সুহানা বিশ্বাস। কলকাতা সারাদিন।
ভাঙড়ের তৃণমূল নেতা রজ্জাক খুনের তদন্ত নেমে আরও একজনকে গ্রেফতার করল পুলিশ। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় আরও একজন কুখ্যাত দুষ্কৃতীকে গ্রেফতার করা হয়েছে বলে পুলিশ সূত্রে খবর। উত্তর কাশীপুর থানার নাংলা পালপুর এলাকায় একটি মেছোভেড়ি থেকে তাঁকে গ্রেফতার করা হয়। এর ফলে, এই মামলায় এখনও পর্যন্ত তথাকথিত ‘মাস্টারমাইন্ড’ মোফাজ্জল-সহ মোট ৬ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
পুলিশ জানিয়েছে, ধৃতের নাম জাকিরুদ্দিন গাজী ওরফে জাকির মোল্লা। তাঁর বাড়ি ভাঙড়ের চন্দনেশ্বর থানার মাধবপুরের নারায়নপুর এলাকায়। তদন্তকারীরা জানিয়েছেন, ইতিমধ্যে রজ্জাক খুনের ঘটনায় ‘মূল চক্রী’ মোফাজ্জেল সহ পাঁচজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ জানতে পারে জাকিরের নাম। পুলিশ বিভিন্ন জায়গায় অভিযান চালিয়েও জাকিরের খোঁজ পাচ্ছিল না। পরে তার মোবাইল টাওয়ারের লোকেশন দেখে ও আত্মীয়দের জেরা করে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় তাকে গ্রেফতার করা হয়। তদন্তে নেমে পুলিশ আরও জানতে পারে, ধৃত জাকিরুদ্দিনের আগে ডাকাতির অভিযোগে ধরা পড়ার পর সাত বছর জেল খাটে। তারপরও আরও একবার কলকাতার ট্যাংরা এলাকায় একটি অভিজাত আবাসনে ডাকাতির ঘটনায় সাত বছর জেল খাটে। রজ্জাক খুনের জন্য এই কুখ্যাত ডাকাতকে টাকার বিনিময় ভাড়া করা হয়েছিল। পুলিশি জেরায় ধৃত জানিয়েছে সে রজ্জাক খুনে গুলি করে এবং চপার দিয়ে কোপায়।
গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় ভাঙড়ে খুন হন বিধায়ক শওকত মোল্লার ঘনিষ্ঠ তৃণমূল নেতা রজ্জাক মোল্লা। পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, এই ঘটনায় মূল অভিযুক্ত বা ‘মাস্টারমাইন্ড’ হিসেবে চিহ্নিত মোফাজ্জলকে আগেই গ্রেফতার করা হয়েছিল। তাঁর সূত্র ধরেই আরও অনেক তথ্য উঠে আসছে বলে পুলিশ অনুমান করছে। তবে, ঠিক কী কারণে এই ঘটনা ঘটানো হয়েছিল, এর পেছনে কারা জড়িত এবং তাদের উদ্দেশ্য কী ছিল, তা এখনও স্পষ্ট নয়।
পুলিশ হেফাজতে থাকা অভিযুক্তদের জিজ্ঞাসাবাদ করে ঘটনার মূল ছক উন্মোচনের চেষ্টা চালানো হচ্ছে। ভাঙড়ের এই ঘটনায় স্থানীয় মানুষজন গভীরভাবে উদ্বিগ্ন ছিলেন। একের পর এক গ্রেফতারির ফলে তাদের মধ্যে বিচারের আশা বাড়ছে। পুলিশ জানিয়েছে, তদন্তের স্বার্থে অভিযুক্তদের আরও জেরা করা হবে এবং প্রয়োজনে আরও গ্রেফতারি হতে পারে। স্থানীয়দের দাবি, দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হোক, যাতে ভবিষ্যতে এমন ঘটনার পুনরাবৃত্তি না হয়।