সুহানা বিশ্বাস। কলকাতা সারাদিন।
বুধবার থেকেই রাজ্যে শুরু হচ্ছে প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগ প্রক্রিয়া। একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণীর পরে এবার প্রাথমিকে নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু হচ্ছে। রাজ্যের প্রাথমিক স্কুলগুলিতে ১৩ হাজার ৪২১ টি শূন্য পদ রয়েছে। আগামিকাল থেকেই সেই পোর্টাল খুলতে চলেছে প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ। দ্রুত নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু করা হবে স্কুলে স্কুলে প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগের জন্য।
আগামিকাল থেকেই চাকরিপ্রার্থীরা আবেদন করতে পারবেন। অনলাইনেই চলবে আবেদন প্রক্রিয়া। তবে আপাতত বিস্তারিতভাবে নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়নি। সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে আজ সন্ধ্যার মধ্যেই প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের তরফে পূর্ণাঙ্গ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হতে পারে। তারপর শুরু হবে আবেদন প্রক্রিয়া। আর সেটাই হলে আট বছর পরে প্রাথমিক স্কুলে শিক্ষক নিয়োগ করা হতে চলেছে। ২০১৭ সালের পর থেকে প্রাথমিকে নিয়োগ থমকে ছিল। বিধানসভা নির্বাচনের মাসকয়েক আগে নিয়োগের তোড়জোড় শুরু করা হল। তবে প্রাথমিকে যে শিক্ষক নিয়োগ করা হবে, তা আগেই জানানো হয়েছিল। গত ২৫ সেপ্টেম্বর ঘোষণা করা হয়েছিল যে ১৩,৪২১ শূন্যপদে শিক্ষক (টেট উত্তীর্ণ) নিয়োগ করা হবে। কিন্তু সেই ঘোষণার পরে প্রায় দু’মাস হতে চললেও আবেদন প্রক্রিয়া শুরু করা হয়নি। অবশেষে আগামিকাল (বুধবার, ১৯ নভেম্বর) থেকে অনলাইনে আবেদন প্রক্রিয়া শুরু করা হবে বলে সূত্রের খবর। এর মাধ্যমে সরকার অনুমোদিত, সরকারি পোষিত প্রাথমিক বিদ্যালয় এবং জুনিয়র বেসিক স্কুলগুলির জন্য সহকারী শিক্ষক নিয়োগ করা হবে।
যদিও শূন্যপদের সংখ্যা নিয়ে ক্ষোভ তৈরি হয়েছে চাকরিপ্রার্থীদের মধ্যে। তাঁদের দাবি, এতদিন পরে নিয়োগ হচ্ছে। অথচ মাত্র ১৩,৪২১টি শূন্যপদে কেন শিক্ষক নিয়োগ করা হচ্ছে। বিষয়টি নিয়ে আন্দোলনকারীদের অন্যতম ‘মুখ’ বিদেশ গাজি বলেছেন, ‘প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগে ১৩,৪২১টি ভ্যাকেন্সি-সহ পূর্ণাঙ্গ নোটিফিকেশন কেন? স্কুল সার্ভিস কমিশন (এসএসসি) বাড়াতে পারে শূন্য়পদ (যদিও সরকারিভাবে কিছু ঘোষণা করেনি)। প্রাইমারির ক্ষেত্রে কেন বাড়ানো হচ্ছে শূন্যপদ? কেন এই দ্বিচারিতা? ২,৩১৫টি প্রাথমিক স্কুলশিক্ষক শূন্য!’ আন্দোলনকারী চাকরিপ্রার্থী জানিয়েছেন, পাঁচ বছর পরে প্রাথমিক টেট হয়েছিল। সেই টেটের রেজাল্ট পাওয়ার পরে আরও তিন বছর কেটে গিয়েছে। নিয়োগের প্রাথমিক নোটিশ আসার পরে দু’মাস কেটে গেল। অথচ এখনও পূর্ণাঙ্গ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হল। সেই রেশ ধরে দু’দফা দাবি তুলেছেন আন্দোলনকারী চাকরিপ্রার্থী। তিনি দাবি করেছেন, স্বচ্ছভাবে নিয়োগ করতে হবে। বাড়াতে হবে শূন্যপদের সংখ্যা। আর শূন্যপদের সংখ্যা যদি বাড়ানো না হয়, তাহলে কি আন্দোলনের পথ বেছে নেওয়া হবে? আন্দোলনকারী চাকরিপ্রার্থীদের অন্যতম ‘মুখ’ জানিয়েছেন, পূর্ণাঙ্গ বিজ্ঞপ্তি দেখে পরবর্তী কর্মসূচি নির্ধারণ করা হবে।

চলতি বছরে টেটের জন্য বরাদ্দ নম্বর এক লাফে ২০ নম্বর বৃদ্ধি করা হয়েছে। পুরনো খসড়া বিধিতে টেটের বরাদ্দ নম্বর ছিল ৫। আর নতুন প্রস্তাবিত খসড়া বিধিতে সেই নম্বর বাড়িয়ে ২৫ করা হয়েছে। টেটের বরাদ্দ নম্বর বৃদ্ধি পেলেও (ডিপ্লোমা ইন এলিমেন্টারি এডুকেশন (ডিএলএড)- এর নম্বর কমে হয়েছে ৫। যা আগে ছিল ১৫। শিক্ষা মন্ত্রী ব্রাত্য বসু জানিয়েছেন, ‘পশ্চিমবঙ্গ সরকারের বিদ্যালয় শিক্ষা বিভাগ কর্তৃক অনুমোদিত প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগের জন্য ১৩,৪২১টি শূন্যপদের জন্য এই প্রক্রিয়া পরিচালিত হবে।’