সুষমা পাল মন্ডল। কলকাতা সারাদিন।
সোনারপুরের বাসিন্দা বাপন দাস ও হৈমন্তী দাসের একমাত্র কন্যা হৃদিকা মাত্র ৮ মাস বয়সে বিরল রোগ স্পাইনাল মাসকিউলার অ্যাট্রফিতে (Spinal Muscular Atrophy) আক্রান্ত। ২০২৪ সালের জানুয়ারি মাসে জন্ম নেওয়া হৃদিকার শরীরের বৃদ্ধি স্বাভাবিক হয়নি। মাত্র ৭ মাসের মাথায় ধরা পড়ে এই প্রাণঘাতী রোগ।
হাতে আর সময় মাস দশেক। সেই সময়ের মধ্যেই যে হৃদিকাকে একটা ইঞ্জেকশন দিতে হবে। না, আর পাঁচটা ভ্যাক্সিন নয়, ১৬ কোটি মূল্যের একটা ইঞ্জেকশন। আর যেটা না দিতে পারলে, হৃদিকা সত্যিই আর পারবেন না উঠে বসতে, নড়াচড়া করতে কিংবা হাঁটাচলা তো দূরের কথা!
বাবা মায়ের আদুরে মেয়ে এক বিরল রোগের সঙ্গে যুদ্ধ করছে। ছোট্ট শরীরে বাসা বেঁধেছে বিশ্বের অন্যতম জটিল বিরল রোগ স্পাইনাল মাসকুলার অ্যাট্রোফি (SMA) টাইপ ওয়ান। #hridikadas #SpinalMuscularAtrophy
স্পাইনাল মাসকিউলার অ্যাট্রফি এমন একটি বিরল রোগ, যেখানে শরীরের কিছু অংশের বৃদ্ধি থমকে যায় এবং পেশি শক্তি ক্রমশ হ্রাস পায়। এই রোগের চিকিৎসা সম্ভব হলেও অত্যন্ত ব্যয়বহুল। প্রয়োজন ‘জোলজেন্সমা’ নামে একটি ইনজেকশন, যার আনুমানিক মূল্য ১৬ কোটি টাকা।
মধ্যবিত্ত পরিবারের সন্তান বাপন এবং হৈমন্তী। মেয়ের চিকিৎসার জন্য ১৬ কোটি টাকা জোগাড় করা তাঁদের পক্ষে প্রায় অসম্ভব। এখনও পর্যন্ত বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার সাহায্যে এবং সাধারণ মানুষের অনুদানে ২০ লক্ষ টাকা সংগ্রহ করা সম্ভব হয়েছে। তবে, আরও প্রায় ১৫ কোটি টাকার বেশি প্রয়োজন। এই অর্থ সংগ্রহ করতে মাত্র ১০ মাস সময় রয়েছে।
হৃদিকার মা হৈমন্তী দাস বলেন, “আমার মেয়ের শরীর ক্রমশ দুর্বল হয়ে যাচ্ছে। হাত-পায়ের শক্তি কমে আসছে। মেয়ের প্রাণ বাঁচাতে এত বড় অঙ্কের অর্থ জোগাড় করা আমাদের পক্ষে অসম্ভব। সমাজের সমস্ত স্তরের মানুষের কাছে সাহায্যের আবেদন করছি।”
স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা ‘ইম্প্যাক্ট গ্রুপ’ হৃদিকার চিকিৎসার জন্য ক্রাউড ফান্ডিং শুরু করেছে। সংগৃহীত অর্থ সরাসরি তাদের অ্যাকাউন্টে জমা হচ্ছে। সংস্থার ওয়েবসাইটে অনুদান সম্পর্কিত সমস্ত তথ্য স্বচ্ছভাবে প্রকাশ করা হচ্ছে। মেয়েকে বাঁচাতে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছেও সাহায্যের আবেদন করবেন বাপন এবং হৈমন্তী দাস। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কালীঘাটের বাড়িতে ছুটে গিয়েও সাহায্যের আকুল আর্তি জানিয়ে এসেছেন তাঁরা। ডায়মন্ড হারবারে তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় যে সেবাশ্রয় শিবির শুরু করেছেন সেই সেবাশ্রয় শিবিরেও যদি কোনভাবে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের নজর আকর্ষণ করা যায় একমাত্র মেয়ের চিকিৎসার জন্য তার চেষ্টাও করেছেন।
স্পাইনালের অন্যতম জটিল রোগ। হৃদিকার চিকিৎসক সংযুক্তা দে বলেন, “স্পাইনাল মাসকুলার অট্রোফি একটা জেনেটিক ডিসঅর্ডার। জিনগতভাবে হয়। নার্ভ ও পেশীকে এফেক্ট করে। হাতপায়ের নার্ভ ও পেশী শিথিল হতে থাকে। দু’বছরের নীচের বাচ্চাদের জন্য লাইসেন্সড রয়েছে এই ইঞ্জেকশনের। এটিকে একটা অরফান ড্রাগ বলা যেতে পারে। সেটা জিন থেরাপি। অর্থাৎ ‘Onasemnogene-abeparvovec’। এটা শরীরে একবার ইঞ্জেক্ট করতে হয়।”
এই ইঞ্জেকশন কী করে? চিকিৎসক জানান, “এই ওষুধ শরীরে মধ্যে গিয়ে ওই যে ডিফেক্টিভ জিন, যেটা প্রোটিন তৈরি করতে পারে না, সেই প্রোটিনটা আবার তৈরি করতে সেলকে সাহায্য করে।”
এই ইঞ্জেকশন এখানে পাওয়া যায় না। ইমপোর্ট করতে হয়। ইঞ্জেকশনের দাম ৯ কোটি। কিন্তু কর-আমদানির খরচ-সহ সব মিলিয়ে ১৬ কোটি টাকা পর্যন্ত লাগতে পারে।
হৃদিকার বাবা-মা বিশ্বাস করেন, সমাজের সহানুভূতি এবং দানের মাধ্যমে মেয়ের চিকিৎসার জন্য প্রয়োজনীয় ১৬ কোটি টাকা ১০ মাসের মধ্যেই সংগ্রহ করা সম্ভব হবে।
সোশ্যাল মিডিয়ায় একরত্তি হৃদিকার মা হৈমন্তী দাস লিখেছেন,
“শ্রদ্ধেয় ম্যাম/স্যার, আমি হৈমন্তী দাস, সোনারপুর, কলকাতা 700150-এ বসবাসকারী শিশু হৃদিকা দাসের মা। বিগত তিন মাস ধরে আপনাদেরকে অনুরোধ করছি আমার মেয়ে হৃদিকাকে নিয়ে একটা ভিডিও তৈরি আপনাদের প্রোফাইল থেকে শেয়ার করে সাহায্য করার জন্য l
আপনারা জানেন হৃদিকা এক বিরলতম জিন ঘটিত মারণ ব্যাধিতে আক্রান্ত, যার নাম Spinal Muscular Atrophy Type-1. এই রোগ থেকে হৃদিকা কে বাঁচাতে 16 কোটি টাকার Zolgensma নামে জিনথেরাপি একটি ভ্যাকসিনের প্রয়োজন l
আপনারা যদি একটু এগিয়ে এসে একটি ভিডিও বার্তা তৈরি করে সাহায্য না করেন তাহলে আমরা হৃদিকাকে কি ভাবে বাঁচাবো? তাই আপনারদের কে কর জোরে অনুরোধ করছি আমার আট মাস বয়সী মেয়ে হৃদিকাকে বাঁচাতে একটি ভিডিও বার্তা শেয়ার করুন l ধন্যবাদ l”
হৈমন্তী দাস
ফোন নাম্বার :8777062393
Donation link :
https://www.impactguru.com/fundraiser/help-hridika-das
To UPI ID: supporthridika@yesbankltd