সুমন তরফদার। কলকাতা সারাদিন।
সোমবার দুপুর একটা পর্যন্ত ডেডলাইন দেওয়া হল যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় শাটডাউন ঘোষণার জন্য। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের বাম এবং অতিবাম সংগঠনের ছাত্র-ছাত্রীরা এই ডেড লাইন ঘোষণা করলো। তার মধ্যে আলোচনায় বসার দাবি তুলেছেন তারা। আলোচনায় না বসলে প্রশাসনিক শাটডাউনের হুঁশিয়ারি তাঁরা দিয়েছেন। মামলা প্রত্যাহারের নির্দিষ্ট দাবি তারা তুলেছেন। সোমবার দুপুর পর্যন্ত আন্দোলনকারীরা সময় দিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে।
আজ শুক্রবার যাদবপুর ক্যাম্পাস থেকে নাগরিক সমাজের মিছিল বের হয়। যেখানে সকল ছাত্রছাত্রীরা অংশ নেন। মিছিলে অংশ নেওয়া পড়ুয়াদের অভিযোগ, ঘটনার পর থেকে নানাভাবে পুলিশ হেনস্তা করছে। মিথ্যা মামলা দিচ্ছে। অবিলম্বে সেই মামলা যাতে তুলে নেওয়া হয় সেই দাবি জানানো হয়। না হলে আগামিদিনে আরও বৃহত আন্দোলনে নামার ডাক দেন আন্দোলনকারী ছাত্রছাত্রীরা।
আন্দোলনকারীরা বলেন, আমরা খবর পাচ্ছি একের পর এক পড়ুয়ার বাড়িতে পুলিশের চিঠি যাচ্ছে। এটার প্রতিবাদ আমরা জানাচ্ছি। অভয়া মঞ্চ সহ একাধিক মঞ্চ, শিক্ষকদের একাংশও এই মিছিলে অংশ নিচ্ছেন। মামলা প্রত্যাহারের দাবিতে এই মিছিল। ইন্দ্রানুজ রায়ের বাবাও এই মিছিলে অংশ নিয়েছেন।
ইন্দ্রানুজের বাবা বলেন, ছাত্রদের দাবি অত্যন্ত জরুরী দাবি। ছাত্র সংসদ নির্বাচন সহ শিক্ষার ক্ষেত্রে জড়িত যে দাবি সেটা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। গণতান্ত্রিক পথে এই দাবি আলাপ আলোচনার মাধ্যমে মেটানো হোক। তিনি জানিয়েছেন, ভিসি, প্রোভিসি যোগাযোগ করেছিলেন। তিনি বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় মুক্ত চিন্তার জায়গা। যত দ্রুত আলোচনার দরজা খোলা যাবে ততই জটিলতা কাটবে। যে কোনও বিষয় আলোচনার মাধ্যমে জট কাটবে। সেই সঙ্গেই ছাত্রছাত্রীদের সঙ্গে আলোচনা করা হোক।
অন্যদিকে ঘটনার পর দীর্ঘ সময় কেটে গিয়েছে।
এখনও পড়ুয়াদের সঙ্গে আলোচনায় বসেনি যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। এই অবস্থায় আগামী সোমবার দুপুর ১ টা পর্যন্ত ডেডলাইন কতৃপক্ষকে দিয়েছেন আন্দোলনকারীরা। এই সময়সীমার মধ্যেও আলোচনায় না বসলে প্রশাসনিক শাটডাউনের হুঁশিয়ারি আন্দোলনকারী পড়ুয়াদের।
প্রসঙ্গত সম্প্রতি যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে ওয়েবকুপার একটা অনুষ্ঠানে গিয়েছিলেন শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু। তখনই ব্রাত্যর গাড়ির উপর বাম ছাত্র সংগঠনের তরফে হামলা চালানো হয় বলে অভিযোগ। তাঁর গাড়ির কাঁচ ভেঙে যায়। সেই সময় ব্রাত্যর গাড়ির ধাক্কায় ইন্দ্রানুজ রায় নামে এক ছাত্র আহত হন। এরপর পরিস্থিতি পুরো ঘুরে যায়। ব্রাত্য বসুর বিরুদ্ধে জোরালো আওয়াজ তোলেন ছাত্রছাত্রীদের। তাঁর ইস্তফার দাবিতে সরব হয়েছেন তারা। তবে এবার শেষ পর্যন্ত যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ পড়ুয়াদের সঙ্গে আলোচনায় বসে কি না সেটাই দেখার।
এদিকে ঘটনার প্রতিবাদে পরীক্ষাতেও বসতে চাইছেন না পড়ুয়াদের একাংশ। কার্যত অচলাবস্থা চলছে যাদবপুরে। তবে এসবের মধ্য়েই ইন্দ্রানুজের চোখের পাশের সেলাই কাটা হয়েছে বলে খবর।
এদিকে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ভাস্কর গুপ্ত এখন হাসপাতালে। হাসপাতাল সূত্রে খবর, শারীরিক অবস্থা স্থিতিশীল। তবে এখনও সংকটমুক্ত নন। দু’পায়ের ব্যথার কারণের হাঁটতে সমস্যা হচ্ছে। রক্তচাপ আপাতত নিয়ন্ত্রণে। মাথা ঘোরার সমস্যাও কমেছে।