সুহানা বিশ্বাস। কলকাতা সারাদিন।
সরকারের দাবি ১ নভেম্বর থেকে কলকাতার সমস্ত হাসপাতালে চালু হয়েছে ইন্টিগ্রেটেড রেফারাল সিস্টেম। মানে কোন হাসপাতালে কোন ডিপার্টমেন্টে কত বেড খালি রয়েছে তা অনলাইনে দেখতে পাবেন সবাই। তার পরও হাসপাতালে হাসপাতালে ঘুরে প্রাণ গেল এক প্রৌঢ়ের। শুধু তাই নয়, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বাড়ি থেকে চিঠি লিখিয়ে এনেও বাঁচানো গেল না রোগীকে।
রোগীমৃত্যুকে কেন্দ্র করে অশান্ত এসএসকেএম হাসপাতাল। মৃতের পরিবারের দাবি, হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছিল কোনও বেড নেই। এরপর একাধিক হাসপাতাল ঘোরার পর শেষ রোগীর পরিবার সোজা যান কালীঘাটে মুখ্যমন্ত্রীর বাড়িতে। সেখান থেকে চিঠি লিখে দেওয়ায় রোগীকে ফের নিয়ে আসা হয় এসএসকেএম-এ। তবে, পরিবারের অভিযোগ হাসপাতালে ঢোকানোর সময় রোগী সেন্সলেস হয়ে যান।
পরে তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করা হয়। এই ঘটনার পর আরও একবার প্রশ্ন উঠে গেল স্বাস্থ্য পরিষেবা নিয়ে। যেখানে জুনিয়র চিকিৎসকরা বারবার সুপরিকঠামো, রেফারেল সিস্টেম নিয়ে সরব হয়েছিলেন তাহলে কি সেই কাজ কিছুই এগোয়নি?
মৃত ব্যক্তির নাম সুশীল হালদার (৪৮)। সোমবার তাঁর নাক-মুখ থেকে আচমকাই রক্তক্ষরণ শুরু হয়। এরপর তাঁকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় নিয়ে আসা হয় প্রথমে এসএসকেএম হাসপাতালে। তবে বেড না মেলায় নিয়ে যাওয়া হয় কলকাতা ন্যাশানাল মেডিক্যাল কলেজ ও নীলরতন হাসপাতালে। সেখানেও ভর্তি করাতে না পারায় রোগীকে নিয়ে মঙ্গলবার সকালে মুখ্যমন্ত্রীর বাসভবনে যায় পরিবার। সেখান থেকে চিঠি লিখে দেওয়ায় রোগীকে ফের এসএসকেএমে আনা হয়। তবে মৃত্যু হয় সুশীলবাবু।
এরপরই সরব হয় রোগীর পরিবার। যদিও, সূত্রে খবর,জেনারেল সার্জারির জন্য আউটডোরে পাঠানো হয় রোগীকে। তখনই হার্ট অ্যাটাক হয়ে মৃত্যু হয় তাঁর। রোগীর পরিবারের লোকজন কার্যত বিরক্ত। শুধু ক্যামেরার সামনে জানালেন, “কিছু করেনি। কেউ কিছুই করেনি। মুখ্যমন্ত্রী চিঠি লিখে দিয়েছেন ঠিকই। এখন শ্মশানে নিয়ে যাচ্ছি।” চিকিৎসক সুবর্ণ গোস্বামী বলেন, “এই দাবিগুলো রোজের। এটাই জুনিয়র চিকিৎসকরা তুলেছিলেন। এখনও যে কিছুই ঠিক হয়নি এটাই তার প্রমাণ।”
অন্যদিকে, সরকারের দাবি ১ নভেম্বর থেকে কলকাতার সমস্ত হাসপাতালে চালু হয়েছে ইন্টিগ্রেটেড রেফারাল সিস্টেম। মানে কোন হাসপাতালে কোন ডিপার্টমেন্টে কত বেড খালি রয়েছে তা অনলাইনে দেখতে পাবেন সবাই। তাও একই অবস্থা হাসপাতালে-হাসপাতালে। মঙ্গলবার এসএসকেএম হাসপাতালের এই ঘটনায় আন্দোলনকারী চিকিৎসকরা বলছেন, এই ঘটনায় ফের প্রমাণিত হল ব্যক্তি নয়, ভরসা রাখা উচিত ব্যবস্থাতেই।