শোভন গায়েন। কলকাতা সারাদিন।
‘পশ্চিমবঙ্গের মমতাময়ী মুখ্যমন্ত্রী যেখানে দুর্গা পুজা কমিটি গুলিকে ৮৫ হাজার টাকা থেকে এক ধাক্কায় এক লক্ষ দশ হাজার টাকা করে দিতে পারেন। সেখানে গরিব টোটো চালকদের টোটো রেজিস্ট্রেশন এর নামে এককালীন এক হাজার টাকা এবং মাসিক ১০০ টাকা দেওয়ার যে নিয়ম ধার্য হয়েছে তার প্রতিবাদ জানাচ্ছি। মুখ্যমন্ত্রীর কাছে অনুরোধ টোটো রেজিস্ট্রেশন এর নামে এই টাকা নেওয়া বন্ধ করুন।’ এভাবেই বাংলায় বেলাগাম টোটো নিয়ন্ত্রণের জন্য রাজ্য সরকার যে টোটো রেজিস্ট্রেশনের নিয়মাবলী ঘোষণা করেছে তার বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ালেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী।
শুভেন্দু অধিকারীর অভিযোগ, ‘মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রতি মানুষের জনসমর্থন কমে গিয়েছে। তৃণমূলের সভা সমিতিতে আর লোক হয় না। সেই জন্য বিধানসভা নির্বাচন যেহেতু এগিয়ে এসেছে তাই তৃণমূলের সভা সমিতিতে লোক যোগাড় করার জন্য টোটো রেজিস্ট্রেশনের নামে গরিব টোটো চালকদের নিজেদের সভা সমিতিতে নিয়ে গিয়ে ভিড় বাড়ানোর জন্য এই নিয়ম চালু করা হয়েছে।’ মঙ্গলবার সাংবাদিক বৈঠকে শুভেন্দু কটাক্ষ করে জানান, রাজ্যের ৮ লক্ষ কোটি টাকা ঋণ করা সরকার এখন গরিব টোটোচালকদের থেকে টাকা তুলছে। রাজ্যে প্রায় ৫ লক্ষ মানুষ টোটো চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করেন। তাঁদের কাছ থেকে ১,০০০ টাকা করে নেওয়া মানে প্রায় ৫০ কোটি টাকা তোলা।
শুভেন্দুর অভিযোগ, ‘রাজ্যে বিএসসি, এমএ পাশ করা শিক্ষিত যুবকেরা এখন টোটো চালিয়ে সংসার চালাচ্ছেন। রোদ, বৃষ্টি, প্রতিকূল পরিস্থিতিতে তাঁদের দিন কাটে। মুখ্যমন্ত্রী পুজোয় দয়ার সাগর হয়ে ১০,০০০ টাকা অনুদান দেন, কিন্তু একই সরকার টোটোচালকদের কাছ থেকে মাসে টাকা করে আদায় করতে চায়! আমি মুখ্যমন্ত্রীকে বলছি, এই ফি মকুব করুন। টোটোচালকদের বলির পাঁঠা বানাবেন না।’
তাঁর আরও দাবি, রাজ্যে টোটো ব্যবসা এখন ‘মহাজনী নিয়ন্ত্রণে’ চলে গেছে। অনেক প্রভাবশালী ব্যক্তি একসঙ্গে ১০০–১৫০টি টোটো কিনে রাখেন এবং চালকদের কাছ থেকে প্রতিদিন ১০০–২০০ টাকা করে আদায় করেন। এভাবে জমিদারদের যুগ আবার ফিরে এসেছে। তাঁর কথায়, ‘নিরুপায় মানুষ যারা নিজেদের টোটো চালিয়ে সংসার চালাচ্ছেন, তাঁদের রেজিস্ট্রেশন করাবেন না, মাসে মাসে টাকা নেবেন না।’ শেষে বিরোধী দলনেতা সরাসরি হুঁশিয়ারি দেন, ‘টোটোচালকরা এক টাকাও দেবেন না। আমরা বিজেপি তাঁদের পাশে আছি।’
এর পাশাপাশি শুভেন্দু অধিকারীর দাবি, ‘পশ্চিমবঙ্গে এখন মুসলিম নাগরিকরাও আর তৃণমূলকে সমর্থন করছেন না। হায়দ্রাবাদের সাংসদ আসাদুদ্দিন ওয়াইসি এবং বাংলায় পীরজাদার দলের সঙ্গেই বেশি মুসলিমরা সমর্থন জানাচ্ছেন।’