শোভন গায়েন। কলকাতা সারাদিন।
আলিপুরদুয়ারের প্রাক্তন বিজেপি সাংসদ ও কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী জন বার্লা তৃণমূলে যোগ দেওয়ার পরেই তাঁকে আইনি নোটিশ পাঠিয়েছেন পশ্চিমবঙ্গের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। বৃহস্পতিবার তৃণমূলে যোগ দিয়ে জন বার্লা শুভেন্দু অধিকারীর বিরুদ্ধে জনহিতকর কাজে বাধা দেওয়ার যে অভিযোগ তুলেছিলেন, তার বিরুদ্ধেই এই আইনি পদক্ষেপ নিয়েছেন শুভেন্দু।
এরপর শুভেন্দুর নিশানায় প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী। জন বার্লার অভিযোগকে “ভিত্তিহীন, অসত্য ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত” বলে নস্যাৎ করেছেন শুভেন্দু অধিকারী। তিনি দাবি করেন, তাকে আক্রমণ করাটা এখন তৃণমূলের নিয়মিত কাজ হয়ে দাঁড়িয়েছে এবং এই কারণেই তিনি মনে করেন যে তিনি সঠিক পথেই আছেন। শুভেন্দু বলেন, জন বার্লা চার বছরের মন্ত্রী এবং পাঁচ বছরের সাংসদ ছিলেন, অথচ তিনি এখন অভিযোগ করছেন যে শুভেন্দু তার প্রকল্প আটকে দিয়েছেন, যা সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন।
রাজ্যের বিরোধী দলনেতা বলেন, “দল পুনরায় মনোনয়ন না দেওয়ায় উনি দল বদল করে চোরেদের দলে নাম লিখিয়েছেন, বিনিময়ে ওনার নতুন দলের মালিক, যাঁকে আমি ২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনে নন্দীগ্রামে ১৯৫৬ ভোটে পরাজিত করেছিলাম, ওনাকে খুশি করতে আমার বিরুদ্ধে কোনও প্রমাণ ছাড়া উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ভাবে সম্পূর্ণ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন অভিযোগ উত্থাপন করেছেন। তিনি আগে থেকে আই-প্যাক এর লিখে দেওয়া চিত্রনাট্য মুখস্ত করে সর্বসমক্ষে আওড়েছেন। এই মিথ্যা বক্তব্যের বিরুদ্ধে আমি আমার আইনজীবী শ্রী সূর্যনীল দাসের মাধ্যমে ওনাকে একটি আইনি নোটিশ পাঠিয়েছি।”
শুভেন্দু অধিকারীর আইনজীবী সূর্যনীল দাসের মাধ্যমে পাঠানো এই আইনি নোটিশে জন বার্লার কাছে তিনটি মূল দাবি জানানো হয়েছে। প্রথমত, জন বার্লাকে আগামী ৭ দিনের মধ্যে লিখিতভাবে ও প্রকাশ্যে নিঃশর্ত ক্ষমাপ্রার্থনা করতে হবে। দ্বিতীয়ত, এই ক্ষমাপ্রার্থনা ইংরেজি ও বাংলা সংবাদপত্র এবং সংশ্লিষ্ট মিডিয়া চ্যানেলে প্রকাশ করতে হবে। তৃতীয়ত, ভবিষ্যতে শুভেন্দু অধিকারীর বিরুদ্ধে কোনো মানহানিকর বা ইঙ্গিতপূর্ণ মন্তব্য না-করার প্রতিশ্রুতি দিতে হবে। শুভেন্দু তার ফেসবুক পোস্টে জানিয়েছেন, এই দাবিগুলি পূরণ না-হলে তিনি দেওয়ানি ও ফৌজদারি আইনি পদক্ষেপে যেতে বাধ্য হবেন।
জন বার্লা বৃহস্পতিবার আলিপুরদুয়ারে তৃণমূলে যোগদানের মঞ্চে অভিযোগ করেছিলেন যে, চা-বাগানে হাসপাতাল তৈরির মতো প্রকল্প তিনি চালু করতে চেয়েও দলের ভিতর থেকে বাধা দেওয়ায় তা করতে পারেননি। এই প্রেক্ষিতে বিজেপির অন্দরের অসন্তোষের অভিযোগ তুলে শুভেন্দু অধিকারী কটাক্ষ করে বলেন, “যাঁরা নাটক করতে আসছেন, তাঁরা যেন না-ভোলেন যে এই মঞ্চে আমি এখনও আছি এবং আমি একাই অনেক।”