বাংলা টেলিভিশনের পরিচিত মুখ, স্টার জলসার ধারাবাহিকে অভিনয় করা অভিনেত্রী সুমি হর চৌধুরীকে মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে পূর্ব বর্ধমানের রাস্তায় উদ্ভ্রান্ত অবস্থায় ঘুরতে দেখা গেল। এমন দৃশ্য দেখে স্তম্ভিত হয়ে যান খণ্ডঘোষ থানার আমিলা বাজার এলাকার মানুষজন।
সোমবার দুপুরে বর্ধমান-আরামবাগ রাজ্য সড়কে এক মাঝবয়সী মহিলাকে অদ্ভুত ভঙ্গিতে হেঁটে যেতে দেখেন স্থানীয়রা। তাঁর পরনে ছিল হাফ প্যান্ট, ফুলহাতা জামা ও হাওয়াই চটি। আচরণে স্পষ্ট ছিল মানসিক অস্থিরতা। বৃষ্টি শুরু হলে তিনি আশ্রয় নেন আমিলা বাজারের বিশ্রামাগারে।
সেখানেই এলাকার মানুষজনের কৌতূহলে জানা যায় তাঁর পরিচয়—তিনি নিজেই বলেন, “আমি সুমি হর চৌধুরী, বাংলা টিভি সিরিয়ালের অভিনেত্রী।” প্রথমে বিষয়টি বিশ্বাসযোগ্য মনে না হলেও, স্থানীয়রা পরে সোশ্যাল মিডিয়া ঘেঁটে নিশ্চিত হন, তিনি মিথ্যে বলছেন না। বিভিন্ন ধারাবাহিকে তাঁর অভিনয়ের ছবিও মেলে।
কিন্তু কীভাবে এই পরিস্থিতিতে পৌঁছলেন অভিনেত্রী? কেন তিনি ভবঘুরে অবস্থায় রাজ্য সড়কে ঘুরছিলেন? এসব প্রশ্নের উত্তর সঠিকভাবে দিতে পারেননি তিনি। কখনও বলেন তাঁর বাড়ি কলকাতায়, আবার কখনও বলেন তিনি বোলপুর থেকে এসেছেন। অসংলগ্ন ও বিভ্রান্তিকর কথাবার্তায় বোঝা যায়, তিনি মানসিকভাবে সুস্থ নন।
স্থানীয়রা তৎক্ষণাৎ পুলিশে খবর দেন। খণ্ডঘোষ থানার পুলিশ এসে তাঁকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায়। পরে বর্ধমান দক্ষিণ মহকুমা পুলিশ আধিকারিক অভিষেক মণ্ডল জানান, “অভিনেত্রীকে একটি হোমে পাঠানো হয়েছে। পাশাপাশি কলকাতার বেহালা থানাতেও বিষয়টি জানানো হয়েছে। তাঁর পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা চলছে।”
স্থানীয়দের মতে, একজন সাংস্কৃতিক শিল্পী, যিনি এক সময় দর্শকদের মন জয় করেছিলেন, তাঁর এই পরিণতি অত্যন্ত বেদনাদায়ক। তাঁরা প্রশাসনের কাছে অনুরোধ করেছেন, দ্রুত পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করে তাঁকে উপযুক্ত চিকিৎসা ও সাহায্য দেওয়া হোক।
এই ঘটনা ফের একবার চোখে আঙুল দিয়ে দেখাল, মানসিক স্বাস্থ্যের যত্ন নেওয়া কতটা প্রয়োজনীয়। শিল্পীরা আমাদের বিনোদন জগতের মুখ, কিন্তু তাঁদের ব্যক্তিগত সংগ্রাম অনেক সময় লোকচক্ষুর আড়ালেই থেকে যায়।