শোভন গায়েন। কলকাতা সারাদিন।
“বিজেপি কেন ওই পচা মালকে নেবে? কে এসব বলেছে? কবে কথা হয়েছে? কাকে জানিয়েছে? এত দুর্দিন হয়নি বিজেপির। এটা ফালতু কথা। ২০১১-এর পরে আসা মাল…বড় বড় লেকচার দিচ্ছে। কবে থেকে ও রাজনীতি করছে?” অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের নাম না করে এভাবেই তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদকের গতকালের মন্তব্যের তীব্র সমালোচনা করলেন বাংলার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী।
নেতাজি ইন্ডোরের সভা থেকে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিজেপিতে যোগদান নিয়ে জল্পনা প্রসঙ্গে অভিষেক নিজে বলেছিলেন, “খবরে রটিয়ে দেওয়া হচ্ছে আমি নাকি বিজেপিতে যাব। খবরের একশোয় একশোই মিথ্যা। আমি অন্য ধাতুতে তৈরি। বিজেপির বশ্যতা স্বীকার করার লোক আমি নই। আমার গলা কেটে দিলেও সেই কাটা গলা দিয়েই বেরোবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জিন্দাবাদ।”
বৃহস্পতিবার নেতাজি ইন্ডোরের সভা থেকে সরাসরি শুভেন্দু অধিকারীর নাম নিয়ে তাঁকে বিশ্বাসঘাতক বলে তোপ দেগেছিলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। মুকুল রায়কে নিয়েও তীব্র বিষোদগার শোনা যায় তৃণমূল সাংসদের মুখে। অভিষেকের সেই তোপের জবাব এবার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর।
অভিষেক মুকুল ও শুভেন্দু নিয়ে গতকাল বলেন, “দলের সঙ্গে যারা বিশ্বাসঘাতকতা করেছিল, সেই মুকুল-শুভেন্দুদের আমিই চিহ্নিত করেছিলাম।”
মুকুল রায়কে অভিষেকের বেইমান মন্তব্য নিয়েও পাল্টা আক্রমণ করে শুভেন্দু অধিকারী বলেন, “আমি মনে করি এই ছোঁড়াটার এতটুকু মনুষ্যত্ব নেই। মুকুল রায় আজ হাসপাতালে ভর্তি আছেন। তাঁর অবস্থা সংকটনজনক। বিজেপি মুকুল রায়কে কৃষ্ণনগর থেকে জিতিয়ে এনেছিল। তাঁর পুত্রকেও বীজপুর কেন্দ্রে সুযোগ দিয়েছিল। মমতা ব্যানার্জিকে ক্ষমতায় আনার জন্য মুকুল রায়ের বড় ভূমিকা ছিল। মুকুল রায় তৃণমূলে ফিরতে যেতে চাননি। শুভ্রাংশু নিয়ে গেছে ওঁকে। আজ শুভ্রাংশু নেতাজি ইন্ডোরে বসে এটা সহ্য করল কী করে? পিসিকেও হারিয়েছি। একদিন আসবে ওকেও হারাব এবং ভেতরেও ঢোকাব।”

তবে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় শুভেন্দু অধিকারী কে বেইমান ও বিশ্বাসঘাতক বলেছেনহিত করে তৃণমূল থেকে তাড়িয়ে ছিলেন বলে যে দাবি করেছেন তার সম্পূর্ণ মিথ্যে বলে দাবি করে শুভেন্দু অধিকারী তৃণমূল ছাড়ার কারণ ব্যাখ্যা করে বলেন, “ও (অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়) টার্গেট করেছিল। এর কারণ ও বিনয় মিশ্র, প্রতীক দেওয়ান, কুন্তল-শান্তনু, সুজয়কৃষ্ণ ভদ্রদের নিয়ে যে চুরির ব্যবসাটা ফেঁদেছিল, তাতে বাধা দিয়েছিলাম আমি। ২০১১ সালের আগে চেয়ে-চিন্তে তৃণমূল চালাতে হত। ২০১৪ সাল থেকে যে খেলাটা শুরু করেছেন উনি….যত দুর্নীতি…প্রায় ৩ হাজার কোটি টাকার মালিক। এরকম একটা নাবালক ছেলে। চাটার্ড ফ্লাইটে ঘুরে বেড়ায়। এই বেয়াদপ-চোরটার জন্যই তৃণমূল ছেড়েছি আমি। আমি ২১ বছর ধরে তৃণমূল করেছি। মমতা ব্যানার্জি যে এই বাছুরটাকে তুলেছে এটার বিরুদ্ধেই তো আমার প্রতিবাদ ছিল।”