সুমন তরফদার। কলকাতা সারাদিন।
রাস্তায় সরকারি বাস বাড়াতে উদ্যোগ নবান্নের। অস্থায়ী ভিত্তিতে নিয়োগ হতে চলেছে চালক ও কন্ডাক্টর। রাজ্য পরিবহণ নিগম ৮৭৮ জনকে নিয়োগ করছে। তার জন্য বাজেট অধিবেশনের আগে নিয়োগে ছাড়পত্র দিল রাজ্য সরকার।
নবান্নে সোমবার রাজ্য মন্ত্রিসভার বৈঠকে ৬০টি স্থায়ী পদ তৈরি এবং প্রায় ৯০০ চালক-কনডাক্টর নিয়োগে ছাড়পত্র মিলেছে বলে সূত্রের খবর। তিন বিভাগে স্থায়ী পদ তৈরি করে নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু হবে। পাশাপাশি, সরস্বতী পুজোর দিন এলাকায় এলাকায় মন্ত্রীদের নজরদারি করতে নির্দেশ দেন মুখ্যমন্ত্রী। সম্ভাব্য কোনও অপ্রীতিকর পরিস্থিতির মোকাবিলায় তৈরি থাকার জন্য মন্ত্রীদের উদ্দেশে তাঁর বার্তা, ”সকলে এলাকা দেখে রাখবেন, সতর্ক থাকবেন। কোনও সমস্যা হলে প্রশাসনকে খবর দিন।”
আগামী ১০ ফেব্রুয়ারি রাজ্যের বাজেট অধিবেশন শুরু। সূত্রের খবর বাজেটে লক্ষ্মীর ভাণ্ডার-সহ জনপ্রিয় প্রকল্পগুলি নিয়ে ঘোষণা থাকতে পারে। কারণ এটাই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের তৃতীয় মেয়াদের সরকারের শেষ পূর্ণাঙ্গ বাজেট। তাই বাজেটে বড় কোনও ঘোষণা থাকতে পারে বলেও মনে করেছে বিশেষজ্ঞরা।
এমন পরিস্থিতিতে এদিন ছিল মন্ত্রিসভার বৈঠক। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উপস্থিতিতেই ঠিক হয় স্বরাষ্ট্র, মহিলা ও শিশু কল্যাণ এবং আইন বিভাগে ৬০টি স্থায়ী পদ তৈরি করা হবে। সেখানে নিয়োগ প্রক্রিয়ায়ও শুরু হবে দ্রুত। এর পাশাপাশি রাস্তায় সরকারি বাস বাড়াতে নিয়োগ হবে চালক ও কনডাক্টরও। জানা গিয়েছে, ৫০-৫০ ফমুর্লা মেনে চুক্তিভিত্তিক এই নিয়োগ হবে।
রাস্তায় বেসরকারি বাসের সংখ্যা কমেছে। নিয়ম না মেনে অতিরিক্ত ভাড়া নেওয়ার অভিযোগও উঠছে বারবার। হয়রানি বেড়েছে নিত্যযাত্রীদের। যা নিয়ে খোদ মুখ্যমন্ত্রীর কাছে ধমক খেয়েছিলেন পরিবহণ মন্ত্রী স্নেহাশিস চক্রবর্তী। নবান্ন সভাঘরে প্রশাসনিক বৈঠকে মমতা বলেছিলেন, “তুমি একজন মন্ত্রী। মানুষ যাতে ভালোভাবে অফিস যেতে পারেন এবং বাড়ি ফিরতে পারেন তা তোমাকে দেখতে হবে।” ব্যস্ত সময়ে এলাকা-এলাকায় পরিদর্শনের নির্দেশ দিয়েছিলেন। এরপরই ভিজিট করেছেন স্নেহাশিস।
এরপরই দপ্তরের তরফে চালক-কনডাক্টর নিয়োগ চেয়ে নবান্নকে চিঠি দেওয়া হয়। সেকথা মাথায় রেখেই এদিন নিয়োগে ছাড়পত্র দেওয়া হল বলে সূত্রের দাবি। পাশাপাশি সোমবার নবান্নে মন্ত্রিসভার বৈঠকে সন্তোষ ট্রফিতে জয়ী ফুটবলারদের জন্য বড় প্রস্তাব দেওয়া হল। এদিন বৈঠকে ফুটবলারদের পুলিশ কর্মী হিসেবে নিয়োগের জন্য পদ সৃষ্টির প্রস্তাব দেওয়া হল। অর্থাৎ, এবার থেকে বাংলায় সন্তোষ ট্রফি এনে দিলেই সরাসরি পুলিশে নিয়োগ পাবেন ফুটবলাররা। প্রসঙ্গত, সন্তোষ ট্রফির ফাইনাল ম্যাচে কেরলের বিরুদ্ধে বাংলার হয়ে জয়সূচক গোলটি করেন রবি হাঁসদা। কলকাতায় ফিরেই একাধিক সম্মাননা ও সংবর্ধনা দেওয়া হয় জয়ী ফুটবলারদের। তারপরেই ধনধান্য প্রেক্ষাগৃহে তাঁদের হাতে নিয়োগপত্র তুলে দেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
২০২৬ সালের এপ্রিল – মে মাসে পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভা নির্বাচন হওয়ার কথা। তার আগেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের তৃতীয় দফার মুখ্যমন্ত্রিত্বের শেষ পূর্ণাঙ্গ বাজেট এটি। কারণ আগামী বছর ভোট থাকায় ‘ভোট অন অ্যাকাউন্ট’ পেশ করবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার। চলতে বছর ১ ফেব্রুয়ারি সংসদে ২০২৫-২৬ অর্থবর্ষের বাজেট প্রস্তাব বেশ করবেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর মেয়াদের এটাই প্রথম পূর্ণাঙ্গ বাজেট। তাই কেন্দ্রীয় বাজেট নিয়েও প্রত্যাশা চড়ছে। কেন্দ্রীয় বাজেটে এবার মধ্যবিত্তদের জন্য কী কী থাকবে তাই নিয়ে আলোচনা শুরু হয়েছে। পাশাপাশি আয়কর নিয়েও প্রত্যাশা বাড়ছে। কারণ মূল্যবৃদ্ধিতে আর নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের দামবৃদ্ধিতে নাভিশ্বাস ওঠার মত অবস্থা হয়েছে সাধারণ মানুষের।