রাহুল সিংহ মজুমদার। কলকাতা সারাদিন।
বেশ কিছু বাংলা ছবিতে কাজ করলেও বিয়ের পর ঠিকানা বদলেছে। মাত্র চারদিন আগেই সোশ্যাল মিডিয়ায় কুনাল বর্মার (স্বামী) সঙ্গে একটি ভিডিওবার্তায় জানান পারিবারিক এক বন্ধু তাঁদের সব সঞ্চয় হাতিয়ে নিঃস্ব করে দিয়েছেন। তাঁদের দৈনন্দিন জীবন চালানো কষ্টকর হয়ে পড়েছে।
এই ঘটনার জেরে লাইমলাইটে ছিলেন পূজা। দম্পতির অভিযোগের কয়েকদিন পরই তাঁদের বিরুদ্ধে বিস্ফোরক পোস্ট ব্যোমকেশ ও দুর্গরহস্য, সোনার পাহাড় খ্যাত প্রযোজক শ্যাম সুন্দর দে।
সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রযোজকের স্ত্রী মালবিকা দে একটি লম্বা-চওড়া পোস্ট শেয়ার করেন। সেখানে শুধু অভিযোগই নয়, সঙ্গে রয়েছে যথাযথ প্রমাণও। যা দেখে নেটনাগরিকদের চক্ষু চড়কগাছ।
পূজা ও কুনালের দ্বারা সংঘটিত এক ভয়ংকর অভিজ্ঞতার কথা রয়েছে। মালবিকা জানাচ্ছেন, তাঁর স্বামী প্রযোজক শ্যাম সুন্দর দে যিনি ৬০টির বেশি ছবির প্রযোজক ও নির্মাতা তাঁকে পূজা বন্দ্যোপাধ্যায় ও কুনাল বর্মা অপহরণ করে অর্থ আদায়ের চেষ্টা করে।

পূজা-কুনালকে সঙ্গ দিয়েছেন তাঁদের সহযোগী পীযুষ কোঠারী। শুধু অপহরণ করে আটকেই রাখেননি, সঙ্গে চতলেছে বেধরক মারধরও। ব্যবসায়িক সফরে গোয়ায় থাকাকালীন প্রযোজক একটি ভাড়া করা গাড়িতে ছিলেন। সেই সময় আচমকা পূজা আর কুনাল তাঁর গাড়ি আটকে নিজেদের গাড়িতে তুলে নেন। ৬৪,০০,০০০ টাকা দাবি করে বলেন যদি এই পরিমান অর্থ না দেন তাহলে মাদক মামলায় ফাঁসিয়ে দেবেন। সেই মুহূর্তে ২৩ লাখের বেশি দেওয়া সম্ভব হয়নি।

বিতর্কের কেন্দ্রে অভিনেত্রী পূজা বন্দ্যোপাধ্যায়৷ অভিযোগকারিণী নিজেই এ বার অভিযুক্ত৷ তাঁর বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ এনেছেন প্রযোজক শ্যামসুন্দর দে-এর স্ত্রী মালবিকা৷
https://www.facebook.com/share/p/1DipWf14t2/
তিনি সমাজমাধ্যমে জানিয়েছেন, গোয়াতে তাঁর স্বামীকে অপহরণ করেছিলেন পূজা ও তাঁর স্বামী কুনাল। তিনি আরও বলেন, FIR দায়ের হয়েছে পূজা বন্দ্যোপাধ্যায়, কুণাল বর্মা ও পীযূষ কোঠারির বিরুদ্ধে। তিনি আরও জানান,আপাতত উত্তর গোয়া এসপি-র নেতৃত্বে গোয়া পুলিশের সহযোগিতায় তাঁর স্বামী নিরাপদে উদ্ধার হয়েছেন।

মালবিকা তাঁর পোস্টে লিখেছেন, ‘‘ব্যবসায়িক সফরে গোয়ায় থাকাকালীন, শ্যাম যখন একটি ভাড়ার গাড়ি চালাচ্ছিলেন, তখন হঠাৎ পূজা ব্যানার্জী নেতৃত্বাধীন দল তাঁর পথরোধ করে এবং তাঁকে একটি অজানা স্থানে জোর করে নিয়ে যায়।’’ তাঁর আরও অভিযোগ, সেখানে, শ্যামকে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত ও মানসিকভাবে নির্যাতন করা হয়৷ হুমকি দেওয়া হয় যে প্রায় ৬৪,০০,০০০ টাকা না দিলে মাদক মামলায় জড়িয়ে দেওয়া হবে।
চরম ভয়ের মধ্যে ও নজরদারির মাঝে, শ্যাম ₹২৩,০০,০০০ টাকা পরিশোধ করেন—যার মধ্যে কলকাতায় পূজার সহকারী মুনমুনের কাছে নগদ অর্থ এবং পূজা ও কুণালের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে RTGS ট্রান্সফার রয়েছে। তাঁরা সমস্ত পেমেন্ট রসিদ ও লেনদেনের রেকর্ড সংরক্ষণ করেছেন বলে জানান মালবিকা। তাঁর দীর্ঘ পোস্টে তিনি আরও লিখেছেন, ‘‘এই ঘটনা শুধুই একটি গুরুতর অপরাধ নয়, এটি একজন বন্ধুর প্রতি বিশ্বাসঘাতকতা ও বিশ্বাস ভঙ্গ। শ্যামের উপর শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনের পাশাপাশি, আমাদের পুরো পরিবার এই ঘটনার ফলে গভীর মানসিক ক্ষতির সম্মুখীন। আমরা সম্পূর্ণ আইনি পথে বিষয়টি মোকাবিলা করছি এবং বিচার ব্যবস্থার ওপর আমাদের পূর্ণ আস্থা রয়েছে। আমি সকল সৃজনশীল সমাজের সদস্যদের সতর্ক থাকার আহ্বান জানাই।’’
এই প্রসঙ্গে পূজা বা তাঁর স্বামীর কোনও বক্তব্য এখনও জানা যায়নি৷ ফোন যোগাযোগ করা হলেযো কিছু বলতে রাজি হননি পূজা। কিছু দিন আগেই সমাজমাধ্যমের পাতায় একটি ভিডিয়ো পোস্ট করেন তিনি। যেখানে দেখা গিয়েছে চোখমুখ সব লাল। হাউ হাউ করে কাঁদছেন অভিনেত্রী। অভিযোগ, সব খুইয়েছেন নায়িকা। পূজা জানান, তাঁদের সব টাকা খোয়া গিয়েছে। তিন বছর ধরে বন্ধুত্ব ছিল এক জনের সঙ্গে। প্রায় পরিবারের মতোই ছিলেন তাঁরা। সেই বন্ধুই প্রতারণা করেছেন।

এক সময় হিন্দি টেলিভিশনের জনপ্রিয় মুখ ছিলেন পূজা। টলিউডে তিনি ছিলেন দেব, সোহমের নায়িকা ছিলেন। যে ক’টি ছবি করেছেন, সবই কমবেশি বক্সঅফিস সফল। এমন ঘটনার পর অভিনেত্রী দর্শকদের কাছে সাহায্যের আবেদন জানান।

এই কঠিন সময়ে তাঁদের পাশে থাকার অনুরোধ করেন। তাঁদের কাজ দেখার অনুরোধ করেন পূজার স্বামী কুণালও। যদিও পূজা বা কুণাল কেউই সেই বন্ধুর নাম প্রকাশ্যে আনেননি। কত টাকার প্রতারণা হয়েছে, তাও জানাননি স্পষ্ট করে।