সুহানা বিশ্বাস। কলকাতা সারাদিন।
আজ দিলু দা-র বিয়ে। বিয়ে করছেন বিজেপি নেতা দিলীপ ঘোষ। সেই নিয়ে এই মুহূর্তে সরগরম বঙ্গ রাজনীতি। গত লোকসভা নির্বাচনে পরাজয়ের পর যখন নিঃসঙ্গ হয়ে পড়েছিলেন দিলীপ, সেই সময় যিনি হাত ধরেছিলেন, তাঁর সঙ্গেই দিলীপ সংসার পাততে চলেছেন বলে খবর। বিষয়টি নিয়ে শোরগোল পড়ে গেলেও, রাজ্য বিজেপি-র নেতারা বিষয়টি নিয়ে তেমন উচ্চবাচ্য করছেন না।
বিজেপি-র মহিলা মোর্চার নেত্রী রিঙ্কু মজুমদারের সঙ্গে সংসার পাততে চলেছেন দিলীপ। শুক্রবার নিউটাউনে দিলীপের ফ্ল্যাটেই রেজিস্ট্রি বিয়ে বলে খবর। পরে সনাতনী রীতি মেনেও সাতপাক ঘুরবেন বলে শোনা যাচ্ছে। (Dilip Ghosh News)
২০২১ সালে রিঙ্কুর সঙ্গে পরিচয় দিলীপের। কলকাতার ইকোপার্কে মর্নিং ওয়াকে গিয়েই পরিচয়। দিলীপের বিয়ে নিয়ে এত শোরগোলের অন্যতম কারণ হল, রাষ্ট্রীয় স্বয়ম সেবক সঙ্ঘের প্রচারক হিসেবে তাঁর সেই পরিচয়। দু’-একটি ব্যতিক্রম থাকলেও, RSS-এর প্রচারকদের সিংহভাগই অবিবাহিত। দিলীপও এতদিন একাকীই জীবন কাটিয়েছেন। এতদিন পর সংসার পাতার সিদ্ধান্ত নিলেন তিনি।
২০১৫ সালে বিজেপি-তে যুক্ত হন দিলীপ। সে বছর ডিসেম্বরে পশ্চিমবঙ্গে বিজেপি-র সভাপতি হন। ২০১৬ সালে খড়্গপুর থেকে বিধায়ক এবং ২০১৯ সালে মেদিনীপুর থেকে জয়লাভ করে সাংসদ হন। রাজনীতিক হিসেবে গরম সংলাপ, ‘ডোন্ট কেয়ার’ মনোভাবের জন্যই বরাবর পরিচিত দিলীপ। কিন্তু তাঁর জীবনে মেঘ নেমে আসে গত বছর। ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনে আচমকা আসন পাল্টে দিলীপকে মেদিনীপুর থেকে বর্ধমান-দুর্গাপুর আসনে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। আসনবদলে মনোকষ্ট লুকিয়ে রাখেননি দিলীপ। দলের কিছু নেতার বিরুদ্ধে সেই সময় ষড়যন্ত্রের অভিযোগও তোলেন দিলীপের অনুরাগীরা।
আসন বদল নিয়ে নিজের মনোকষ্ট গোপন রাখেননি দিলীপ। তাঁর অনুগামীরা দলের অন্দরে ষড়যন্ত্রের অভিযোগ তুলেছিলেন। সেই দুঃসময়ে রিঙ্কু দিলীপের ক্ষতে প্রলেপ দেন বলে খবর। এর পর মায়ের ইচ্ছে মেনে নিয়ে রিঙ্কুর সঙ্গে বিয়েতে রাজি হন দিলীপ। রিঙ্কু বিবাহবিচ্ছিন্না। তাঁর এক পুত্র রয়েছেন। ছেলের অনুমতি নিয়ে বিয়েতে এগোচ্ছেন রিঙ্কুও।

দিলীপকে শুভেচ্ছাবার্তায় ভাসিয়ে দিচ্ছেন রাজনৈতিক ভাবে তাঁর প্রতিপক্ষ, তৃণমূলের নেতারা। (Dilip Ghosh Wedding)
দিলীপের বিয়ের কথা চাউর হতেই সবার আগে কার্যত সোশ্যাল মিডিয়ায় নিজের বার্তা জানান তৃণমূলের রাজ্য সম্পাদক কুণাল ঘোষ। তিনি লেখেন, ‘সূত্রের খবর: আগামী কাল কি রাজ্যের কোনও অবিবাহিত বিজেপি নেতার বিয়ে? রেজিস্ট্রি হচ্ছে? পাত্রী বিজেপি-রই কর্মী? পার্টির একাংশ কি নেতাকে বারণ করছেন? যাই হোক, তিনি পার্টির মতামত উড়িয়ে দিয়ে কি নিজের সিদ্ধান্ত রাখবেন? যদি কাল বিয়েটা হয়, শুভেচ্ছা থাকল। যদি পার্টির বারণ মেনে নেন, তাহলে আলাদা কথা’। সেই সঙ্গে কুণাল আরও লেখেন, ‘দিলীপ ঘোষকে ব্যক্তিগত শুভেচ্ছা। এর মধ্যে রাজনীতি খুঁজবেন না’।