শোভন গায়েন। কলকাতা সারাদিন।
‘অনেককে দিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে মুর্শিদাবাদে তৃণমূলকে আনতে পারেনি। আমি মুর্শিদাবাদকে তৃণমূলময় করে দিয়েছিলাম।’ তৃণমূলে থাকাকালীন কিভাবে তিনি মুর্শিদাবাদে তৃণমূলকে ক্ষমতায় এনেছিলেন সেই স্মৃতির কথা মনে করিয়ে দিলেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা তথা বিজেপি বিধায়ক শুভেন্দু অধিকারী। এর পাশাপাশি স্পষ্ট ভাষায় জানিয়ে দিলেন, হুমায়ুন কবীর নতুন দল গড়লে তৃণমূলের ক্ষতি হবে।
কীভাবে তিনি মুর্শিদাবাদে তৃণমূলের সংগঠন বিস্তার করেছিলেন তার বিশদ ব্যাখ্যা করে শুভেন্দু অধিকারী বলেন, ‘মুর্শিদাবাদ জেলায় তৃণমূল কংগ্রেস ছিল না। ১৯৯৮ সালে তৃণমূলের প্রতিষ্ঠা হয়। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মুকুল রায়, পূর্ণেন্দু বসু, ইন্দ্রনীল সেন অনেককে দিয়ে এক্সপেরিমেন্ট করেও মুর্শিদাবাদে তৃণমূলকে আনতে পারেননি। আমাকে ২০০৫ থেকে ইন্দ্রনীলের সহযোগী করেছিলেন। ২০১৬ থেকে পূর্ণ দায়িত্ব দিয়েছিলেন। আমি গোটা মুর্শিদাবাদ জেলাকে তৃণমূলময় করে দিয়েছিলাম। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কোনও ক্রেডিট নেই।’ আর শুভেন্দুর এ মন্তব্যের প্রেক্ষিতে শুভেন্দুকে তীব্র আক্রমণ করে কংগ্রেস নেতা সৌম্য আইচ রায় বলেন, ‘ওনার মনে হয় তৃণমূলের প্রতি প্রেমটা আবার জেগে উঠেছে। তৃণমূলের ভাল-মন্দের উনি এখন বিচার করছেন। আমরা তো সবসময় বলি তৃণমূল মানেই বিজেপি, আর বিজেপি মানেই তৃণমূল! অবস্থানগত পরিবর্তন, পতাকাটা আলাদা হতে পারে। কিন্তু জন্মটা সব আরএসএসেরই। ফলে উনি ভাল চিনবেন।’
অন্যদিকে, গতকাল অর্থাৎ শনিবার তৃণমূল বিধায়ক হুমায়ুন কবীর ঘোষণা করেছেন নতুন দল গঠনের। শনিবার বহরমপুরে সাংবাদিক বৈঠক করে এ কথা জানান ।শনিবার বহরমপুরে সাংবাদিক বৈঠক করে এ কথা জানান তৃণমূল বিধায়ক।ছাব্বিশের বিধানসভা ভোটের আগেই নতুন দল ২২ ডিসেম্বর নতুন দল গঠনের কথা জানালেন ভরতপুরের তৃণমূল বিধায়ক। হুমায়ুন কবীর দাবি করেন, তিনি কংগ্রেস দল ছেড়েছিলেন তৎকালীন কংগ্রেসের সাংসদ তথা রাজ্যের সভাপতি অধীর চৌধুরীর ঘনিষ্ঠ অতসী চ্যাটার্জির খারাপ ব্যবহারের দরুন। তাই তিনি কংগ্রেসে আর ফিরবেন না। ৫০০০০ লোককে নিয়ে যোগ দেবেন নতুন দলে। সেই দলের চেয়ারম্যান তিনি নিজে। ঐদিন দলের সহ-সম্পাদক সম্পাদক সভাপতি কোষাধ্যক্ষ সবার নাম ঘোষণা হবে। উত্তর দিনাজপুর, মালদা, মুর্শিদাবাদ সহ রাজ্যের বিভিন্ন জেলা থেকে মানুষজন ওই নতুন দলে যোগ দেবে। দলে যে সকল নেতারা বিভিন্ন অপকাণ্ডের সঙ্গে যুক্ত তাদের বিরুদ্ধে লড়াই প্রথম শুরু হবে। তৃণমূল বিধায়ক হুমায়ুন কবীর বলেন, ‘নতুন দলের চেয়ারম্যান আমি, আগেই ঘোষণা করে দিলাম। অন্য পদাধিকারীদের নাম ঘোষণা হবে ২২ ডিসেম্বর।
মুর্শিদাবাদ ছাড়াও মালদা, উত্তর দিনাজপুরের নেতারাও থাকবেন দলে। হাওড়া, উত্তর ২৪ পরগনা-সহ বিভিন্ন জেলার লোক দলের পদে থাকবেন। ২২ ডিসেম্বর টেক্সটাইল মোড়ে ৫০ হাজার লোক নিয়ে জনসভা করব। এবার আমার সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত, আর পিছিয়ে আসার কোনও সম্ভাবনা নেই।’
এই ঘোষণার প্রেক্ষিতে বিজেপি বিধায়ক তথা রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী বলেন, ‘হুমায়ুন কবীর চলে গেলে ২২ আসনে কংগ্রেস, সিপিএম জোট আর বিজেপি জিতবে।’