প্রিয়াঙ্কা মান্না। কলকাতা সারাদিন।
স্ট্রোক একটি গুরুতর চিকিৎসাজনিত সমস্যা যেখানে মস্তিষ্কে আঘাত ঘটে। এটি তখন ঘটে যখন মস্তিষ্কে রক্ত প্রবাহ ব্যাহত হয়, যার ফলে মস্তিষ্কের কোষগুলি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। সময়মতো চিকিৎসা না করা হলে এই অবস্থা প্রাণঘাতী হয়ে উঠতে পারে। স্ট্রোক একটি বৈশ্বিক সমস্যা। কিছু স্বাস্থ্য প্রতিবেদন অনুযায়ী, বিশ্বজুড়ে প্রতি ১ লক্ষ মানুষের মধ্যে প্রায় ১ লক্ষ স্ট্রোকে আক্রান্ত হন এবং এটি মৃত্যুর দ্বিতীয় প্রধান কারণ।
স্ট্রোকের ঘটনার বৃদ্ধি পাওয়ার কারণগুলির মধ্যে এই রোগ সম্পর্কে সচেতনতার অভাব, ডায়াবেটিস, কোলেস্টেরলের সমস্যা ইত্যাদি অন্তর্ভুক্ত। আসুন স্ট্রোক সম্পর্কে বিস্তারিত জানি।
স্ট্রোক কী?
স্ট্রোক মস্তিষ্কে ঘটে এমন একটি আক্রমণ, যেখানে মস্তিষ্কের কোষগুলি রক্ত এবং অক্সিজেনের অপর্যাপ্ত সরবরাহের কারণে মারা যায়। এই অবস্থাটি একজন ব্যক্তির প্রাণ কেড়ে নিতে পারে। ভারতে প্রতি ১ লক্ষ মানুষের মধ্যে স্ট্রোকের ঘটনা ১১৯ থেকে ১৪৫। রিপোর্ট অনুযায়ী, ভারতে প্রতি ৪০ সেকেন্ডে একজন ব্যক্তি স্ট্রোকে আক্রান্ত হন।
স্ট্রোকের ধরন:
ইস্কেমিক স্ট্রোক: এই ধরনের স্ট্রোকে মস্তিষ্কের রক্তনালীতে ব্লকেজ ঘটে। এটি স্ট্রোকের সবচেয়ে সাধারণ প্রকার।
হেমোরেজিক স্ট্রোক: এই ধরনের স্ট্রোকে মস্তিষ্কের রক্তনালী ফেটে রক্তপাত হয়। সাধারণত এটি উচ্চ রক্তচাপ এবং মানসিক চাপের কারণে ঘটে।
টিআইএ (ট্রান্সিয়েন্ট ইস্কেমিক অ্যাটাক):
এই স্ট্রোকের ক্ষেত্রে কিছু সময়ের জন্য মস্তিষ্কের রক্ত প্রবাহ বন্ধ হয়ে যায়। এটি ভবিষ্যৎ স্ট্রোকের সতর্কতা দিতে পারে।
স্ট্রোকের প্রাথমিক লক্ষণ:
দুর্বলতা অনুভব করা।
অনুভূতিতে সমস্যা।
মুখ একপাশে নত হওয়া।
হাঁটতে বা হাত তুলতে অসুবিধা।
কথা বলতে অস্পষ্ট হওয়া।
গুরুতর মাথাব্যথা, দুশ্চিন্তা বা শরীরের ভারসাম্য রাখতে অসুবিধা।
যাদের স্ট্রোকের ঝুঁকি বেশি:
স্ট্রোকের ঘটনা বৃদ্ধি পাওয়ার একটি কারণ আমাদের দুর্বল জীবনযাত্রা। খারাপ অভ্যাস যেমন ধূমপান, মদ্যপান, কম শারীরিক কাজকর্ম, স্থূলতা এবং অতিরিক্ত মানসিক চাপ স্ট্রোকের ঝুঁকি বাড়ায়।
স্ট্রোক প্রতিরোধের উপায়:
কম চর্বি এবং কম লবণযুক্ত স্বাস্থ্যকর খাবার খান।
প্রতিদিন কমপক্ষে ৩০ মিনিট শারীরিক ব্যায়াম করুন।
ধূমপান এবং মদ্যপান পরিহার করুন।
যোগ এবং ধ্যানের মাধ্যমে মানসিক চাপ কমান।
রক্তচাপ, রক্তে চিনি এবং কোলেস্টেরল নিয়মিত পরীক্ষা করুন।