বিতস্তা সেন। কলকাতা সারাদিন।
পরিসংখ্যান বলছে, গত চল্লিশ বছরে বিশ্বে পুরুষদের শুক্রাণুর পরিমাণ হ্রাস পেয়েছে গড়ে ৫৯ শতাংশ, যা যথেষ্ট উদ্বেগের কারণ, মত বিশেষজ্ঞদের।
সন্তান জন্ম দেওয়ার ক্ষেত্রে শুধু মহিলাদের বয়স নয়, পুরুষদের বয়সও একইরকম গুরুত্বপূর্ণ। অনেকেই মনে করেন, সন্তান জন্ম দেওয়ার ক্ষেত্রে পুরুষের বয়স কখনওই বাধা হতে পারে না, এ ক্ষেত্রে কেবল মেয়েদের বয়সই গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু এই ধারণা সম্পূর্ণ ভুল।
ম্যাচুরিটাস জার্নালে প্রকাশিত গবেষণাপত্রে বলা হয়েছে, বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে পুরুষদের শুক্রাণুর সংখ্যা ও গুণগত মান কমতে থাকে।
মহিলাদের ক্ষেত্রে মেনোপজের পর সন্তানধারণের কোনও সম্ভাবনা থাকে না। কিন্তু ছেলেদের শরীরে শুক্রাণু তৈরির প্রক্রিয়া কখনও বন্ধ হয় না। কিন্তু বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে পুরুষদের শুক্রাণুর জেনেটিক মিউটেশন হয়। ফলে শুক্রাণুর ডিএনএ ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার ঝুঁকি বেড়ে যায়। এই অবস্থায় পুরুষদের বাবা হওয়ার সম্ভাবনাও কমে যায় বহুগুণ।
গবেষণায় দেখা গিয়েছে, ৪০ বছরের পর পুরুষদের স্পার্ম কাউন্ট কমতে থাকে, বাবা হওয়ার ক্ষমতা কমে যায়।
আর যদি বা বাবা হতেও পারে, সেক্ষেত্রে সদ্যোজাত সন্তানের স্বাস্থ্যের উপর খারাপ প্রভাব পড়তে পারে। শুধু তা-ই নয়, তাঁদের সঙ্গীদের গর্ভকালীন ডায়াবিটিস, প্রিক্ল্যাম্পসিয়া এবং সময়ের আগেই শিশুজন্মের মত সমস্যাও হতে পারে।
গবেষণায় দেখা গিয়েছে, বাবার বয়স যদি বেশি হয়, তবে শিশুর স্নায়ুতন্ত্রজনিত রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বেড়ে যায়। পাশাপাশি, জন্মের সময় শিশুর জন্মকালীন ওজন বা বার্থওয়েট কম হতে পারে।
গবেষণায় এও দেখা গিয়েছে, বাবার বয়স বেশি হলে সদ্যোজাতর জন্ম থেকেই হার্টের সমস্যা, খিঁচুনির সমস্যা দেখা দিতে পারে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, পুরুষদের ক্ষেত্রে ২৫ থেকে ৩০ বছর বয়স হল বাবা হওয়ার আদর্শ সময়। এইসময় শুক্রাণু সবথেকে সক্রিয় থাকে।
তবে এ কথাও ঠিক, ৫০ বছর বা তার বেশি বয়সি পুরুষ সন্তান জন্ম দেওয়ার ক্ষমতা রাখেন। কিন্তু সেক্ষেত্রে সদ্যোজাতর মধ্যে নানা জটিলতার ঝুঁকি থেকেই যায়। গিনেস বুক রেকর্ডসের মতে, ৯২ বছর বয়সি এক পুরুষ সন্তানের জন্ম দিয়েছেন। কিন্তু এসবই বিরল ঘটনা।