সুহানা বিশ্বাস। কলকাতা সারাদিন।
পাঞ্জাবের ফিরোজপুর সেক্টরের কাছে পাকিস্তানে আটক হওয়া ভারতীয় জওয়ান পূর্ণম কুমার সাউ সুস্থ ও নিরাপদ আছেন বলে হুগলির শ্রীরামপুরের তৃণমূল সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়। কাশ্মীরের পহেলগাঁওয়ে পর্যটকদের গুলি করে হত্যা করেছে জঙ্গিরা। ওই আবহের মধ্যেই পঞ্জাবের ফিরোজপুর সেক্টরের নিকট পাকিস্তানে আটক করে রাখা হয়েছে এক ভারতীয় জওয়ানকে। হুগলি জেলার রিষড়া এলাকার ছেলে পূর্ণম কুমার সাউ। তাঁকে নিয়ে এখন উৎকণ্ঠায় গোটা দেশ তথা বাংলা। চিন্তায় চোখের জল ফেলছেন তাঁর মা। এই আবহে বিএসএফের ডিজিকে ফোন করলেন শ্রীরামপুর লোকসভা কেন্দ্রের সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়। আর তারপরই নিজের ফেসবুকে পোস্ট করলেন, সুস্থ ও নিরাপদ আছেন ওই জওয়ান।
সকালে বিএসএফের ডিজির সঙ্গে কথা বলেন কল্যাণ। ডিজি তাঁকে জানান পূর্ণম সুস্থ রয়েছেন। তাঁকে দেশে ফেরাতে সব ধরনের চেষ্টা করা হচ্ছে।
পরে ফেসবুকে এই খবর জানিয়ে তৃণমূল সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় লিখেছেন, “পূর্ণমকে দেশে ফেরাতে সরকার সব ধরনের চেষ্টা করছে। ডিজি বলেছেন, পূর্ণম সুস্থ ও নিরাপদে আছেন। পাকিস্তান কিছুটা সময় নিচ্ছে, তবে শেষ পর্যন্ত তাকে ফিরিয়ে দেবে বলে আশা করা হচ্ছে।”
মঙ্গলবার কাশ্মীরের পহেলগামে পর্যটকদের নৃশংসভাবে হত্যা করে জঙ্গিরা। এরপরই জঙ্গি নিধনে কড়া পদক্ষেপ করে ভারত। সীমান্তে তল্লাশি অভিযান শুরু হয়। এরই মধ্যে বুধবার ভুল করে পাঞ্জাবের আন্তর্জাতিক সীমান্ত টপকে যান বিএসএফের ১৮২ নং ব্যাটেলিয়নের সদস্য কনস্টেবল পিকে সাউ। তিনি একটি খামারের কাছে ডিউটি দিচ্ছিলেন। রুটিন ভিজিটের সময় সীমান্ত পেরিয়ে পাকিস্তানের ভূখণ্ডে প্রবেশ করেন। অজান্তে এমন কাজ করে ফেললেও সঙ্গে সঙ্গে তাঁরে ফেলেন পাকিস্তান রেঞ্জার্স অর্থাৎ পাকিস্তান সেনার সদস্যরা। সেনা সূত্রে জানা গেছে, সিং ইউনিফর্মে ছিলেন, হাতে ছিল সার্ভিস রাইফেল। তিনি ছিলেন কয়েকজন কৃষকের সঙ্গে, বিশ্রামের জন্য ছায়া খুঁজতে গিয়ে এই ঘটনা হয়। এই ঘটনার পর ভারতীয় সেনা ও পাকিস্তান রেঞ্জার্সের কর্মকর্তারা বিষয়টি সমাধানের জন্য একটি পতাকা বৈঠক শুরু করেন, যাতে ওই জওয়ানকে দ্রুত মুক্তি দেওয়া যায়। তাঁকে দ্রুত ভারতে ফেরানোর চেষ্টা চলছে।
তার মধ্যেই উধমপুরে জঙ্গির গুলিতে বাংলার বীর সন্তান সেনা জওয়ান শহিদ হয়েছেন। মৃত শহিদ জওয়ান ঝন্টু আলি শেখ। আজ, শনিবার নদিয়ার বাড়িতে এল তাঁর কফিনবন্দি দেহ। যার জেরে শোকের ছায়া নেমে এসেছে।
ভুলবশত সেনা জওয়ান বা সাধারণ মানুষের সীমান্ত পেরনোর ঘটনা আগেও হয়েছে। প্রোটোকল অনুযায়ী, পতাকা বৈঠকের পর এমন সমস্যার সমাধান হয়। আটক করা হলেও ছেড়ে দেওয়া হয়। তবে, কাশ্মীরের পহেলগামের কাণ্ডের পর পাকিস্তানের প্রতি কঠোর অবস্থান নিয়েছে ভারত। পাল্টা হুঁশিয়ারি দিয়েছে পাকিস্তানও। ফলে পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে ওই জওয়ানের মুক্তি নিয়ে সংশয় তৈরি হয়েছে বিভিন্ন মহলে।