রঞ্জন দাস। কলকাতা সারাদিন।
“কেন একশো দিনের টাকা বন্ধ করা হয়েছে? কেন আবাস যোজনার টাকা বন্ধ করা হয়েছে?” এমন প্রশ্ন তুলে রায়দিঘীতে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর দিকে জুতো ছুঁড়লেন স্থানীয় মহিলারা। একইভাবে মন্দির বাজারের পর মথুরাপুর, লালপুরেও বিক্ষোভের মুখে পড়তে হয় বিরোধী দলনেতাকে।
রায়দিঘিতে পুজো উদ্বোধনে যাওয়ার পথে ধুন্ধমার। কেন্দ্রীয় বঞ্চনার অভিযোগে বিরোধী দলনেতাকে গো-ব্যাক স্লোগান দেওয়া হয়। দক্ষিণ ২৪ পরগনার রায়দিঘি ঢোকার মুখে এদিন বিক্ষোভের মুখে পড়েন বিধানসভার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। এমনকী পাথরপ্রতিমায় যাওয়ার পথেও বিক্ষোভ দেখানো হয় তাঁকে। বিরোধী দলনেতার গাড়িতে রীতিমতো চাপড় মেরে প্রতিবাদ জানানো হয়। এ দিন, কালীপুজোর উদ্বোধনে দক্ষিণ ২৪ পরগনার একাধিক জায়গায় যাচ্ছিলেন।
সেই সময় জায়গায়-জায়গায় তাঁকে ঘিরে বিক্ষোভ দেখানো হয়। ছুঁড়ে মারা হয় ছেঁড়া জুতো।
প্ল্যাকার্ড হাতে এগিয়ে আসেন মহিলারাও। প্ল্যাকার্ড হাতে বিক্ষোভ দেখান স্থানীয় মহিলারা। কেন্দ্রীয় বঞ্চনা ও পরিযায়ী ইস্যুতে এদিনের বিক্ষোভ বলে জানিয়েছে বিক্ষোভকারী এক মহিলা। তিনি বলেন, ‘আমরা সাধারণ মানুষ হিসাবে এসেছি। ওঁর কাছে জবাব চাইছি কেন একশো দিনের টাকা বন্ধ করা হয়েছে, কেন আবাস যোজনার টাকা বন্ধ করা হয়েছে?’ মন্দির বাজারের পর মথুরাপুর, লালপুরেও বিক্ষোভের মুখে পড়তে হয় বিরোধী দলনেতাকে।
‘আমি বিজেপি করতে আসিনি। আমি ধর্ম পালন পালন করতে এসেছি। মায়ের দর্শন করতে এসেছি। বাধা দিচ্ছে কারা?’ কালীপুজোর আগের দিন কালীপুজোর উদ্বোধনে গিয়ে রায়দিঘী, পাথরপ্রতিমায় বিক্ষোভের মুখে পড়ে মেজাজ হারালেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। গতকাল রাতেই দার্জিলিংয়ের বিজেপি সাংসদ রাজু বিস্তার কনভয়ে হামলার ঘটনার মাত্র কয়েক ঘন্টার মধ্যেই মন্দিরবাজারে বিক্ষোভের মুখে শুভেন্দু অধিকারী। তাঁর কনভয় লক্ষ্য করে ওঠে ‘জয় বাংলা’ স্লোগান।
ঘটনা প্রসঙ্গে তৃণমূল মুখপাত্র জয়প্রকাশ মজুমদার বলেন, ‘গদ্দার বিজেপি গবীরের মাথার ছাদ, পেটের ভাত কেড়ে নিয়েছে। ১০০ দিনের কাজের ২ লক্ষ কোটি টাকা বকেয়া। বাংলা প্রতিবাদ করতে জানে। সাধারণ মানুষ কেন্দ্রীয় বঞ্চনার প্রতিবাদে এদিনের বিক্ষোভে সামিল হয়েছিলেন।’
যদিও, শুভেন্দু বলেন, ‘এটা একটা প্রীতিপূর্ণ অনুষ্ঠান। সব হিন্দুরা এসেছেন অনুষ্ঠানে। আমি হিন্দু হিসাবে এসেছি। পার্টিতে ভোট দাও একথা বলতে আসিনি। দলের ঝান্ডা নিয়ে আসিনি। আমায় রাস্তার উপর আটকানো চেষ্টা করছে। গাড়িতে ধাক্কা মারছে। গাড়ির সামনে দাঁড়িয়ে পড়ছে। আমি ধর্ম পালন করতে এসেছি। আমি আজ বিজেপি করতে আসিনি। আমি হিন্দু ধর্ম পালন করতে এসেছিলাম। মায়ের দর্শন করতে এসেছি। অনুপ্রবেশকারীরা এখানে প্রবেশ করে গণতন্ত্র বিগড়ে দিচ্ছে। ফলে আমাদের এই জেলায় যাঁরা আপনারা এই জেলার আদিবাসী, অর্থাৎ যাঁরা আপনারা অবিভক্ত এবং বিভক্ত জেলায় বসবাস করতেন, আপনারা নিজেদের ধর্মপালন ও সাংস্কৃতিক মেলবন্ধন সঠিকভাবে করতে পারছেন না। যাঁদের অর্থ রয়েছে, জমি জলের দরে বিক্রি করে সোনারপুর, বারুইপুর, কলকাতায় চলে যেতে বাধ্য হচ্ছেন। কার্যত বাংলাদেশে যে ভাবে হিন্দুদের সংখ্যা কমছে, হিন্দুরা হারিয়ে যাওয়ার পথে। আজ পশ্চিমবঙ্গ তো বটেই, সব থেকে বেশি করে দক্ষিণ ২৪ পরগনায় বেশি করে হচ্ছে। আমি এখনও বলব যে সকল হিন্দুরা তৃণমূল বা সিপিএম করছেন, বলব ভাবুন আপনাদের অবস্থাও প্রবীর মণ্ডলের মতো হবে।’

পাশাপাশি শুভেন্দু অধিকারী অভিযোগ করেন, ‘আমার গাড়িতে ধাক্কা দেওয়া হয়েছে’। মায়ের দর্শন করতে এসেছি বাধা দিচ্ছে কারা?’