সুহানা বিশ্বাস। কলকাতা সারাদিন।
বাংলার সরকারি হাসপাতালে চূড়ান্ত অমানবিক ছবি। ৫ বছরের অসুস্থ শিশুকন্যা বমি করে ফেলায় বাবাকে দিয়ে তা পরিষ্কার করালেন চিকিৎসক। রীতিমতো ঔদ্ধত্যের সুরে নির্দেশ দিলেন তা পরিষ্কার করতে। নদিয়ার শান্তিপুর স্টেট জেনারেল হাসপাতালের (Santipur State General Hospital) ঘটনা। ভিডিয়ো ভাইরাল (Viral Video) হতেই শোরগোল পড়ে গিয়েছে।
ভাইরাল ভিডিয়োয় দেখা যায়, ৫ বছরের মেয়ে হাসপাতালে বমি করে ফেলায় তা রোগীর বাবাকে দিয়ে পরিষ্কার করাচ্ছেন চিকিৎসক। জ্বর ও পেটে ব্যাথা নিয়ে হাসপাতালে মেয়েকে ভর্তি করিয়েছিলেন শান্তিপুরের বাসিন্দা সমীর শীল। হাসপাতালের জরুরি বিভাগে বমি করে ফেলে ৫ বছরের শিশুকন্যাটি। এরপরই দায়িত্বে থাকা চিকিৎসক পরিবারের সঙ্গে অভব্য আচরণ শুরু করে বলে অভিযোগ।
সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল ভিডিয়োতে দেখা যায়, ওই চিকিৎসক মেয়ের বাবাকে নির্দেশ দিয়ে বলছেন, “হাসপাতালে সুইপার নেই। ট্রেনে বাসে আপনার মেয়ে বমি করলে তা কি পরিষ্কার করেন না?” পাল্টা মেয়েটির বাবা বলেন, “সেখানে তো আর সাফাই কর্মী থাকেন না। চিকিৎসক ভগবানসম।”
ওই চিকিৎসক নাছোড়বান্দা হয়ে তারপরেও বলতে থাকেন, সুপারের কাছে কমপ্লেন করুন, যা ইচ্ছে করে নিন। মেয়েটির বাবার অভিযোগ, হাসপাতালে অপেক্ষা করার পর বাচ্চাটি বমি করে ফেলে। চিকিৎসককে বোঝানোর চেষ্টা করলেও উনি মানতে চাননি। বরং আমাকে বমি পরিষ্কার করতে বাধ্য করেন।
এরপর বাধ্য হয়ে হাসপাতালের সুপারের কাছে তিনি বিষয়টি জানিয়ে লিখিত অভিযোগ করেন। শান্তিপুর স্টেট জেনারেল হাসপাতালের সুপার খতিয়ে দেখে পদক্ষেপের আশ্বাস দেন। তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে বলেও জানিয়েছেন তিনি।
ভিডিয়ো ভাইরাল হতেই নিন্দার ঝড় সব মহলে। নড়েচড়ে বসেছে রাজ্যের স্বাস্থ্য দফতরও। সংশ্লিষ্ট মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিককে ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ রাজ্যের। সিএমওএইচের থেকে রিপোর্টও তলব করেছেন স্বাস্থ্যসচিব নারায়ণ স্বরূপ নিগম। যা ঘটেছে, তা ঠিক নয়, অভিযুক্তদের শোকজ করা হবে বলে জানিয়েছে স্বাস্থ্য দফতর। গোটা ঘটনায় চরম ক্ষুব্ধ সরকার। আজই এনিয়ে রিপোর্ট তলব করা হয়েছে। সুপারের কাছে রিপোর্ট চেয়েছেন CMOH-ও।