শোভন গায়েন। কলকাতা সারাদিন।
২০১১ সালে বাংলার রাজনৈতিক ইতিহাসে ঘটেছিল বড় পরিবর্তন। ৩৪ বছরের বাম শাসনের অবসান ঘটিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে রাজ্যের ক্ষমতায় আসে তৃণমূল কংগ্রেস। সেই সময় মাওবাদীদের সমর্থন পেয়েছিল তৃণমূল, এমনকি খোদ কিষেণজি প্রকাশ্যে জানিয়েছিলেন, তিনি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে দেখতে চান।
সিপিএম তখনই বলেছিল,মাও-তৃণ জোট। সেই পালা বদলের প্রায় চোদ্দ বছর পর প্রায় একই বুলি সেই ঘটনা মনে করিয়ে এবার বিস্ফোরক অভিযোগ আনলেন বিজেপি রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। তাঁর দাবি, ২০১১ সালের আগে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে মাওবাদীরা পরিকল্পিতভাবে সিপিএম নেতাদের হত্যা করেছিল। গত শুক্রবার নৈহাটিতে খুন হন এক তৃণমূল কর্মী। এই ঘটনায় বিজেপি নেতাদের দিকে অভিযোগের আঙুল ওঠে। তবে সেই অভিযোগ উড়িয়ে দিয়ে বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার পাল্টা অভিযোগ আনেন তৃণমূলের বিরুদ্ধে।
গত শুক্রবার নৈহাটিতে তৃণমূল কংগ্রেস কর্মী খুন হন। সেই ঘটনার পর বিজেপি নেতাদের দিকে আঙুল ওঠে। এরপর ঘটনাস্থলে পৌঁছন বিজেপি-র রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। ক্ষুব্ধ সুকান্ত অভিযোগ করেন, তৃণমূল কর্মী খুনের পর থেকে বিজেপি নেতা মুকেশ সাউ এর অমানবিক অত্যাচার হয়েছে। তিনি বলেন, “এখানে কাউ এবং গুড্ডু দুজন তৃণমূলের গুন্ডা রয়েছে। একজন মদ বিক্রি করে অন্যজন লোটো (লটারি) চালায়। গরিব মানুষের সমস্ত কিছু লুট হচ্ছে। পার্থ ভৌমিকের সাগরেদ এরা। এখন তারা আমাদের মণ্ডলের সাধারণ সম্পাদকের মেশিন লুট করেছে। বাড়ি ভাঙচুর করেছে। টাকা লুট করেছে। ওঁর স্ত্রীর সোনার গহনা লুট করেছে। ওদের পরিস্কার অ্যাজেন্ডা ভয়ের বাতাবরণ তৈরি করা। হিন্দুরা যাতে ভোট দিতে না যায় সেই কারণে তৃণমূল নগ্ন রাজনীতি করছে।”
এরপর কেন্দ্রের শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী কার্যত হুংকার দিয়ে বলেন, “বিজেপি জানে কোন ভাষায় কথা বলতে হয়…।” এরপর তিনি বলেছেন,”বিজেপি খুনের রাজনীতিতে বিশ্বাস করে না। ২০১১ সালের আগে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যেভাবে মাওবাদীদের ব্যবহার করে সিপিএম নেতাদের খুন করেছিলেন, আমরা সেই নীতিতে বিশ্বাস করি না।”
এই মন্তব্য ঘিরে রাজনৈতিক মহলে ব্যাপক চাঞ্চল্য তৈরি হয়েছে। সিপিএম-তৃণমূলের সম্পর্ক ও ২০১১ সালের পালাবদলের পুরনো প্রসঙ্গ তুলে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে সরাসরি এই অভিযোগ আনলেন সুকান্ত মজুমদার।