শোভন গায়েন। কলকাতা সারাদিন।
“কোথায় লুকিয়ে দিলেন নির্যাতিতা ছাত্রীকে?” জাতীয় মহিলা কমিশনের সুরেই সুর মিলিয়ে বাংলায় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং কলকাতা পুলিশের শীর্ষ আধিকারিকদের উদ্দেশ্যে প্রশ্ন ছুড়ে দিলেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী।
কসবা-কাণ্ডের প্রতিবাদে দফায় দফায় চলছে বিক্ষোভ। শনিবার রাতেও প্রতিবাদ করতে গিয়ে গ্রেফতার হন সুকান্ত মজুমদার, সজল ঘোষরা। এরপর বৃহত্তর আন্দোলনে নেমেছে বঙ্গ বিজেপি।
রবিবার মশাল সহযোগে গোলপার্ক থেকে গড়িয়াহাট পর্যন্ত মিছিলের ডাক দিয়েছিল বিজেপি। শুভেন্দু অধিকারীর নেতৃত্বে হয় সেই মিছিল। সেখান থেকেই শুভেন্দু অধিকারী মুখ্যমন্ত্রী এবং কলকাতার পুলিশ কমিশনারের উদ্দেশ্যে প্রশ্ন ছুঁড়ে দিয়ে বলেন, “কোথায় লুকিয়ে দিলেন নির্যাতিতা ছাত্রীকে? কোথায় লুকিয়ে দিলেন তাঁর বাবা-মাকে? দেখা করতে দিতেই হবে।”

ইতিমধ্যেই কসবার ঘটনার নিরপেক্ষ তদন্তের দাবিতে বিশেষ ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং টিম তৈরি করেছে কেন্দ্রীয় বিজেপি নেতৃত্ব। সোমবার রাজ্যে আসছে বিজেপির তদন্ত কমিটি। জে পি নাড্ডার সঙ্গেও এই বিষয়ে কথা হয়েছে বলেও দাবি করেছেন শুভেন্দু। তাঁর স্পষ্ট বক্তব্য, নির্যাতিতার পরিবারের সঙ্গে পুলিশকে দেখা করতে দিতে হবে।
এছাড়া কসবা-কাণ্ডকে সামনে রেখে ফের একবার নবান্ন অভিযানের ডাক দেওয়ার কথা বলেছেন শুভেন্দু। তিনি জানিয়েছেন, আগামী ৯ অগাস্ট তিলোত্তমার বাবা-মায়ের সঙ্গে দেখা করে নবান্ন অভিযানের ডাক দেওয়ার আর্জি জানাবেন। রাজনৈতিক স্বার্থ দূরে সরিয়ে শুভেন্দু অধিকারী যোগ দেবেন বলে এদিন দাবি করেন।
কসবা-কাণ্ডে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর নেতৃত্বে মিছিল হয়। ‘কন্যা সুরক্ষা যাত্রা’ নামে হয় সেই মিছিল। সেই মিছিল থেকে তৃণমূল সরকার তথা পুলিশকে কড়া বার্তা দেন শুভেন্দু।
আগামী ২ জুলাই যুব মোর্চার ডাকে কসবা অভিযানের ডাক দিয়েছেন শুভেন্দু। পুলিশ অনুমতি না দিলে হাইকোর্ট থেকে অনুমতি আদায় করা হবে বলেও জানিয়েছেন তিনি। বিরোধী দলনেতা বলেন, ‘২ তারিখ কসবা ঢুকবই। হাজার হাজার মানুষ নিয়ে আসুন।’ একটানা বিক্ষোভ চলবে, আগামিকালও বিক্ষোভ কর্মসূচির ডাক দেওয়া হয়েছে বিজেপির তরফে।
কসবা ল’ কলেজে ছাত্রীকে গণধর্ষণ এবং নদিয়ার কালীগঞ্জের সাম্প্রতিক নারী নির্যাতনের ঘটনাকে কেন্দ্র করে রাজ্য রাজনীতিতে প্রতিবাদ ও বিক্ষোভের আগুন ছড়িয়ে পড়েছে। এবার দক্ষিণ কলকাতায় পথে নামল কংগ্রেস। আজ, রবিবার খিদিরপুর ও মোমিনপুর থেকে কংগ্রেসের পক্ষ থেকে এক প্রতিবাদ মিছিল বের করা হয়। কসবা এবং কালীগঞ্জের দুটি পৃথক নারী নির্যাতনের ঘটনার প্রতিবাদে কংগ্রেস এই মিছিলের আয়োজন করেছে। রাজ্যের নারী নিরাপত্তা পরিস্থিতি এবং আইনশৃঙ্খলা ব্যবস্থা নিয়ে প্রশ্ন তুলে শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেসকে কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়েছে কংগ্রেস নেতৃত্ব।
তাদের দাবি, রাজ্যে মহিলাদের উপর ক্রমবর্ধমান নির্যাতন বন্ধ করতে সরকার ব্যর্থ। এই মিছিলের মাধ্যমে কংগ্রেস এই জঘন্য অপরাধগুলির দ্রুত ও দৃষ্টান্তমূলক বিচার দাবি করছে।