সুমন তরফদার। কলকাতা সারাদিন।
গ্রামীণ অর্থনীতি এবং গ্রামের মানুষের আর্থসামাজিক উন্নতি হলেই চাঙ্গা হবে সামগ্রিকভাবে রাজ্য তথা দেশের অর্থনীতি। বিশ্বের আধুনিক অর্থনীতিবিদদের এই থিওরি মেনেই এবারে রাজ্য বাজেটে বাংলার গ্রামীণ এলাকার পরিকাঠামো উন্নয়নে বিপুল বরাদ্দ করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বাধীন তৃণমূল সরকার ২০২৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনের আগেই গ্রামাঞ্চলের উন্নয়নে বিশেষ নজর দিয়েছে। রাজ্য বাজেটের মাধ্যমে মমতা প্রমাণ করেছেন যে, তার সরকারের মূল লক্ষ্য হল গ্রামীণ উন্নয়ন এবং কর্মসংস্থান সৃষ্টি। এবার বাজেটে বিশেষভাবে গ্রামাঞ্চলের পরিকাঠামো উন্নয়ন, বন্যা প্রতিরোধ এবং আরও বেশি মানুষের জন্য সরকারী সুবিধা প্রদানকে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে।
দফতর হিসেবে দেখতে গেল সবথেকে বেশি বরাদ্দ হয়েছে পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়ন দফতরে। ২০২৪ সালের বাজেটে পঞ্চায়েত এবং গ্রামোন্নয়ন বিভাগের জন্য ২৯,৬০২.৪২ কোটি টাকা বরাদ্দ হয়েছিল। এবার এক লাফে সেই অঙ্কটা পৌঁছে গিয়েছে ৪৪,১৩৯.৬৫ কোটি টাকায়। শুধু এই ক্ষেত্রেই নয় কৃষক এবং কৃষিতে ব্যাপক জোর দিয়েছে বর্তমান তৃণমূল সরকার। বাংলার শাসন ক্ষমতার নির্ধারক বলা হয় গ্রামকে। এবার ভোটের শেষ পূর্ণাঙ্গ বাজেটে মমতা সরকারের ফোকাসে গ্রামেরই উন্নয়ন।
রাজ্য বাজেট ২০২৫-এ মোট প্রস্তাবিত বরাদ্দ অর্থের অঙ্ক হল, ৩ লক্ষ ৮৯ হাজার ১৯৪.০৯ কোটি টাকা (নিট)। একাধিক দফতরে মোটা অঙ্কের বরাদ্দ প্রস্তাব করা হয়েছে এই বাজেটে। এক নজরে দেখে নেওয়া যাক ২০২৫/২৬ অর্থবর্ষের জন্য রাজ্য বাজেটে বিভিন্ন দফতরে কত টাকা বরাদ্দ প্রস্তাব করা হয়েছে।
পথশ্রী প্রকল্পের জন্য ১৫০০ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে এই অর্থ বাজেটে। রাস্তাঘাটের সার্বিক উন্নয়নের জন্য পথশ্রী প্রকল্প আগেই চালু করেছিল সরকার। ২০২৫ সালের বাজেটে সবচেয়ে বড় ঘোষণা রয়েছে গ্রামীণ এলাকার উন্নয়নে ১৫০০ কোটি টাকা বরাদ্দ। এর মধ্যে ৩৭ হাজার কিলোমিটার রাস্তা তৈরি এবং সংস্কারের কাজ অন্তর্ভুক্ত। এর মাধ্যমে গ্রামীণ এলাকার যোগাযোগ ব্যবস্থা শক্তিশালী করা হবে। দীর্ঘদিন ধরে গ্রামে সড়ক নেটওয়ার্কের উন্নয়ন যথাযথ হয়নি, অনেক সময় পঞ্চায়েত বা স্থানীয় ঠিকাদারদের গাফিলতিতে রাস্তাঘাট ঠিকভাবে মেরামত হয় না। সেই সমস্যা সমাধানে এবার রাজ্য সরকার একযোগে কাজ করছে। গ্রামীণ এলাকায় দ্রুত উন্নয়ন কাজ শেষ হলে সাধারণ মানুষের যাতায়াত সহজ হবে এবং অর্থনৈতিক উন্নয়নও ত্বরান্বিত হবে।

এই প্রকল্পে রাজ্যের বহু রাস্তা ইতিমধ্যেই নির্মাণ করা ও সংস্কার করার কাজ হয়েছে। এই প্রকল্পের আরও অর্থ বরাদ্দ বাড়লো বাজেটে। এর ফলে আরও নতুন নতুন রাস্তা নির্মাণ হতে চলেছে বাংলায়। এর জেরে বহু গ্রামীণ এলাকায় আরও নতুন রাস্তা নির্মাণ হতে চলেছে। রাজ্যের পরিবহন ব্যবস্থাকে আরও সচল করার লক্ষ্য রাজ্যের। পরিবহন ব্যবস্থা যাতে সহজে চালু হতে পারে তার জন্য রাস্তা নির্মাণের উপর বিশেষ নজর দিয়েছে রাজ্য সরকার। তার প্রতিফলন ঘটেছে এবারের অর্থ বাজেটে।