সোমবার রাতে টুসু পরব গোটা জঙ্গল মহল জুড়ে খুব ধুম-ধামে পালিত হয়। মূলত, আদিবাসী-মূলবাসীদের প্রধান উৎসব হলেও, ‘মকর-পরব’ ঘিরে মেতে ওঠেন সবাই। পৌষ সংক্রান্তির আগের রাত হল টুসু পুজোর রাত। ফল, পিঠে, খই-মুড়কির নৈবেদ্য সাজিয়ে টুসুমণির পুজো করেন কুমারী ও এয়োতিরা।
সোমবার সারারাত গান শুনিয়ে ‘জাগিয়ে রাখা’ হয় সমৃদ্ধির দেবী টুসুমণিকে। পরদিন গান গাইতে গাইতে গিয়ে নদী কিংবা জলাশয়ে টুসু মূর্তি ভাসিয়ে দেওয়ার রীতি। একটা সময় গোটা পৌষ মাস ধরেই চলত টুসু উৎসব। ক্ষেত থেকে ফসল তোলার আনন্দে, জঙ্গলমহলের আট থেকে আশি, মেতে উঠতেন টুসু গানে।
যা চূড়ান্ত রূপ নিত, মকর পরবের দিনে। সময়ের ফেরে জঙ্গলমহলের কৃষিকেন্দ্রিক লোক উৎসবে এসেছে ভাটার টান। তাই আগের মতো টুসু গান যেমন শোনা যায় না, তেমনি দোকানেও মেলে না টুসু বরণ গানের বই।
আর এই ভাটার সময় টুসু কে বাঁচিয়ে রাখতে টুসু কে বর্তমান প্রজন্মের কাছে তুলে ধরতে এগিয়ে এলেন ঝাড়গ্রাম বাণিজ্য হাইস্কুলের দুইজন ইংরেজি শিক্ষক । লিখলেন টুসুর গান।
তাই সোমবার সকালে ঝাড়গ্রাম শহরের আদিবাসী মার্কেট প্রাঙ্গনে এবং ঝাড়গ্রাম জেলার বিভিন্ন হাটে বাজারে টুসু কিনতে ভিড় জমিয়েছেন মানুষজন। শান্ত জঙ্গলমহল তাই টুসু ঠাকুর ভালোই বিক্রি হয়েছে বলে জানালেন টুসু বিক্রেতারা। তাই গোটা জঙ্গলমহল এর বাসিন্দারা মকর পরবের উৎসবে মেতে উঠেছেন।