সুহানা বিশ্বাস। কলকাতা সারাদিন।
আজ ৯ ফেব্রুয়ারি, আরজি কর নিহত তরুণী চিকিৎসকের জন্মদিন। মেয়ের জন্মদিনে বিচার চেয়ে আজ ফের পথে নির্যাতিতার পরিবার। অন্যদিকে তরুণী চিকিৎসকের জন্মদিন উপলক্ষে ঘোলার পার্থপুরে উদ্বোধন করা হল অভয়া ক্লিনিক। উপস্থিত ছিলেন নির্যাতিতার বাবা-মা। এদিন সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে তরুণী চিকিৎসকের মা বলেন, “এই ৯ তারিখই আমাদের ঘর আলো করে এসেছিল ও। আর গত ৯ অগস্ট সব শেষ হয়ে গিয়েছে। সেই সঙ্গে শেষ হয়ে গিয়েছে আমাদের স্বপ্ন। ও ভাল চিকিৎসক ছিল, গরীবদের সেবা করত। এখন ওর নামেই আমাদের মানুষ চিনবে। আমরা ওর বাবা-মা হিসেবে গর্ববোধ করি।”
নির্যাতিতার পরিবার এখনও সঞ্জয় রাইকে নিয়ে আশায় রয়েছেন। তাঁদের আশা সঞ্জয় একদিন মুখ খুলবেই। সেই দিনই গোটা ঘটনা সামনে আসবে। নির্যাতিতার পরিবারের দাবি, “সঞ্জয় রাই সেই টনার একমাত্র প্রত্যক্ষদর্শী। তাই তাঁকে বাঁচিয়ে রাখা প্রয়োজন। আমাদের বিশ্বাস সঞ্জয় কোনও না কোনও দিন মুখ খুলবেই। অন্যান্য দোষীরাও ধরা পড়বে।” নির্যাতিতার পরিবার সিবিআই তদন্ত নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন। আদালতেও দ্বারস্থ হয়েছেন। তাঁরা এদিনও জানিয়েছেন, “যে চারজন সেই রাতে ঘটনার আগে আমার মেয়ের সঙ্গে বসে ডিনার করেছিলেন তাদের কোনও রকম জেরা পর্যন্ত করা হয়নি। এরা কাজের আড়াল করার চেষ্টা করছে?”
রবিবার অভয়ার জন্মদিনে ফের বিচারের দাবিতে সরব হল নাগরিক সমাজ। তাঁর জন্মদিনের দিনেই পথে নামল কলকাতা। দুপুর ৩টেয় কলেজ স্কোয়ার থেকে একটি মৌন মিছিল শুরু হয়। কলেজ স্কোয়ার থেকে এই মিছিলের গন্তব্য আরজি কর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল পর্যন্ত। এই মিছিলের ডাক দেয় অভয়া মঞ্চ। মিছিলের শিরোনাম ছিল জন্মদিনের মৃত্যুঋণ। নিহত চিকিৎসকের বিচার চেয়ে ফের রাজপথে জনজোয়ার। মৌন মিছিল করেই প্রতিবাদ জানানো হল। জন্মদিনে অঙ্গীকার, বাংলার মেয়ের সুবিচার এই শিরোনামে কর্মসূচির ডাক দেওয়া হয়েছে। নিহত চিকিৎসকের জন্মদিনে তাঁর মৃত্যুর প্রতিবাদে আলো জ্বালানো ও গাছ লাগানোর আবেদন করেছেন অভয়া মা।
আন্দোলনকারীদের পক্ষ থেকে চিকিৎসক সুবর্ণ গোস্বামী বলেন, আরজি কর মেডিক্যাল কলেজে হাসপাতালে মৃত তরুণী চিকিৎসকের আজ জন্মদিন। তাই এদিন ফের একবার ন্যায় বিচারের দাবিতে সকলে সামিল হয়েছি।
জুনিয়র চিকিৎসক অনিকেত মাহাতো বলেন, “ওয়েস্ট বেঙ্গল জুনিয়র ডক্টরস ফ্রন্ট, আন্দোলনের ধারাবাহিকতার জায়গা থেকে শুরু হয়েছে। তার আগে আন্দোলন পরিচালনার জন্য, আমরা জয়েন্ট অ্যাকাউন্ট তৈরি করেছিলাম। সেই জয়েন্ট অ্যাকাউন্টেরও যাবতীয় যা হিসেব, যাবতীয় যা ডকুমেন্ট, সবই আমাদের কাছে আছে। সেটারও অডিট আনপ্রসেজড। অডিট কমপ্লিট হলে যাবতীয় তথ্য রাখতে পারব। অভিযোগ লিপি যদি দেওয়া হয়, এখনও আমরা পাবলিক ডোমেইনে উত্তর দিতে পারব।”

প্রসঙ্গত, ওয়েস্ট বেঙ্গল জুনিয়র ডক্টর্স ফ্রন্টের ৭ সদস্যকে তলব করে বিধাননগর পুলিশ কমিশনারেটের সাইবার ক্রাইম শাখা। রাজু ঘোষ নামে এক ব্যক্তির অভিযোগের ভিত্তিতে অনিকেত মাহাতো সহ ৭ জনকে নোটিস পাঠানো হয়। ওয়েস্ট বেঙ্গল জুনিয়র ডক্টর্স ফ্রন্টে ৫০০০ হাজার টাকা দিয়ে রশিদ না পাওয়ার অভিযোগ করেছেন তিনি। তাঁর অভিযোগ অনেক জুনিয়র চিকিৎসক নিজেদের ব্যক্তিগত অ্যাকাউন্টেও ফান্ডের টাকা নিয়েছেন। এই টাকা কোথায় ব্যবহার হয়েছে জানতে চেয়ে পুলিশের দ্বারস্থ হয়েছেন তিনি। অনিকেত ছাড়া বাকি ৬জন ডিউটিতে থাকার কথা জানিয়ে শনিবার জিজ্ঞাসাবাদের মুখোমুখি হননি। অনিকেত ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে জিজ্ঞাসাবাদের মুখোমুখি হন। তাঁর দাবি, কী অভিযোগ জানায়নি পুলিশ। ফান্ড নিয়ে একাধিক প্রশ্ন করা হয়েছে তাঁকে।