সুমন তরফদার। কলকাতা সারাদিন।
“দিল্লিতে পদপিষ্ট হয়ে ১৮ জনের মর্মান্তিক মৃত্যু অত্যন্ত হৃদয়বিদারক। নাগরিকদের সুরক্ষার বিষয়টি নিয়ে সবসময় গুরুত্ব সহকারে দেখা উচিত।” এভাবেই দিল্লির রেল স্টেশনে প্রয়াগরাজের কুম্ভ মেলায় যোগ দিতে যাওয়ার জন্য বেরোনো ১৮ পুণ্যার্থীর পদপিষ্ট হওয়ার ঘটনায় কেন্দ্রীয় সরকারকে তাই তো সচেতন হওয়ার বার্তা দিলেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সরাসরি রেল মন্ত্রকের কথা উল্লেখ না করলেও রেল মন্ত্রকের আধিকারিকদের আরো সচেতন হওয়া উচিত ছিল বলেও নিজের সোশ্যাল মিডিয়া পোস্টে বুঝিয়ে দিলেন দেশের প্রাক্তন রেল মন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
সেইসঙ্গে কেন্দ্রের বিজেপি সরকার এবং তার নিয়ন্ত্রণাধীন রেল দপ্তর সহ উত্তর প্রদেশ সরকারেরও তীর্থযাত্রীদের নিরাপত্তার জন্য আরো সতর্ক হওয়া প্রয়োজন বলে মনে করিয়ে দিয়ে মুখ্যমন্ত্রী আরও লেখেন, “মহাকুম্ভে যাওয়ার পথে তীর্থযাত্রীদের সমস্ত সুযোগ সুবিধা পাওয়া কাম্য। এই ধরনের যাত্রা নিরাপদ এবং সুসংগঠিত হয় তা নিশ্চিত করা অপরিহার্য। শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি আমার আন্তরিক সমবেদনা। আহতদের দ্রুত আরোগ্য কামনা করছি।”
প্রসঙ্গত, শনিবার রাত ৯টা নাগাদ নয়া দিল্লি রেলওয়ে স্টেশনের ১৪ ও ১৫ নম্বর প্ল্যাটফর্মে ট্রেন আসতেই হুড়োহুড়ি শুরু হয়। বিশৃঙ্খলার কারণে ওভারব্রিজ ও ১৪ নম্বর প্ল্যাটফর্মের এসকেলেটর বা চলন্ত সিড়ির কাছে বহু যাত্রী ধাক্কা খেয়ে পড়ে যান। এরপরই মর্মান্তিক দুর্ঘটনা ঘটে।
দুর্ঘটনার পর প্রথমে পদপিষ্ট হয়ে মৃত্যুর কথা স্বীকার না করা হলেও, পরে এলএনজেপি হাসপাতালের তরফে জানানো হয়, পদপিষ্ট হয়ে কমপক্ষে ১৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। পরে মৃতের সংখ্য়া বেড়ে ১৮-এ পৌঁছয়। সূত্রের খবর, দুর্ঘটনার সময় আরপিএফ উপস্থিত ছিল না। ভিড়ের মধ্যে প্রথমে ৪ জন মহিলা অজ্ঞান হয়ে যান। ভিড়ের মধ্যেই গুজব ছড়ায় যে দুটি ট্রেন বাতিল হয়ে গিয়েছে। এর জেরে সমস্ত যাত্রীদের ভিড় ১৪ নম্বর প্ল্যাটফর্মেই হয়। এদিকে ১৫ ও ১৬ নম্বর প্ল্যাটফর্মে ট্রেন ঘোষণা হতেই ফের ছোটাছুটি শুরু হয়।
দুর্ঘটনার কারণ নিয়ে কথা বলতে গিয়ে রেলওয়ে পুলিশের ডেপুটি কমিশনার কেপিএস মালহোত্রা বলেন, “১৪ নম্বর প্ল্যাটফর্মে প্রয়াগরাজ এক্সপ্রেস দাঁড়িয়েছিল, প্রচুর মানুষের ভিড় ছিল প্ল্যাটফর্মে। স্বতন্ত্র সেনানী এক্সপ্রেস ও ভুবনেশ্বর রাজধানী এক্সপ্রেস দেরিতে চলছিল। এই দুই ট্রেনে যাত্রীরাও ১২, ১৩ ও ১৪ নম্বর প্ল্যাটফর্মে অপেক্ষা করছিলেন।”
কার্যত মমতার সুরে কেন্দ্রীয় রেল মন্ত্রকের ব্যর্থতাকে দায়ী করেছেন লোকসভার বিরোধী দলনেতা তথা কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী। রাহুল গান্ধী এক্স হ্যান্ডেলে পোস্ট করে লেখেন, “বর্তমানে প্রয়াগরাজে বহু পুণ্যার্থী যাচ্ছেন। এই পরিস্থিতিতে স্টেশনে আরও ভালো ব্যবস্থাপনা করা উচিত ছিল। অব্যবস্থার কারণে যাতে কারও মৃত্যু না হয় সেই দিকে বিশেষ নজর দেওয়া দরকারের প্রশাসনের।”