সুষমা পাল মন্ডল। কলকাতা সারাদিন।
অতি বৃষ্টিতে বিপর্যস্ত উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন অঞ্চল এখন ভয়াবহ পরিস্থিতির মুখে। ধুপগুড়ি বিধানসভার গড়িয়ালতারি ও গধেয়ারকুঠি অঞ্চলে বন্যার জেরে বহু মানুষ গৃহহীন ও বিপন্ন অবস্থায় রয়েছেন। এই কঠিন সময়ে রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে সর্বাত্মক সহায়তার বার্তা পৌঁছে দেন মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে ত্রাণ ও পুনর্বাসনের তদারকি করতে রবিবার ধুপগুড়ির দুর্গত এলাকাগুলি পরিদর্শন করেন রাজ্যের মাননীয় মন্ত্রী শ্রী অরূপ বিশ্বাস। তিনি সরেজমিনে দুর্গত মানুষের সঙ্গে কথা বলেন এবং সরকারি ত্রাণ ব্যবস্থার অগ্রগতি পর্যালোচনা করেন।
দুর্গতদের সঙ্গে কথোপকথনের সময় অরূপ বিশ্বাসের মোবাইল ফোনে স্পিকার ফোনে যুক্ত হন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজে। তিনি দুর্গত মানুষদের সঙ্গে সরাসরি কথা বলে তাঁদের মনোবল জোগান এবং রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে সর্বাত্মক সহায়তার আশ্বাস দেন। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “এই দুঃসময়ে সরকার আপনাদের পাশে রয়েছে। যত দ্রুত সম্ভব ক্ষতিপূরণ ও পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করা হবে।”
মাননীয় মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস দুর্গত এলাকার ত্রাণ শিবিরগুলিতে পৌঁছে থাকার ও খাবারের ব্যবস্থা পর্যালোচনা করেন। তিনি জানান, সরকারের পক্ষ থেকে দুর্গতদের জন্য পর্যাপ্ত খাদ্য, জামা-কাপড়, শিশুদের জন্য দুধ এবং প্রয়োজনীয় ওষুধ সরবরাহ করা হচ্ছে। প্রতিটি পরিবারকে নিরাপদ স্থানে স্থানান্তরের জন্য প্রশাসন কাজ করছে।
এদিন মন্ত্রীর সঙ্গে ছিলেন শিলিগুড়ির মেয়র গৌতম দেব, স্থানীয় বিধায়ক নির্মল চন্দ্র রায় এবং শিলিগুড়ির ডেপুটি মেয়র রঞ্জন সরকার। তাঁরা যৌথভাবে ত্রাণ কার্যক্রমের অগ্রগতি পর্যালোচনা করেন এবং ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলির পাশে থাকার আশ্বাস দেন।
মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস বলেন, “মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে আমরা সবাই একসঙ্গে কাজ করছি। মানুষের দুঃখে পাশে দাঁড়ানোই এখন একমাত্র লক্ষ্য। প্রশাসন, স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন এবং স্থানীয় মানুষ মিলেই এই পরিস্থিতি সামলানো হচ্ছে।”
উত্তরবঙ্গের মানুষকে শান্ত থাকতে অনুরোধ জানিয়ে তিনি বলেন, “রাজ্য সরকার ২৪ ঘণ্টা কাজ করছে। ত্রাণ সামগ্রী পৌঁছে যাচ্ছে প্রত্যন্ত এলাকাতেও। কাউকে একা ফেলে রাখা হবে না।”
বর্তমানে উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন জেলায় দুর্যোগ মোকাবিলায় দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। বিপর্যস্ত এলাকায় অতিরিক্ত ত্রাণ শিবির খোলা হয়েছে এবং মেডিকেল টিম মোতায়েন করা হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রাজ্য প্রশাসনকে নির্দেশ দিয়েছেন—যত দ্রুত সম্ভব ক্ষতিগ্রস্তদের ঘর পুনর্নির্মাণ ও আর্থিক সাহায্য প্রদান করতে।
সরকারের এই উদ্যোগে মানুষের মধ্যে নতুন আশা জেগেছে। স্থানীয় বাসিন্দারা বলেন, “মন্ত্রী নিজে এসে আমাদের খোঁজ নিয়েছেন, মুখ্যমন্ত্রী ফোনে কথা বলেছেন — এতে মনে হচ্ছে সরকার সত্যিই আমাদের পাশে আছে।”

উত্তরবঙ্গের এই দুর্যোগে মানবিকতার বার্তা ছড়িয়ে পড়েছে সর্বত্র। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের এই সরাসরি তৎপরতা আবারও প্রমাণ করল, তিনি শুধু প্রশাসক নন, মানুষের পাশে দাঁড়ানো এক জননেত্রীও বটে।