ৪ শতাংশ ডিএ বাড়ানোর ঘোষণা করেছিল, যা গত ১ এপ্রিল থেকে কার্যকর হয়েছে। এই বৃদ্ধির পর ডিএ ১৪ শতাংশ থেকে বেড়ে ১৮ শতাংশ হয়েছে। যদিও কেন্দ্রীয় সরকারি কর্মচারীরা বর্তমানে ৫৫ শতাংশ হারে ডিএ পান, ফলে এ রাজ্যের কর্মীদের সঙ্গে কেন্দ্রের মহার্ঘভাতার ফারাক এখনও ৩৭ শতাংশ।

এই গুরুত্বপূর্ণ নির্দেশের পর রাজ্য সরকারের অর্থ প্রতিমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য জানিয়েছেন যে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশিকা হাতে পাওয়ার পরই তিনি এ বিষয়ে তাঁর বক্তব্য জানাবেন। আজ ডিএ মামলার সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ প্রসঙ্গে জানতে চাওয়া হলে চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য বলেন, “ডিএ মামলার সুপ্রিম নির্দেশিকা এখনও হাতে পাইনি। পাওয়ার পর যা বলার বলব।”

সুপ্রিম কোর্ট ২৫% ডিএ মিটিয়ে দেওয়ার নির্দেশ দেওয়ার পরে শুক্রবার বিরোধী দলনেতা বলেন, “এই নির্দেশ পশ্চিমবঙ্গের সমস্ত রাজ্য সরকারি কর্মচারীর জন্য বিশাল জয়, যাঁরা দীর্ঘ দিন ধরে দাম্ভিক এবং নির্দয় রাজ্য সরকারের অবিচারের বিরুদ্ধে লড়াই চালিয়ে গিয়েছেন। মমতা ব্যানার্জি বলেছিলেন, ডিএ কোনও অধিকার নয়। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে সিলমোহর পড়ল যে, ডিএ কর্মচারীদের অধিকার। আশা করব, রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের বছরব্যাপী বঞ্চিত রাখার জন্য নৈতিক দায় নিয়ে মমতা পদত্যাগ করবেন।”

মামলার নির্দেশের পর বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য বলেন, আদালত প্রথমে ৫০ শতাংশ ডিএ দেওয়ার কথা বলেছিল, কিন্তু রাজ্যের আইনজীবী আর্থিক সংকটের কথা বললে আদালত অন্তত ২৫ শতাংশ ডিএ মেটানোর নির্দেশ দেয়। তিনি আরও জানান যে, ডিএ বকেয়া রয়েছে ২০১৬ সালের ১ জানুয়ারি থেকে এবং সেই সময় থেকেই বকেয়া হিসাব করতে হবে। এই রায়ের ফলে রাজ্য সরকারি কর্মীরা তাঁদের অধিকারের আংশিক স্বীকৃতি পেলেন বলেও তিনি মন্তব্য করেন।

সুপ্রিম কোর্টের এই নির্দেশের পর রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের সংগ্রামী যৌথ মঞ্চের অন্যতম নেতা নির্ঝর কুণ্ডু তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন। তিনি বলেন, “মুখ্যমন্ত্রী বলেছিলেন ডিএ দয়ার দান, সরকার মনে করলে দেবে, না মনে করলে দেবে না। সুপ্রিম কোর্টে সরকার বড় থাপ্পড় খেয়েছে।” তিনি আরও বলেন, “সরকার মনে করছিল নিজেদের মর্জি মতো চলবে, ডিএ দেবে না। সুপ্রিম কোর্ট আজ ২৫ শতাংশ ডিএ দিতে নির্দেশ দিয়ে এটা পরিষ্কার করে দিয়েছে ডিএ সরকারি কর্মচারীদের অধিকার। সরকারের বোধোদয় হয় কি হয় না সেটা দেখার।”

নির্ঝর কুণ্ডু অভিযোগ করেন, সরকার ডিএ দেয়নি বলেই এতটা বকেয়া রয়েছে এবং এখন বলছে দেওয়ার ক্ষমতা নেই। তিনি প্রশ্ন তোলেন, যেখানে কেন্দ্রীয় সরকার এবং অন্য রাজ্য সরকারগুলি ডিএ দিতে পারছে, তখন পশ্চিমবঙ্গ সরকার কেন পারছে না। তিনি আরও বলেন, “সরকারি কর্মচারীদে দোষী করে উনি (মুখ্যমন্ত্রী) সাধারণ মানুষের কাছে ভাল থাকার চেষ্টা করে গিয়েছেন। আজকের নির্দেশর মাধ্যমে এটা স্বীকৃতি পেল যে সমস্ত সরকারি কর্মচারীর জন্য ডিএ পাওয়া অধিকার। সরকারের কাছে তো এটা লজ্জার।”

আজকের খবর