সুহানা বিশ্বাস। কলকাতা সারাদিন।
কসবায় তৃণমূল কাউন্সিলর সুশান্ত ঘোষের ওপর হামলার ঘটনার ২৪ ঘণ্টার মধ্যে প্রধান অভিযুক্ত মহম্মদ ইকবালকে পাকড়াও করল কলকাতা পুলিশ। ইতিমধ্যে ইকবালকে লালবাজারে নিয়ে গিয়ে জেরা শুরু করেছেন তদন্তকারীরা। জানা যাচ্ছে, ধৃত যুবরাজ সিংয়ের বয়ানের ভিত্তিতে ইকবালের স্কেচ আঁকা হয়েছিল। সেই সূত্রে একাধিক এলাকায় তল্লাশি চালিয়ে এদিন দুুুপুরে তাকে পাকড়াও করেন কলকাতা পুলিশের গোয়েন্দা দমন শাখার কর্তারা। এদিন দুপুরে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন কলকাতার পুলিশ কমিশনার মনোজ ভার্মাও। তখনও অবশ্য ইকবালের গ্রেফতারির খবর ছিল না। সিপি বলেন, “বিহার থেকে ৩ জন এসেছিল। একজন ট্যাক্সি চালকও ছিল। ২জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বাকিদের খোঁজে তল্লাশি চলছে।”
শুক্রবার রাত ৮টা। কসবায় অ্যাক্রোপলিস মলের অদূরে নিজের বাড়ির বাইরে বসেছিলেন স্থানীয় কাউন্সিলর সুশান্ত ঘোষ। ৮টা নাগাদই তিনি তাঁর সঙ্গে থাকা দুই নিরাপত্তারক্ষীকে ছুটি দিয়ে দেন। তার ১০ মিনিট পরেই বাইকে করে হেলমেট পরিহিত দুই যুবক হাজির হয়। বাইক থেকে নেমে একজন একেবারে সুশান্তর বুকে পিস্তল ঠেকিয়ে গুলি করার চেষ্টা করে।
সুশান্ত ঘোষকে খুনের চেষ্টার অভিযোগে যারা এখনও পর্যন্ত ধরা পড়েছে, তারা ভিনরাজ্যের। পুলিশের জেরায় স্বীকার করেছে, খুনের জন্য আড়াই হাজার টাকা অগ্রিম সুপারি নিয়েছিল। তবে শেষমুহূর্তে বন্দুকের ট্রিগার জ্যাম হয়ে যাওয়ায় গুলি বেরোয়নি বলে কাউন্সিলর প্রাণে রক্ষা পান।
বিহার থেকে সুপারি কিলার নিয়ে এসেছিল তা খতিয়ে দেখছেন তদন্তকারীরা। ঘটনার নেপথ্যে আর কারও হাত রয়েছে কিনা, খতিয়ে দেখা হচ্ছে তাও। পুলিশ জানিয়েছে, ধৃত যুবকের নাম যুবরাজ সিং। তার বাড়ি বিহারের বৈশালিতে। ধরা পড়ার পর সে নিজেকে নাবালক হিসেবেও দাবি করেছিল। তবে ধৃতর আধার কার্ড খতিয়ে দেখে পুলিশ জানিয়েছে, ২০০৬ সালে জন্ম অভিযুক্তর। ফলে ইতিমধ্যে তার ১৮ বছর হয়ে গিয়েছে। এদিন ধৃতকে তোলা হবে আদালতে।
পুলিশ সূত্রের খবর, জেরায় ধৃত যুবরাজ সিং জানিয়েছে, তারা ৩ জন ট্রেনে করে বিহার থেকে হাওড়ায় আসে। সেখান থেকে ট্যাক্সিতে করে খিদিরপুরে। সেখানে একটি বাড়িতে থাকার ব্য়বস্থা করা হয়েছিল। তিলজলায় তাদের সঙ্গে দেখা করে মহম্মদ ইকবাল। এই ইকবালই ১০ হাজার টাকার বিনিময়ে খুনের কন্ট্রাক্ট দিয়েছিল বলে পুলিশের কাছে দাবি করেছে ধৃত যুবরাজ। যুবরাজের পাশাপাশি খুনের আগে অভিযুক্তরা যে ট্যাক্সিটি ব্যবহার করেছিল সেটিও বাজেয়াপ্ত করেছে পুলিশ। গ্রেফতার করা হয়েছে ট্যাক্সি চালক মহম্মদকে।