সুমন তরফদার। কলকাতা সারাদিন।
“এই ধরনের নরপিশাচদের চরমতম শাস্তি হওয়া উচিত। ফাঁসি হলে মনকে সান্ত্বনা দিতে পারতাম।” আরজিকর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসক পড়ুয়াকে ধর্ষণ এবং খুনের ঘটনায় দোষী সাব্যস্ত সিভিক ভলেন্টিয়ার সঞ্জয় রাইয়ের ফাঁসির সাজা না হওয়ায় অসন্তোষ প্রকাশ করলেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
পাশাপাশি জানিয়ে দিলেন, নিম্ন আদালতের এই রায়কে চ্যালেঞ্জ করে এবার হাইকোর্টে যাচ্ছে রাজ্য। সোমবার রাতে টুইটে এখবর জানিয়ে মুখ্যমন্ত্রী লিখেছেন, ”আরজি করের জুনিয়র চিকিৎসকের ধর্ষণ ও হত্যার ঘটনায় নিম্ন আদালতের রায় শুনে আমি স্তম্ভিত। কীভাবে এই রায়ে ঘটনাটিকে বিরলতম বলা হলো না? আমি নিশ্চিত, এই ঘটনাটি বিরলতম এবং এর জন্য মৃত্যুদণ্ড হওয়া প্রয়োজন। আমরা রাজ্য সরকার থেকে হাই কোর্টে ফাঁসির দাবিতে আবেদন জানাব।”
আরজি কর -কাণ্ডে প্রথম দিন থেকেই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দোষীর ফাঁসির সাজা দাবি করেছিলেন। একই কথা বলেছিলেন তৃণমূল সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ও। সোমবার ছিল আরজি-করের সাজা ঘোষণা। দোষী সঞ্জয় রাইকে আমৃত্যু যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছে আদালত। তবে আদালতের রায়ে অসন্তুষ্ট মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
প্রসঙ্গত, আরজি করের তদন্ত প্রথমে করছিল কলকাতা পুলিশ। গ্রেফতার করা হয় সঞ্জয় রাইকে। তবে কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশে সেই তদন্তের ভার যায় সিবিআই-এর হাতে। তা নিয়ে আগেও আক্ষেপ শোনা গিয়েছিল মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের গলায়। বলেছিলেন, “আমি মা-বাবাকে বলেছিলাম সময় দিন। তারপর না হলে সিবিআই দিতেন। কিন্তু তার আগেই সিবিআই-এর হাতে চলে গেল তদন্তভার।”
এরপর সময় যত গড়িয়েছে, তদন্ত নিয়ে সিবিআই-কে আক্রমণ করতেও শোনা গিয়েছে মমতাকে। কখনও বলেছেন, কলকাতা পুলিশ যাকে গ্রেফতার করেছে তারপর সিবিআই কাউকে নতুন করে ধরতে পারেনি।
সোমবার সকালে ও কলকাতা থেকে মুর্শিদাবাদ রওনা হওয়ার পথে আরজিকর কাণ্ডে চরমতম সাজা ঘোষণা হবে বলে আশা প্রকাশ করে মমতা বলেছিলেন, “ফাঁসির দাবিতে আমি নিজে মিছিল করেছিলাম। সবাই করেছে। ফাঁসির সাজা হবে কি না সেটা জজেদের উপর ডিপেন্ড করে। কীভাবে কেস সাজানো হয়েছে তার ফর ডিপেন্ড করে। আমরা তো পরপর তিনটে কেসে ফাঁসি করে দিয়েছি। আমাদের পুলিশ ৫৪ দিনের মধ্যেও করেছে। আমরা প্রত্যেকটাই ৫৩-৫৪ দিনের মধ্যেই করেছি। কিন্তু জজেরা একটু টাইম নেন। কারণ তাঁদের দেখতে হয়। আমি জুডিশিয়ারিকেও থ্যাঙ্কস জানাই। আমাদের টিম অফ ইনভেস্টিগেশনকেও থ্যাঙ্কস জানাই।”
এ দিন সাজা ঘোষণার পর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “এই ধরনের নরপিশাচদের চরমতম শাস্তি হওয়া উচিত। ফাঁসি হলে মনকে সান্ত্বনা দিতে পারতাম। আপনারা দেখেছেন আমরা ৫৪ থেকে ৬০ দিনের মধ্যে ফাঁসির অর্ডার করিয়ে দিয়েছি। এই কেসে আমাদের ফাঁসির দাবি সকলের ছিল। সেক্ষেত্রে বিচারের রায় নিয়ে কিছু বলব না। আমাদের হাতে কেস থাকলে অনেকদিন আগেই ফাঁসির অর্ডার করিয়ে দিতে পারতাম। প্রথম দিন থেকেই ফাঁসি চেয়েছি।”