রাহুল সিংহ মজুমদার। কলকাতা সারাদিন।
কলকাতা পুলিশের তৎপরতায় ফাঁস হয়ে গেলেও কলকাতার গ্ল্যামার জগতের অন্ধকারময় এক দিক। গ্ল্যামার ইন্ডাস্ট্রির হাতছানিতে সহজেই মডেল হওয়ার লোভে যেভাবে মেয়েরা যাকে তাকে বিশ্বাস করে মডেলিং ফটোশুটের জন্য চলে যাচ্ছেন বিভিন্ন জায়গায়, তাদের জন্যও রীতিমতো শিক্ষনীয়।
প্রক্রিয়াটা সরল। অল্পবয়সী মহিলাদের নিশানা করা। তাঁদের মডেলিং করার প্রস্তাব দেওয়া, তারপর মাদকদ্রব্য খাইয়ে বেহুঁশ অবস্থায় তাঁদের অশ্লীল ভিডিও তোলা, এবং সেই ভিডিও দিয়ে তাঁদের ব্ল্যাকমেল করা। আরও ভয়ঙ্কর, সেইসব ভিডিও বিক্রি হয়ে যেত দেশ-বিদেশের বিভিন্ন অ্যাপে আপলোড করার উদ্দেশ্যে।
এই মর্মে বিধাননগর সাইবার ক্রাইম থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছিলেন এক মহিলা। তাঁর চিহ্নিত করা পাঁচজনকে হাতেনাতে গ্রেফতার করা হয় নিউটাউনের একটি হোটেল থেকে, যেখানে তারা ছক কষছিল তাদের পরবর্তী ‘শুটিং’-এর।
বাজেয়াপ্ত হয় বেশ কিছু বৈদ্যুতিক গ্যাজেট, যৌন উদ্দীপনা বাড়ানোর কিছু ডিভাইস, এবং একাধিক ওষুধ। ছয় নম্বর অভিযুক্ত গ্রেফতার হয় হাওড়া স্টেশন এলাকা থেকে। এদের সকলেরই প্রধান কার্যালয় ছিল টালিগঞ্জ এলাকায় একটি ‘অফিস’।
২০২০ সালের এই মামলায় বিচারপর্ব শেষ হয়েছে সম্প্রতি। বারাসাতের অ্যাডিশনাল জেলা জজের সপ্তম এজলাসে দোষী সাব্যস্ত হয়েছে ছয় অভিযুক্ত – শুভাঞ্জন রায় (৩৫), মিল্টন ঘোষ (২৭), উমেশচন্দ্র নাথ (২৬), অভিজিৎ বসাক (৩৩), দেবজ্যোতি সরকার (২৬), এবং প্রকাশ দাস (২৭)।
মামলার রায়ে ভারতীয় দণ্ডবিধি এবং আইটি আইনের বিভিন্ন ধারায় ১০ বছরের সশ্রম কারাদণ্ডের আদেশ দিয়েছে আদালত, সঙ্গে ৫০ হাজার টাকা থেকে ১ লক্ষ টাকার আর্থিক জরিমানা, অনাদায়ে আরও কয়েকমাসের কারাদণ্ড।