শৌভিক তালুকদার। কলকাতা সারাদিন।
সভ্যতার ইতিহাসে লেনদেনের বিবর্তনের উল্লেখও মেলে। বিনিময় প্রথা থেকে কড়ি, সূচ হয়ে ধাপে ধাপে এসেছে ধাতব মুদ্রা, কাগজের নোট।
আজকের দিনে টাকার মূল্য দুনিয়ায় সবচেয়ে বেশি। টাকা ফেললে সবকিছুই কেনা যায়। কিন্তু ব্যবসায়ী নিখিল কামাতের মতে, এমন একটা সময় আসবে, টাকার কোনও মূল্য থাকবে না। টাকার চেয়েও মূল্যবান হয়ে উঠবে অন্য কিছু।
Zerodha-র সহ-প্রতিষ্ঠাতা নিখিল কামাতের দাবি, আগামী ১০ বছরের মধ্যেই টাকার চেয়ে বেশি মূল্যবান হয়ে উঠবে বিদ্য়ুৎ। এমনকি টাকা বা ডলারের পরিবর্তে বিদ্যুৎ এবং তড়িৎ পরমাণু মুদ্রা হিসেবে ব্যবহৃত হবে বলে মত নিখিলের।
সোশ্য়াল মিডিয়ায় নিজের মতামত তুলে ধরেছেন নিখিল। তাঁর কথায়, ‘আজ থেকে ১০ বছর পর, বিদ্যুৎ এবং ইলেকট্রনই লেনদেনের মুদ্রা হয়ে উঠতে পারে’।
পৃথিবীর সর্বত্র যেভাবে ডেটা সেন্টার গড়ে উঠছে, পৃথিবী যেভাবে AI নির্ভর হয়ে উঠছে, তাতে এমনটা হওয়া অনিবার্য বলে মত নিখিলের। তাঁর মতে, বিদ্যুতের জোগান ছাড়া ভবিষ্যতে AI নির্ভর দুনিয়া গড়ে উঠতে পারবে না। তাই টাকার চেয়েও মহার্ঘ্য হয়ে উঠবে বিদ্যুৎ।
সমস্ত ডিজিটাল কনটেন্ট, লেখালেখি হোক বা ভিডিও, অনলাইন লেনদেন হোক বা ChatGPT-র মতো AI Tool, সব যেখানে মজুত থাকে, তাকে বলা হয় ডেটা সেন্টার। ওই ডেটা সেন্টার সার্ভারে ঠাসা থাকে। ওই সার্ভারই সমস্ত তথ্য মজুত রাখে এবং পরিচালনা করে। কম্পিউটার চলতে থাকে যেমন, তেমনই যন্ত্রপাতি সচল ঠান্ডা রাখতে চলে শীতাতপ নিয়ন্ত্রণ যন্ত্রও। আর তার জন্য ২৪ ঘণ্টা পর্যাপ্ত বিদ্যুৎ সরবরাহ থাকতে হয়।
পরিসংখ্যান বলছে, এই মুহূর্তে ডেটা সেন্টারগুলির মোট খরচের ৬৫ শতাংশই বিদ্যুতে যায়। একটি ডেটা সেন্টার চালাতে সারাবছর যে পরিমাণ বিদ্য়ুৎ খরচ হয়, তা ৪ লক্ষ বিদ্যুৎচালিত গাড়ির চেয়েও বেশি। পৃথিবীতে যত শক্তি উৎপাদিত হয়, তার ১.২০২৩ সালে আমেরিকার ডেটা সেন্টারগুলিতেই ৪.৪ শতাংশ বিদ্যুৎ খরচ হয়। ২০২৮ সাল নাগাদ তা ১২ শতাংশ হতে পারে। কিন্তু এই ডেটা সেন্টারগুলি বন্ধ করা কোনও ভাবেই সম্ভব নয়। কারণ AI-এর আগমনের ফলে ওই ক্ষেত্রে বিনিয়োগও বাড়ছে। শুধুমাত্র AI থেকেই ভারতের GDP-তে ৪০০ বিলিয়ন ডলার যোগ হচ্ছে বলে মিলেছে পরিসংখ্যান।৫ শতাংশ এই মুহূর্তে ডেটা সেন্টারগুলিতে যায়। ২০৩০ সাল নাগাদ এই হার বেড়ে ১০ শতাংশ হতে পারে।
২০২৩ সালে আমেরিকার ডেটা সেন্টারগুলিতেই ৪.৪ শতাংশ বিদ্যুৎ খরচ হয়। ২০২৮ সাল নাগাদ তা ১২ শতাংশ হতে পারে। কিন্তু এই ডেটা সেন্টারগুলি বন্ধ করা কোনও ভাবেই সম্ভব নয়। কারণ AI-এর আগমনের ফলে ওই ক্ষেত্রে বিনিয়োগও বাড়ছে। শুধুমাত্র AI থেকেই ভারতের GDP-তে ৪০০ বিলিয়ন ডলার যোগ হচ্ছে বলে মিলেছে পরিসংখ্যান।
সব মিলিয়ে আমেরিকার ৩৬৮০টি ডেটা সেন্টার রয়েছে। এর পরই রয়েছে জার্মানি, ব্রিটেন এবং চিন। ভারতের মোট ডেটা সেন্টারের সংখ্য়া ২৬৪টি। পৃথিবীর ২০ শতাংশ ডেটা ভারতই পরিচালনা করে, যার ভরকেন্দ্র মুম্বই. চেন্নাই, নয়ডা, বেঙ্গালুুরু, পুণে এবং হায়দরাবাদের মতো শহর।
এমন পরিস্থিতিতে পরিবেশ নিয়েও উদ্বেগ দেখা দিয়েছে। চাহিদার জোগান দিতে গিয়ে যে পরিমাণ বিদ্যুৎ উৎপন্ন করা হচ্ছে, তাতে পরিবেশের ক্ষতি হচ্ছে। তাই সবুজ শক্তি উৎপাদনের উপর জোর দিচ্ছেন পরিবেশকর্মীরা।