সুহানা বিশ্বাস। কলকাতা সারাদিন।
অর্থনৈতিক ভাবে পিছিয়ে থাকা মানুষের জন্য বিশেষ আবাসন প্রকল্পের উদ্বোধন করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সরকারি জমিতে নিউটাউনে বহুতল আবাসন তৈরি করা হয়েছে। লটারির মাধ্যমে, স্বচ্ছ প্রক্রিয়ায় সেখানে ফ্ল্যাট কেনা যাবে বলে জানিয়েছেন। মমতা জানিয়েছেন, আবাসন প্রকল্পে রাজ্যের প্রাপ্য টাকা আটকে রেখেছে কেন্দ্র। নিজের টাকাতেই সকলের মাথাগোঁজার ব্যবস্থা করেছে রাজ্য সরকার।
নিউটাউনে বিশ্ববাংলা কনভেনশন সেন্টারের পাশে পার্কিং-সহ বহুতল আবাসন প্রকল্পের ছবি এদিন সামনে আনেন মমতা। অর্থনৈতিক ভাবে দুর্বল ও পিছিয়ে পড়া শ্রেণির মানুষের জন্য ‘নিজন্ন’ আবাসনের উদ্বোধন করেন মমতা। জানান, ‘নবান্ন’র সঙ্গে মিলিয়েই এই নাম রাখা হয়েছে। বহুতল আবাসনটি ৭ একর জায়গা জুড়ে অবস্থিত। ৩০০ স্কোয়্যার ফিটের ৪৯০ টি ১ বিএইচকে ফ্ল্যাট রয়েছে সেখানে।
এর পাশাপাশি,স্বল্পবিত্ত, তুলনামূলক কম রোজগার যাঁদের, তাঁদের জন্য ‘সুজন্ন’ আবাসনের উদ্বোধন হয়। ৭ একর জায়গা জুড়ে তৈরি বহুতল ওই আবাসনে ৬২০ স্কোয়্যার ফিটের ৭২০টি 2 বিএইচকে ফ্ল্যাট রয়েছে। প্রকল্পের উদ্বোধন করে মমতা বলেন, “পাঁচটি প্রকল্পে ৪৫৫ কোটি ৫০ লক্ষ টাকা খরচ হয়েছে। কাজগুলি সম্পন্ন হয়েছে। নিউটাউনে দরিদ্র মানুষের জন্য, যাঁদের আয় স্বল্প, তাঁদের জন্য দু’টো বড় আবাসন প্রকল্প হয়ে গিয়েছে। অর্থনৈতিকভাবে পিছিয়ে পড়া এবং নিম্নবিত্তদের জন্য সাত একর জমিতে ২৯০ কোটি টাকা খরচ করে আবাসন তৈরি করা হয়েছে। অনেক মানুষের মাথাগোঁজার ঠাঁই হবে।”

মমতার কথায়, “অর্থনৈতিক ভাবে দুর্বল শ্রেণির জন্য নিজন্ন তৈরি হয়েছে। ১৫ তলার আবাসন। নবান্নের সঙ্গে মিলিয়ে নাম রাখা হয়েছে। কারণ সেটা নিজেদের হয়ে যাবে। স্বল্প আয় অর্থাৎ নিম্ন আয়ের ব্যক্তিদের জন্য ১৬ তলার সুজন্ন আবাসন তৈরি হয়েছে। এখানে ৭২০টি ফ্ল্যাট রয়েছে। মোট ১২১০টি ফ্ল্যাট তৈরি করা হয়েছে। যাঁরা অর্থনৈতিক ভাবে দুর্বল, স্বল্প আয় যাঁদের, জমি কিন্তু সরকার দিয়েছে। জমির দাম নেওয়া হয়নি। পাশাপাশি, ভর্তুকি দিয়ে বাজারের চেয়ে অনেক কম দামে ফ্ল্যাটগুলি পাবেন। লটারি করে, স্বচ্ছতার মধ্যে দিয়ে বিলি হবে ফ্ল্যাটগুলি। রাজারহাটে ৭ একর জমির দাম অনেক। বিনামূল্যে ওই জমি দিয়েছে রাজ্য। আমরা চাই প্রত্যেক মানুষের মাথার উপর নিজস্ব ছাদ থাকুক, নিজের আশ্রয় থাকুক। আমরা চেষ্টা করেছি, কয়েক বছরের মধ্যে ৪৫ লক্ষ বাড়ি করেছি গ্রামীণ আবাস যোজনায়। পাঁচ বছর পর পর এক নম্বরে ছিলাম আমরা। গ্রামে রাস্তাতেও তাই ছিলাম। কিন্তু গত চার-পাঁচ বছরে এক পয়সাও দেয়নি কেন্দ্র। এখন সব বন্ধ। পাওনা টাকা পাচ্ছি না। তার পরও ১২ লক্ষ বাংলার বাড়ির টাকা রাজ্যের কোষাগার থেকে দেওয়া হয়েছে। ১৬ লক্ষ মানুষ আরও যাঁরা তালিকায় আছেন. ডিসেম্বরে এক কিস্তি পেয়ে যাবেন, দ্বিতীয় কিস্তি পাবেন মে মাসে। বাকি যা থাকবে, ধাপে ধাপে করে দেব।”

পাশাপাশি, বহুতল পার্কিং ‘সুসম্পন্ন’র উদ্বোধনও করেন মমতা। ৮০ তলার ওই অত্যাধুনিক বহুতল পার্কিং কমপ্লেক্স গড়ে তোলা হয়েছে। শিশুদের জন্য বিনোদন পার্ক ‘তরণ্য’রও উদ্বোধন করেন মমতা। দ্বিতল ক্যাফেটেরিয়া, ২০০ আসন বিশিষ্ট মুক্তমঞ্চ, বিনোদন পার্ক রয়েছে সেখানে।
জলপাইগুড়িতে জল্পেশ মন্দির যাওয়ার পথে নদীর উপর তৈরি দু’টি নবনির্মিত সেতু ও জল্পেশ মেলাপ্রাঙ্গন থেকে জল্পেশ মন্দিরের শিব চতুর্দশী দ্বার পর্যন্ত নতুন সেতু ও উভয় দিকে রাস্তার উদ্বোধনও করেন এদিন।