সুহানা বিশ্বাস। কলকাতা সারাদিন।
২২ এপ্রিল পহেলগাঁও জঙ্গি হামলায় প্রাণ গিয়েছে ২৬ জন পর্যটকের। মৃতদের মধ্যে রয়েছেন রাজ্যেরও তিন বাসিন্দা। রাজ্য সরকার তাঁদের জন্য ইতিমধ্যেই ক্ষতিপূরণের ঘোষণা করেছেন।
এবার এই জঙ্গি হামলা নিয়ে কড়া প্রতিক্রিয়া দিলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। এক্স হ্যান্ডলে পোস্টের মাধ্যমে পাক-অধিকৃত কাশ্মীর পুনরোদ্ধারের ডাক দিয়েছেন তিনি।
সোশ্যাল মিডিয়ায় অভিষেকের সাফ বার্তা, হুমকি নয়, কাজ করে দেখাতে হবে মোদী সরকারকে। পাকিস্তান যে ভাষা বোঝে সেই ভাষাতেই তাকে জবাব দিতে হবে। এক্স হ্যান্ডেলে অভিষেক লিখেছেন, গত কয়েকদিন ধরে সংবাদমাধ্যমের উপরে নজর রেখে চলেছি। পহেলগাঁও হামলার ক্ষেত্রে নিরাপত্তা ব্যবস্থায় গলদের কথা না তুলে কিছু মিডিয়া এমনসব কথা বলেছে যা একটি বিশেষ রাজনৈতিক দলকে সুবিধে করে দেবে। এখন এইসব কাজের সময়ে নয়। সবাইকে রাজনীতির উপরে উঠে এই আঘাতের মোকাবিলা করতে হবে। এটা কোনও সার্জিক্যাল স্ট্রাইকের সময় নয়, পাকিস্তানকে কোনও প্রতীকী হুমকি দেওয়ারও সময় নয়। এটা পাকিস্তানকে সেই ভাষায় শিক্ষা দেওয়ার সময় যে ভাষা ওরা বোঝে। এটা পাক অধিকৃত কাশ্মীর দখল করে নেওয়ার সময় এসেছে।
এদিন এক্স প্ল্যাটফর্মে সাংসদ অভিষেক বন্দ্য়োপাধ্যায় লিখলেন, “গত কয়েক দিন ধরে আমি মুলধারার মিডিয়ার কভারেজ ভালভাবে ফলো করছি। পহেলগামে জঙ্গি হানা, নজিরবিহীন সন্ত্রাসের ঘটনায় দেশের সুরক্ষা ব্যবস্থার ত্রুটি নিয়ে গভীর তদন্ত না করে, কোনও একটা বিশেষ রাজনৈতিক দলের সুবিধা করে দেবে এমনভাবে পুরো ঘটনার বর্ণনা করা হচ্ছে। এখন এসব সংকীর্ণ রাজনীতি করার বদলে, সময় এসেছে সরাসরি ইস্যুটির মোকাবিলা করার। সমাধানটা একেবারে করতে হবে, সবার জন্য করতে হবে। এখন পাকিস্তানকে শুধু আরও সার্জিকাল স্ট্রাইকের মাধ্যমে, বা প্রতীকী হুমকি দিয়ে জবাব নয়, সরাসরি ওদের উচিত শিক্ষা দিতে হবে। পাকিস্তানকে ওদের ভাষাতেই কড়া জবাব দিতে হবে, এবং পাক অধিকৃত কাশ্মীর পুনরুদ্ধারের সময় এসেছে গিয়েছে।”
অভিষেকের মন্তব্য নিয়ে বিজেপি নেতা শমীক ভট্টাচার্য বলেন, প্রথমেই তাঁর বক্তব্যকে স্বাগত জানাচ্ছি। অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় এই মুহূর্তে যে কথাটি বলেছেন সেটাই ভারতের প্রত্যেকটি মানুষের একমাত্র অন্তরের ইচ্ছা। অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় যে দলে রয়েছেন সেই দল যাদের গর্ভ থেকে জন্ম নিয়েছে সেই দলের কারণেই আজকের এই পাক অধিকৃত সমস্যার জন্ম নিয়েছিল। আমি আশা করব ভবিষ্যতে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় একজন দায়িত্বশীল রাজনৈতিক কর্মী হিসেবে তাঁর দলের নেতাকর্মীদের বিভিন্ন ধরনের বিবৃতি থেকে বিরত রাখবেন। তাদের যে বিবৃতি আসছে তা পাকিস্তানের বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত হচ্ছে। এর আগেও তৃণমূল কংগ্রেসের বিভিন্ন বক্তব্য পাকিস্তানের বিভিন্ন ম্যাগাজিনের প্রথম পাতার খবর হয়েছিল। তবে তিনি যে চিন্তা করেছেন পিওকে সম্পর্কে তাকে কারও রাজনীতি করা উচিত নয়।
পহেলগামে জঙ্গি হামলার ঘটনায় তথাকথিত মূলধারার মিডিয়ায় কভারেজ নিয়ে প্রশ্নে দেশের বিরোধী নেতারা। লোকসভার বিরোধী দলনেতা রাহুল গান্ধী জানিয়েছিলেন, দেশের সব বিরোধী দলেরা কেন্দ্রীয় সরকারের সঙ্গে আছে। মোদী সরকার পাকিস্তানের বিরুদ্ধে যে সিদ্ধান্তই নিক বিরোধী দলেরা পাশে আছে বলে কংগ্রেসের শীর্ষ নেতা তথা রাহুল গান্ধী জানিয়েছেন। তবে পাকিস্তানের ওপর হামলার দাবির সঙ্গে বিরোধী দলগুলি পহেলগামে নিরাপত্তা ব্যবস্থার গাফিলতি নিয়েও সরব হয়েছে।