বিতস্তা সেন। কলকাতা সারাদিন।
“সার্জিক্যাল স্ট্রাইক যেমন ওখানে চলছে, ২০২৬এ বাংলার ভিতরেও এই ভারত বিরোধী টুকরে টুকরে গ্যাঙের উপর সার্জিক্যাল স্ট্রাইক করা উচিত।” এভাবেই শুক্রবার সিপিএম সহ বাংলায় বিজেপি বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলিকে তীব্র আক্রমণ করলেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী।
পহেলগাঁওতে জঙ্গি হামলা, তার জেরে ভারত পাকিস্তান সীমান্তে যুদ্ধ যুদ্ধ পরিস্থিতি। চড়ছে উত্তেজনার পারদ। কিন্তু এই যুদ্ধ আবহে বাংলার রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে তৈরি হয়েছে সমান্তরাল বিভাজন! সিপিএম প্রথম থেকেই তার অবস্থান স্পষ্ট করেছে, যে তারা যুদ্ধের পক্ষে নয়। সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম ও বর্ষীয়ান নেতা বিমান বসু সে কথা আগেই স্পষ্ট করেছেন। একই কথা বলেছেন সিপিএম নেতা তথা আইনজীবী বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য।
সিপিএম নেতা বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্যের বক্তব্য, “সন্ত্রাসবাদ দমনের জন্য সরকার যা যা ইতিবাচক পদক্ষেপ করবে, আমরা সমর্থন করব। কিন্তু জঙ্গিবাদ নয়। ফেসবুক-হোয়াটসঅ্যাপে দাবি উঠছে পাকিস্তানকে উড়িয়ে দেও, এটা সভ্য সমাজে বলা যায় না।”
এই পরিস্থিতিতে সিপিএম তথা উগ্র বামপন্থী দলগুলিকে কার্যত রাষ্ট্রবিরোধী তকমা দিয়ে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। রীতিমতো হুমকির সুরে বললেন, “ক্ষমতায় এলে যাদবপুর থেকে ওদের চুলের মুঠি ধরে উৎখাত করব।” সেই সঙ্গে শুভেন্দুর হুঁশিয়ারি, “বিজেপিকে যদি বাংলায় মানুষ আনে, ২৪ ঘণ্টার মধ্যে যাদবপুর থেকে তাদের চুলের মুঠি ধরে পিটাতে পিটাতে ভারতবর্ষের সীমান্তের বাইরে নিয়ে গিয়ে পাকিস্তানে ড্রোনে বেঁধে ফেলে দিয়ে আসব।”
সিপিএমের দলীয় মুখপত্র গণশক্তি পত্রিকা নিয়ে বিরোধী দলনেতা বলেন, “এই পত্রিকা ঝালমুড়িতেও লাগে না, পশুর বিষ্ঠা ফেলতে এই পত্রিকা কাজে লাগায় না কেউ। তাদের গত দুদিন যে হেডলাইন হয়েছে বাংলাদেশকে পাকিস্তানের পত্রিকা কে লজ্জা দেবে। দেশের প্রধানমন্ত্রী যুদ্ধকালীন পরিস্থিতিতে গত ৬ তারিখে মক ড্রিলের কথা বলেছিলেন। সিপিএম চ্যাংড়া নেতারা বারবার এরা ভোটে হারে এবং সিকিউরিটি পয়সা ফেরত পায় না, তাঁরা কটাক্ষ করেছিল। ৭ তারিখে অপারেশন সিঁদুর হবার পর চুপ। ঈদের পর থেকে সোশ্যাল সাইট দেখুন নরেন্দ্র মোদিকে নিয়ে খিল্লি করেছে। এদের মুখ চুন হয়েছে অপারেশন সিঁদুর হওয়ার পর তিরঙ্গা। এরা তিরঙ্গা মিছিল করবেন না। ইনসাফ মিছিলে পাবেন না এদের। অথচ প্যালেস্টাইনে বোমা পড়লে এরা রাস্তায় নেমে পড়েন। সার্জিকাল স্ট্রাইক যেমন পাকিস্তানে চলছে তেমনি ২০২৬-এর ভারত বিরোধী টুকরে টুকরে গ্যাং উপরে সার্জিক্যাল স্ট্রাইক করা উচিত।”
শুক্রবার বিধানসভার বাইরে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে এই মন্তব্য করেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। তিনি বিধানসভায় কবিগুরু ও রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ১৬৫তম জন্মজয়ন্তীতে শ্রদ্ধার্ঘ্য জানাতে এসেছিলেন। সেখানেই কার্য তো নজিরবিহীন ভাবে পশ্চিমবঙ্গ পুলিশের ভূমিকার প্রশংসা করে শুভেন্দু বলেন, “বাংলার অনেক জায়গা থেকেই পাকিস্তান প্রেমীদের খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে। তাঁদের সোশ্যাল মিডিয়া পোস্টের ওপর ভিত্তি করে ইতিমধ্যেই গ্রেফতার করা হচ্ছে। সেক্ষেত্রে রাজ্য পুলিশ সক্রিয় ভূমিকা পালন করে তাঁদের গ্রেফতার করছে। আসলে এটা এখন এমন পরিস্থিতি, সেখানে রাষ্ট্রের নিরাপত্তার স্বার্থে সকলকে একসঙ্গে কাজ করতে হবে।”