দুর্গা পুজোর সময় যখন সবাই নতুন জামা কাপড় পড়ে আনন্দে আত্মহারা তখন মুখে প্লাস্টিক কৌটো আটকে বিধ্বস্ত অবস্থায় ঘুরে বেড়িয়েছে একটি শেয়াল বা গোল্ডেন জ্যাকেল। আট দিন ধরে মুখে প্লাস্টিক কৌটো আটকে থাকার পর সেই গোল্ডেন জ্যাকেলটিকে উদ্ধার করল বাগনানের বন্যপ্রাণ উদ্ধারকারীরা। জানা গেছে
দুর্গা পুজোর বিজয়া দশমীর পর বাগনানের দুই মৎস্য প্রেমী আশিস দাশগুপ্ত ও তাপস দাস বাগনান শ্যামপুর সীমানায় দেওয়ানতলার কাছে দামোদরে মাছ ধরতে গিয়ে লক্ষ্য করেন খালের পাশে প্লাস্টিক জার আটকে বিধ্বস্ত অবস্থায় ঘুরে বেড়াচ্ছে একটি শিয়াল বা গোল্ডেন জ্যাকেল। বিষয়টি জানতে পেরে হাওড়া জেলা যৌথ পরিবেশ মঞ্চের সদস্য চিত্রক প্রামানিক খবর দেন বাগনান ছয়ানি গ্রামের পরিবেশ কর্মী পলাশ প্রধানকে। যদিও ততক্ষণে ওই শেয়ালটি নদীর ধার থেকে অদৃশ্য হয়ে গেছিল। নদীর পাড়ে সেভাবে আর তাকে দেখা যাচ্ছিল না।
এরপর পলাশ প্রধান তার বন্ধুদের নিয়ে নদী ও জলাভূমির ধারে শেয়ালটির খোঁজ করতে থাকে। যদিও তার কোন খোঁজ পাওয়া যায় না। এদিকে প্রায় সাতদিন পর মুখে প্লাস্টিকের কৌটো আটকানো অবস্থায় শেয়ালটি ক্লান্ত শরীরে তিন কিলোমিটার পেরিয়ে ছয়ানি গ্রামে সন্ধ্যার সময় চলে আসে। বিষয়টি পরিবেশ মঞ্চের সদস্য পলাশ প্রধানের নজরে আসতেই প্রাণের রকমের ঝুঁকি নিয়ে সে জমির মধ্যে ঝাপিয়ে পড়ে শেয়াল টিকে ধরে ফেলে এবং একটি নির্মীয়মান গ্যারেজের মধ্যে আটকে খবর দেয় চিত্রক কে।
শেয়ালটির কষ্ট লাঘব করতে রাতেই ঘটনার স্থলে ছুটে আসেন বন্যপ্রাণ উদ্ধারকারী চিত্রক, সুমন্ত দাস ও বন বিভাগের কর্মীরা। পরে পলাশ প্রধান কে নিয়ে শেয়ালটিকে ধরে তার মুখ থেকে প্লাস্টিকের কৌটো খোলা হয়। বন্যপ্রাণ উদ্ধারকারী চিত্রক প্রামানিক জানান
দীর্ঘদিন জল ও খাবার না খেয়ে শেয়াল টি প্রথমে কিছুটা দুর্বল হয়ে পড়েছিল। তার মুখ থেকে প্লাস্টিকের কৌটো খোলার পর তাকে জল ও খাবার খেতে দেওয়া হয়। খাবার দেওয়ার কিছুক্ষণ পর শেয়াল টি সুস্থ হলে, তাকে দামোদর নদীর তীরেই পরিবেশে মুক্ত করে দেওয়া হয়েছে।
চিত্রক জানান আর কিছুদিন এভাবে থাকলে প্রাণীটির মৃত্যু ঘটতো। প্লাস্টিক ও টিনের কৌটো এভাবে যত্রতত্র ফেলে রাখলে বিভিন্ন সময়ে কোনো প্রানীর মুখ আটকে যায়, তাই প্লাস্টিক ও টিনের কৌটো যত্রতত্র ফেলা উচিত নয় বলে মত প্রকাশ করেন বন্যপ্রাণ উদ্ধারকারী চিত্রক প্রামানিক।